সংসদ নির্বাচনের চার মাস আগেই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নষ্টের প্রবণতা দেখা গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। আজ মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, সংসদ নির্বাচনের চার মাস আগেই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নষ্টের প্রবণতা দেখা গেছে। ঐকমত্য কমিশনে একটা বিষয় ফাইনাল হওয়ার পর উপদেষ্টা পরিষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, জোটের অংশীদাররা নিজের দলীয় প্রতীকে অংশ নিতে হবে। কিন্তু একটি দল ঐক্যমত পোষণ করেও নির্বাচন কমিশনে আপত্তি জানিয়েছে।’
গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘আমরা নির্বাচন কমিশনকে বলেছি, যেই বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে সেখানে তারা যেন অটল থাকেন। সম্প্রতি একটি দলের (বিএনপি) পক্ষ থেকে এসে এই সংশোধনীর বিরুদ্ধে আপত্তি জানানো এবং তা পরিবর্তনের দাবি তোলার বিষয়টিকে ‘খুবই দুর্ভাগ্যজনক’ মনে করছি আমরা।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, জেন্টলম্যান অ্যাগ্রিমেন্ট-এর মাধ্যমে আরপিও সংশোধনীর পরিবর্তনের প্রচেষ্টা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড লঙ্ঘনের খারাপ উদাহরণ। আমরা এই আপত্তি দেওয়াকে অ্যালার্মিং এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অশনি সংকেত হিসেবে দেখছে। তারা এই সংশোধিত বিধান বহাল রাখার দাবি করছি।
এক প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের এই নেতা বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে ইসলামী ব্যাংকসহ কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তাদের নিয়োগ না দেওয়ার বিষয়ে আপত্তি প্রসঙ্গে জামায়াত এটিকে দুঃখজনক এবং অরাজনৈতিক চিন্তা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। জামায়াত দাবি করেছে যে তারা যে প্রতিষ্ঠানগুলোর কথা বলেছে তার কোনো একটার মালিকানার সঙ্গে জামায়াতে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই।
তিনি বলেন, ‘এমন অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেগুলোর পরিচালনা করেন বা মালিক হলেন বিএনপির বড় বড় নেতারা। তাহলে তো আমরাও পারতাম এমন একটা লিস্ট ধরিয়ে দিয়ে নির্বাচন কমিশনে জমা দিতে। আমরা এটিকে ব্যাড ট্রেডিশন হিসেবে দেখছি। পাল্টা বিবৃতি বা তালিকা দেওয়া রাজনৈতিক শিষ্টাচার নয়।’
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ সম্পন্ন করার লক্ষ্যে গণভোট ও অন্য দলের প্রতীক ব্যবহার নিয়ে নিজেদের কড়া অবস্থান জানিয়ে আজ মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠকের সময় ১৮ দফা দেওয়া প্রস্তাবনায় অবস্থান জানায় দলটির প্রতিনিধি দল।
এর আগে দুপুর ১২টার পরে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধি দল। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এম এম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে সরকারি সেক্রেটারি জেনারেল এটি এম মাসুম, সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ, রফিকুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মতিউর রহমান আকন্দ, ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের আমীর সেলিম উদ্দীন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমীর নুরুল ইসলাম বুলবুল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।