Image description

পাহাড়, নদী, স্থল সব মিলে অনাবিল সৌন্দর্যের সিলেট। যার পরতে পরতে সৌন্দর্য। এ সৌন্দর্য দেখতে প্রতি বছর হাজারো পর্যটকের ভিড় জমে। আর জেলার প্রায় সবকটি পর্যটন কেন্দ্রের অবস্থান সীমান্তবর্তী কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলায়। কিন্তু অনুন্নত যোগাযোগব্যবস্থা ও লিঙ্ক রোড না থাকায় এক পর্যটন কেন্দ্র থেকে অন্যটিতে যেতে পর্যটকের পোহাতে হয় মারাত্মক ভোগান্তি। সময় ও ব্যয় দুই-ই বেশি লাগছে। যোগাযোগ ভোগান্তির কারণে সম্ভাবনাময় অনেক স্পটে যেতে পারেন না পর্যটক। ফলে সম্ভাবনাময় খাতটির বিকাশ ঘটছে না। অনেক পর্যটন কেন্দ্র রয়ে গেছে অগোচরে।

২০২৩ সালে জেলা প্রশাসক সম্মেলনে সিলেটের পর্যটন সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক মুজিবুর রহমান। সিলেটের পর্যটন সম্ভাবনার বিকাশে তিনি সিলেট-জাফলং-সাদাপাথর-ওসমানী বিমানবন্দর পর্যন্ত সড়ক নির্মাণের প্রস্তাব করেন। এতে পর্যটন খাতে বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়বে বলেও পরামর্শ দেন। সম্মেলন থেকে প্রস্তাবটি পরীক্ষানিরীক্ষাক্রমে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

সওজ সূত্র জানান, প্রস্তাবিত সিলেট-জাফলং-সাদাপাথর-ওসমানী বিমানবন্দর পর্যন্ত সড়কের মধ্যে ওসমানী বিমানবন্দর থেকে সাদাপাথর পর্যন্ত উন্নত যোগাযোগব্যবস্থা রয়েছে। বঙ্গবন্ধু মহাসড়ক হয়েই ওসমানী বিমানবন্দর থেকে সাদাপাথর পর্যন্ত যাতায়াত করা যায়। সিলেট শহর থেকে জাফলং পর্যন্তও রয়েছে ভালো যোগাযোগব্যবস্থা। কেবল জাফলং থেকে সাদাপাথর পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ সড়ক যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন করা গেলে প্রস্তাবিত প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব। সূত্র আরও জানান, এজন্য প্রায় ৩০ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ, পুনর্নির্মাণ ও প্রশস্ত করতে হবে। ভারত সীমান্ত ঘেঁষে সড়কটি নির্মিত হলে পর্যটকরা সীমান্ত এলাকা ঘুরে ঘুরে দেখতে পারবেন। কক্সবাজারের ‘মেরিন ড্রাইভের’ আদলে সিলেটে গড়ে তোলা যাবে ‘বর্ডার ড্রাইভ’। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ চলছে। প্রকল্পটিতে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।

সূত্র জানান, বর্ডার ড্রাইভ হলে পর্যটকরা মাত্র দুই দিনে সিলেটের হযরত শাহজালাল ও শাহপরাণ (রহ.)-এর মাজার, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম, লাক্কাতুড়া চা বাগান, বাইশটিলা, খাদিম রিসোর্ট, সাদাপাথর, বিছনাকান্দি, উতমাছড়া, দমদমছড়া, লক্ষণছড়া, পান্থুমাই, খাসিকম, জাফলং, তামাবিল, নলিউরি ফলস, ডিবিরহাওড়, জৈন্তাপুর, লালাখাল, রাতারগুলসহ ২৩টি পর্যটন স্পট ঘুরে দেখতে পারবেন। বর্তমানে এক দিনে দুই থেকে তিনটির বেশি স্পট ঘুরে দেখা সম্ভব হয় না।

এ প্রসঙ্গে সওজ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আমীর হোসেন জানান, সীমান্ত সামনে ও ঘরবাড়ি পেছনে রেখে সড়কটি নির্মাণের পরিকল্পনা তৈরি হয়েছে। এ সড়ক দিয়ে যেতে যেতে পর্যটকরা সীমান্তের অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। যে কারণে সড়কটির নাম বর্ডার ড্রাইভ দেওয়া হয়েছে।