ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার কালাইনগর গ্রামে আওয়ামী লীগ নেতা জসীম মাস্টার বাহিনী ভয়াবহ হামলার শিকার স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপি নেতা ও মৎস্যজীবী জাকির হোসেন। তাকে মারাত্মকভাবে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে পালিয়ে যায় তারা। মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
বাঞ্ছারামপুর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ ও আহত জাকির হোসেনের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) দিবাগত রাতে নদীতে মাছ ধরতে গেলে প্রভাবশালী জসীম মাস্টার ও তার দলীয় কিছু কর্মী জাকির হোসেনকে নির্মমভাবে মারধর করে হাত, পা ও মুখ বেঁধে কালাইনগর কবরস্থানের ভেতরে ফেলে রেখে যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জাকির হোসেন এলাকায় একজন সাধারণ ব্যবসায়ী এবং দরিয়াদৌলত ৯ নং ওয়ার্ডের (কালাইনগর) বিএনপির সাবেক সভাপতি। সম্প্রতি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা জসীম মাস্টারের সাথে নদীতে অবৈধ মাছের ঘেরের দখল নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। আওয়ামী শাসন আমলে জসীম মাস্টার বহুবছর যাবৎ মাছের ঘের দখল করে সাধারণ মৎস্যজীবীদের বঞ্চিত করে আসছিলেন।
এর জের ধরে মঙ্গলবার রাতে জাকির মাছ ধরতে গেলে জসীমের লোকজন তাকে মারধর করে হাত-পা বেঁধে কালাইনগর কবরস্থানে ফেলে রাখেন। পরবর্তীতে গভীর রাতে তার চিৎকার শুনে এলাকাবাসী কবরস্থানের ভেতর থেকে তাকে উদ্ধার করে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। তারপর উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক জখম ও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
এদিকে, আজ দুপুরে চিকিৎসাধীন জাকির হোসেনের পুত্রবধূ আরজিনা আক্তার বাদী হয়ে শাহ রাহাত আলী হাইস্কুলের শিক্ষক জসীম মাস্টারকে প্রধান করে মোট ৭ জনকে আসামি করে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগ নিয়ে জসীম মাস্টারের সাথে বিভিন্নভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করার পরও তার কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাঞ্ছারামপুর থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বলেন, ঘটনার লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ভিপি একেএম মুছা এ কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, জাকির হোসেনকে অসহায় পেয়ে সক্রিয় আওয়ামী লীগের নেতা জসীম মাস্টার বিভিন্ন সময় হামলা করেছে। তার বিরুদ্ধে প্রশাসনের অবিলম্বে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আহ্বান জানাই।
উল্লেখ্য, কবরস্থানে জাকির হোসেনের হাত-পা বেঁধে রাখার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় বর্তমানে উত্তেজনা বিরাজ করছে।