
সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে জামায়াতে ইসলামীর আন্দোলন নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের দেয়া একটি বিবৃতি নিয়ে এই মুহূর্তে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে রাজনৈতিক অঙ্গণে। ফেসবুকে দেয়া ওই বিবৃতিতে পিআর দাবিতে জামায়াতের আন্দোলনকে রাজনৈতিক প্রতরণা বলে মন্তব্য করেছেন নাহিদ। এনসিপির শীর্ষ নেতার দেয়া এই বিবৃতিকে বেশ আক্রমণাত্মক বলে মনে করেন লেখক ও গবেষক আলতাফ পারভেজ। একই সঙ্গে এনসিপির এই বিবৃতিটা জামায়াতের জন্য সহ্য করা কঠিন বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
রোববার (১৯ অক্টোবর) রাতে চ্যানেল 24 এ প্রচারিত ‘মুক্তবাক’ অনুষ্ঠানে আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব মন্তব্য করেন আলতাফ পারভেজ। নাজনীন নাসরিন দোলার উপস্থাপনায় এই আলোচনায় আরও অংশ নিয়েছিলেন সিনিয়র সাংবাদিক মাসুদ কামাল ও এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক তাজনূভা জাবীন।
জামায়তকে নিয়ে নাহিদ ইসলামের দেয়া বিবৃতির বিষয়ে আলতাফ পারভেজ বলেন, এনসিপির নেতা যে বিবৃতি দিয়েছেন সেটা হঠাৎ মনে হয়েছে, এটা বেশ আক্রমণাত্মক। জামায়াত পিআর নিয়ে যে দাবি জানিয়েছে বা আন্দোলন করছে, একটা রাজনৈতিক দল হিসেবে সেই অধিকার তাদের আছে। সেটা আদর্শিক জায়গা থেকেও হতে পারে কিংবা রাজনৈতিক কৌশলও হতে পারে। অনেকে সমালোচনা করে বলছেন জামায়াত এই কৌশলটা নিয়েছে নির্বাচন বিলম্বিত করার জন্য। সমালোচকদেরও এই সমালোচনা করার অধিকার আছে।
তিনি বলেন, কিন্তু এনসিপি যে ভাষায় আক্রমণ করেছে আমার কাছে মনে হয় এটা অতিরিক্ত তীব্র এবং আক্রমণাত্মক হয়েছে। এনসিপি হঠাৎ করে কেন এটা বললো সেটা একটা প্রশ্ন। এটা মনে করা যেতে পারে যে, জামায়াতবিরোধী কোনো মেরুকরণে এনসিপি নিজেকে সম্পৃক্ত করতে চাচ্ছে বা শাপলা প্রতীক পাওয়ার জন্য তারা কোনো দিক থেকে বাড়তি একটু সহানুভূতি চাচ্ছে। এসব কারণেই বিবৃতিটা হতে পারে। হঠাৎ করে আসা এনসিপির এই বিবৃতিটা জামায়াতের জন্য সহ্য করা কঠিন।
এই লেখক ও গবেষক আরও বলেন, জামায়াত পিআর পদ্ধতির যে দাবিটা তুলেছে, এটা ঠিক যে জুলাই অভ্যুত্থানের আগে তারা কখনো এই বিষয়টা নিয়ে দাবি তোলেনি, বা জনগণের কাছে যায়নি। কিংবা এটা জুলাই অভ্যুত্থানের বড় কোনো এজেন্ডাও নয়। এই দুটো ঘটনায় সত্য।
তিনি বলেন, কিন্তু একদিন না একদিন বাংলাদেশে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনী ব্যবস্থা লাগবেই। এটা জামায়াত এজেন্ডা হিসেবে নির্বাচনী ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত করে জনগণের কাছে যেতে পারে। ১-২ বছর এই এজেন্ডা নিয়ে কাজ করলে বাংলাদেশে এটা জনপ্রিয় এজেন্ডা হবে। বাংলাদেশে যে বিদ্যমান রাজনৈতিক সঙ্কট, সংসদে যে অনেক দলের প্রতিনিধিত্ব আসে না অল্প ভোট পাওয়ার কারণে, এই সমস্যার একটা ভালো সমাধান সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি।