Image description

সংযুক্ত আরব আমিরাত বিএনপির আহ্বায়ক জাকির হোসাইন বলেছেন, জুলাই আন্দোলনের সময় আমিরাতে বিএনপি আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে ১৩টি মিছিল আয়োজন করেছিল। এর জেরে আরব আমিরাত পুলিশ ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে প্রায় ৬ শতাধিক প্রবাসী বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করে। তাদের মধ্যে ২০০ জনেরও বেশি বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড পেয়েছেন। আরব আমিরাত বিএনপির আহ্বায়ক হিসেবে এসব পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয়েছে আমাকে।

সোমবার (১৩ অক্টোবর) সিলেট নগরের একটি রেস্তোরাঁয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন আক্ষেপের কথা বলেন।

জাকির হোসাইন বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকারের পক্ষে আমি সবসময় একনিষ্ঠ সৈনিক। বিদেশে থেকেও শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে প্রবাসী ভাই-বোনদের ঐক্যবদ্ধ করা এবং মধ্যপ্রাচ্যে দেশের মানুষের কাছে সরকারের নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরা ছিল আমার প্রধান কাজ।

সিলেটের জকিগঞ্জ পৌরসভার খলাছড়া গ্রামের সন্তান জাকির হোসাইন দীর্ঘদিন ধরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাস করছেন। তিনি বর্তমানে আরব আমিরাত বিএনপির আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করছেন।

সংবাদ সম্মেলনে জাকির বলেন, ২০১৮ সালে শেখ হাসিনা আমাকে ‘জঙ্গি অর্থদাতা’ হিসেবে অভিযুক্ত করেন। শেখ হাসিনা অভিযোগ করেছিলেন, আমি মধ্যপ্রাচ্য থেকে সরকার পতনের উদ্দেশ্যে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা পাঠিয়েছি। একই বছর শেখ হাসিনা আরব আমিরাত সফরে গিয়ে আমিরাত সরকারকে আমাকে দেশে ফেরানোর প্রস্তাব দেন, কিন্তু আরব আমিরাত সরকার সেই অভিযোগের কোনো সত্যতা না পেয়ে শেখ হাসিনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে।

তিনি দাবি করেন, আমি কখনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলাম না, বরং আমি মানুষের স্বাধীনতা ও অধিকার ফিরিয়ে আনার সংগ্রামে যুক্ত আছি। আমাকে ‘জঙ্গি অর্থদাতা’ বলা ছিল এক রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র, যা শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছে।

জাকিরের অভিযোগ, এরপর থেকেই শেখ হাসিনা তার বিরুদ্ধে মিডিয়া ট্রায়ালের মাধ্যমে অপপ্রচার চালান, যা তাকে সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। তিনি বলেন, আমি বিচলিত হইনি, কারণ আমি সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে ছিলাম।

তিনি জানান, মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে তার পাসপোর্ট নবায়ন বন্ধ করা হয়, দেশে ফেরার পথে বাধা দেওয়া হয়, সামাজিকভাবেও তাকে হেয় করা হয়। তার পরিবারের সদস্যরা দেশে নানা নির্যাতনের শিকার হন। তবু শেখ হাসিনা তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের কোনো প্রমাণ দিতে পারেননি বলে দাবি করেন তিনি।

দেশের উন্নয়ন প্রসঙ্গে জাকির বলেন, আমাদের জকিগঞ্জ-কানাইঘাট এলাকা খনিজ সম্পদে ভরপুর। ইতোমধ্যে জকিগঞ্জের একটি গ্যাস কূপের কাজ চলছে। আমি মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম পেট্রোলিয়াম কোম্পানি জনাবী গ্রুপের সঙ্গে একটি প্রাথমিক চুক্তি করেছি। যেখানে উল্লেখ আছে, দেশে গণতান্ত্রিক সরকার গঠিত হলে তারা সিলেট ও বাংলাদেশের তেল-গ্যাস আহরণে বড় বিনিয়োগ করবে।

তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি সিলেট-৫ আসনের মানুষ আমাকে যেমন ভালোবেসেছেন, ভবিষ্যতেও পাশে থাকবেন। আমার একটাই লক্ষ্য, এলাকার উন্নয়ন, সিলেটের উন্নয়ন, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার। 

জাকির হোসাইন আরও জানান, শেখ হাসিনার সরকারের অপশাসন ও দমননীতির বিরুদ্ধে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ঐক্যবদ্ধ।