Image description

নেত্রকোনায় সংবাদ প্রকাশের জেরে তিন সাংবাদিকের হাত কেটে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন বিএনপির এক স্থানীয় নেতা। শুক্রবার (১০ অক্টোবর) বিকালে মদন পৌরসভার দেওয়ানবাজার রোড এলাকায় আয়োজিত মানববন্ধনে এ হুমকি দেন মদন পৌর বিএনপির সভাপতি কামরুজ্জামান চন্দন। তার এ বক্তব্যের ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি মদন উপজেলার একটি সড়কের সংস্কারকাজ শেষ হয়। অভিযোগ রয়েছে—মানসম্মত কাজ না করেই প্রকল্পের কাজ শেষ করা হয়েছে। এ বিষয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ হলে ক্ষুব্ধ হন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ও বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মী। এর জেরে বৃহস্পতিবার ঠিকাদারের প্রতিনিধি আবদুল্লাহ আল রোমান তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগ এনে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। পরদিন শুক্রবার বিকালে ‘মদন পৌরবাসীর’ ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিএনপি নেতা কামরুজ্জামান চন্দন।

‘হাত কেটে দেওয়া হবে’ বক্তব্য

মানববন্ধনে দেড় মিনিটের বক্তব্যে চন্দন ওই তিন সাংবাদিকের নাম উল্লেখ করে বলেন, ‌‘আমি নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই—এই হৃদয়, নিজাম, তোফাজ্জল, তোমরা চাঁদাবাজির চিন্তাভাবনা ছেড়ে ভালো হয়ে যাও। আমরা কিন্তু ভালো মানুষ না খুব একটা, অনেক কিছু পারি। প্রয়োজনে হাত কেটে দেওয়া হবে।’ এই বক্তব্যে উপস্থিত নেতাকর্মীদের হাততালি ও স্লোগান দিতে দেখা যায় ভিডিওতে।

ভয় ও নিরাপত্তাহীনতায় সাংবাদিকরা

হুমকির শিকার তিন সাংবাদিক হলেন—কালের কণ্ঠের ফয়েজ আহমেদ (হৃদয়), আমার দেশ পত্রিকার নিজাম উদ্দিন এবং দৈনিক যুগান্তরের তোফাজ্জল হোসেন। তারা জানিয়েছেন, প্রকাশ্যে দেওয়া এমন হুমকি তাদের পেশাগত নিরাপত্তাকে চরমভাবে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে।

জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও আমার দেশ পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি মাহবুবুল কিবরিয়া চৌধুরী বলেন, ‘একজন রাজনৈতিক নেতা প্রকাশ্যে সাংবাদিকদের হাত কেটে নেওয়ার হুমকি দিতে পারেন না। এটি গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উচিত বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা। সড়ক সংস্কারকাজে দুর্নীতির অভিযোগ দুদকের তদন্ত করা জরুরি।’

বিএনপি নেতার আত্মপক্ষ সমর্থন

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শনিবার বিকালে কামরুজ্জামান চন্দন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘রাস্তার কাজ নিয়ে এলাকায় ক্ষোভ ছিল। স্থানীয়রা বলেছিল সাংবাদিকরা টাকা চেয়েছিল। আমি মানুষকে শান্ত করতে গিয়ে বেশি বলে ফেলেছি। ওরা আমার ছোট ভাইয়ের মতো, ইচ্ছা করে কিছু বলিনি। এখন বুঝতে পারছি, কথাটা বলা ঠিক হয়নি।’