
জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলায় চাঁদা না পেয়ে ছাত্রদলের সাবেক নেতাসহ তিনজনকে ছুরিকাঘাতের অভিযোগ উঠেছে ইয়াকুব আলী নামে এক যুবক ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। শুক্রবার (১০ অক্টোবর) বিকেলে মাদারগঞ্জ পৌরসভার ব্র্যাক অফিস মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে দুজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং একজন জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আহতরা হলেন মাদারগঞ্জ পৌরসভার বালিজুড়ী মাঠপাড়া এলাকার মৃত নুর ইসলামের ছেলে ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ফারুক, পৌরসভার জোনাইল পূজাঘাটি এলাকার শহিদুল্লাহর ছেলে ও পৌর ছাত্রদলের কর্মী মো. বিপ্লব এবং একই এলাকার আয়ুব আলীর ছেলে মো. হাবিব মণ্ডল।
এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পদ্মা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক মো. ফারুক বাদী হয়ে ইয়াকুব আলীকে প্রধান আসামি করে অজ্ঞাত আরও ১০/১২ জনকে আসামি করে মাদারগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার বিকেলে ফারুক মোটরসাইকেলে করে উপজেলা হাওয়াই রোডে তার প্রতিষ্ঠান পদ্মা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যাচ্ছিলেন। পথে ব্র্যাক অফিস মোড় এলাকায় পৌঁছালে ইয়াকুব আলী নামে এক যুবক ও তার সহযোগীরা ফারুকের গতিরোধ করে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। ফারুক চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা মোটরসাইকেলের চাবি ছিনিয়ে নেন। পরে ফারুক দৌড়ে আত্মরক্ষা করে বন্ধু ও ছোট ভাইদের মোবাইল ফোনে খবর দেন। তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে ইয়াকুব আলী ও তার সহযোগীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অতর্কিতে হামলা চালায়। হামলার এক পর্যায়ে ইয়াকুবের হাতে থাকা ছুরি দিয়ে বিপ্লবের বুক লক্ষ্য করে আঘাত করলে সে গুরুতর জখম হয়।
তাকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে হাবিবের পায়ে ও হাঁটুর ওপর ছুরি মারেন ইয়াকুব। ফারুককেও লাঠি ও রড দিয়ে পিটিয়ে জখম করে ইয়াকুব ও তার সহযোগীরা। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। বিপ্লবের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে রেফার করেন। ফারুক ও হাবিব মাদারগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। অভিযুক্ত ইয়াকুব আলী উপজেলার বালিজুড়ী বাজারের খাদ্য ব্যবসায়ী আশরাফ আলীর ছেলে।
এর আগে গত ১৪ জুলাই এক ঠিকাদারের কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। জামিনে ছাড়া পেয়ে তিনি আবারও চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদুল ইসলাম বলেন, জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফারুক ও পৌর ছাত্রদলের কর্মী বিপ্লব ও হাবিবের ওপর সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
মাদারগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল্লাহ সাইফ বলেন, গত ১৪ জুলাই চাঁদা দাবির অভিযোগে ইয়াকুব আলীকে ছুরি ও কেচিসহ গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। পরে জামিনে মুক্তি পেয়ে সে এলাকায় পুনরায় চাঁদাবাজি শুরু করে। শুক্রবার বিকেলে চাঁদা না পেয়ে তিন যুবককে ছুরিকাঘাত করে। এ ঘটনায় ফারুক নামে এক যুবক থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের অভিযান চলছে।