Image description
 

ভারত ও আফগানিস্তানের সম্পর্কের নতুন অধ্যায় খুলে দিতে নয়া দিল্লিতে পা রেখেছেন তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকী। ভারত সফরে এসে তালেবান পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। আফগানিস্তানের মাটিতে কোনো বিদেশী শক্তির নিয়ন্ত্রণ মেনে নেওয়া হবে না বলে সাফ জানান তিনি। একইসঙ্গে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুত্তাকী। অন্যদিকে, ভারতকে ঘনিষ্ঠ বন্ধু আখ্যা দিয়ে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকরকে বুকে টেনে নেন আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

 

জাতিসংঘের সন্ত্রাসীদের কালো তালিকাভুক্ত এই নেতার সফরকে ঘিরে কূটনৈতিক অঙ্গনে বাড়ছে জল্পনা। বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া এই আট দিনের সফরকে ঘিরে দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক ভারসাম্যে নতুন বার্তা দেখছেন বিশ্লেষকরা।

আঞ্চলিক ভূরাজনীতিতে সম্পর্কের সমীকরণ বদল
আফগানিস্তানে তালেবান সরকার ক্ষমতায় ফেরার পর বদলে যায় কাবুলের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের সমীকরণ। তালেবান সরকারের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করতে দেখা গিয়েছিল ভারতকে। সম্প্রতি সেই দৃশ্য বদলেছে। আঞ্চলিক ভূরাজনীতিকে নতুন রূপে রূপ দিতে যুগান্তকারী বার্তা নিয়ে ভারত সফরে এসেছেন আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকী।

 

মুত্তাকীর কড়া বার্তা: পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ারি
ভারতের মাটিতে বসে একাধিক দেশের বিষয়ে মন্তব্য করেছেন মুত্তাকী। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি, সতর্ক করার সুরে জানিয়েছেন, আফগানিস্তানে উস্কে দেওয়ার মতো কাজ যেন তারা না করে।

 

আবার যুক্তরাষ্ট্রকেও বার্তা দিতে ছাড়েননি তিনি। বাগ্রাম বিমান ঘাঁটিতে অন্য কারো নিয়ন্ত্রণ চলবে না জানিয়ে তিনি বলেন, "তালেবান শাসিত আফগানিস্তানে বইছে শান্তির সুবাস।"

ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বের বার্তা
তালেবান সরকারকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়নি ভারত। ২০২১ সালের আগস্ট মাসে আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতায় ফেরার পর কাবুল থেকে দূতাবাস বন্ধ করে দেয় নয়া দিল্লি। এক বছর পর বাণিজ্য, চিকিৎসা সহায়তা ও মানবিক সহায়তা বিষয়গুলোকে সহজতর করার জন্য সেখানে ছোট মিশন খোলা হয়। তবে ধীরে ধীরে সেই সম্পর্ক বদলেছে।

জয়শংকরের স্বাগত: আফগানিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে জয়শংকর বলেন, ভারত ও আফগানিস্তানের সম্পর্কের জন্য এই সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

মুত্তাকীর স্বীকৃতি: অন্যদিকে, ভারতকে আফগানিস্তানের 'ঘনিষ্ঠ বন্ধু' বলে সম্বোধন করেছেন আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ভারত এবং আফগানিস্তান দুই দেশই সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জানিয়ে তিনি বলেছেন, "আফগানিস্তানের ভূখণ্ডকে অন্য কাউকে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না।" তাঁর ইঙ্গিত স্পষ্টতই পাকিস্তানের দিকে।

আফগান সংবাদ মাধ্যম তোল নিউজ জানিয়েছে, মুত্তাকীর এই সফরের শীর্ষ আলোচ্য বিষয় হলো তালেবান সরকারের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন। তবে ভারত এখনই সে পথে হাঁটবে না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তাঁদের মতে, পাকিস্তানের সঙ্গে তালেবানের বিরোধ ভারতের জন্য সুযোগ তৈরি করেছে, যা দিল্লি কৌশলগতভাবে কাজে লাগাতে চায়।