Image description
 

আগামী নির্বাচনে ভোটাররা সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পারলে ইসলামের পক্ষে এক নীরব বিপ্লব ঘটবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান।

তিনি বলেন, আলেমদের ঐক্যের আভাসে পুরো জাতি খুশি হলেও একটি দল খুশি হতে পারেনি। কারণ তারা জানে ইসলামী দলগুলোর ঐক্য হলে জনগণ ইসলামী দলের পক্ষে রায় দেবে, তাদেরকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করবে।

শনিবার সকালে রাজধানীর গেন্ডারিয়ায় জহির রায়হান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে ঢাকা-৬ আসনের সর্বস্তরের ওলামা- মাশায়েখ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, দুর্নীতিতে টানা ৫ বছর চ্যাম্পিয়ান হওয়া দল এবার ক্ষমতায় যাওয়ার আগেই পাথর-বালু লুটে চ্যাম্পিয়ান। তারা ৫ আগস্ট পরবর্তীতে দেশের মালিক বনে গেছে। সারা দেশে লুটপাট, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কারা করছে জনগণ সেটি দেখছে। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, দুর্নীতিবাজ, লুটপাটকারীদের জনগণ ভোটের মাধ্যমে বয়কট করবে।

এ সময় তিনি আরো বলেন, দেশের প্রত্যেকটি আন্দোলনে আলেম সমাজের ভূমিকা রয়েছে। আগামী দিনে একটি সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণে আলেম সমাজ এক হয়ে ইসলামের পক্ষে ভূমিকা রাখবেন ইনশাআল্লাহ। তিনি আগামী নির্বাচনে সকল আলেম সমাজ একত্রিত হয়ে ইসলামী শক্তিকে বিজয়ের জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।

মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, সব দল জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির পক্ষে অবস্থান নিলেও একটি দল বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। যারা জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতে চায় না, তারা জুলাই বিপ্লবকেই অস্বীকার করে। জুলাই বিপ্লবকে অস্বীকার করলে আওয়ামী লীগের মতই পরিণতি ভোগ করতে হবে হুঁশিয়ারি করে তিনি বলেন, জনগণের প্রত্যাশিত রাজনীতি করতে হবে। নতুবা জনগণ উপযুক্ত জবাব দিবে। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, পিআর পদ্ধতিতে সংসদের উভয় কক্ষের নির্বাচন, অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সকলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চতকরণ, ফ্যাসিস্ট সরকারের জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার ৫ দফা দাবি বাস্তবায়নে তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ ওলামা- মাশায়েখ পরিষদ ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা মোশাররফ হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে প্রতিটি নাগরিকের অধিকার ও সম্মান নিশ্চিত করা হবে। আলেম-ওলামাদের হারানো সম্মান পুনরুদ্ধার করা হবে। ইমামদের চাকরি জাতীয়করণ করা হবে। ইসলাম ও দ্বীনের প্রশ্নে আমরা ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা পালন করবো। আলেমদের ঐক্য ব্যতীত দ্বীন কায়েম করা সম্ভব হবে না। তাই দলমত, বিভেদ ভুলে ইসলাম ও দ্বীনের প্রশ্নে সকলকে ঐক্য বজায় রাখতে তিনি আহ্বান জানান।

সমাবেশের শুরুতে ঢাকা-৬ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ড. আব্দুল মান্নান, ঢাকা-৬ আসনে নিজের উন্নয়ন ভাবনা তুলে ধরেন। পরবর্তীতে উপস্থিত আলেম-ওলামা বিভিন্ন মতামত ও পরামর্শ উপস্থাপন করেন।

ঢাকা-৬ আসনের নির্বাচন পরিচালক মো. কামরুল আহসান হাসানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মজলিসুল মুফাসসিরিনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা আব্দুল হামিদ, কাটাবন জামে মসজিদের খতিব অধ্যাপক ড. রফিকুর রহমান মাদানী, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মুফতি ফখরুল ইসলামসহ বিভিন্ন মসজিদের খতিব ও মাদ্রাসায় মুফাসসির, মুফতি এবং মুহাদ্দিস। অনুষ্ঠানে ঢাকা-৬ সংসদীয় এলাকায় জামায়াতে ইসলামীর সাংগঠনিক সকল থানা আমির-সেক্রেটারিসহ দায়িত্বশীল নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে শনিবার সকালে মতিঝিলে এক হোটেলে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে ঢাকা-৮ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন স্থানীয় ইমাম-খতিব ও আলেমদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজ চেয়ারম্যান সাইয়্যেদ কামাল উদ্দিন আব্দুল্লাহ জাফরী। প্রধান আলোচক ছিলেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।