
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পাবনার ঈশ্বরদীতে যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবকদলের দু’গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া– পাল্টা ধাওয়া ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এতে দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে চার জন আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত জিৎ হোসেন নামে এক ছাত্রদলকর্মীকে মুমূর্ষু অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।
গতকাল শনিবার বিকেল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের মসজিদ মোড় এলাকায় এ সংঘর্ষ চলে। এ ঘটনায় রোববার দিনব্যাপী ওই এলাকায় আতঙ্ক ও থমথমে অবস্থা বিরাজ করেছে।
আহতরা হলেন- উপজেলা যুবদল নেতা কাজী আসাদুল ইসলামের ছেলে কাজী সামিউল ইসলাম বাপ্পী (৪০), তার অনুযায়ী যুবদলকর্মী ও আবু বক্কারের ছেলে শুভ হোসেন (৩০), ছাত্রদলকর্মী ও তরিকুল ইসলামের ছেলে জিৎ হোসেন (১৭) এবং সাহাপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকদলের আহবায়ক রাসেল পারভেজ গ্রুপের ছাত্রদলকর্মী ও সামসুল ইসলামের ছেলে স্কুলছাত্র রুহুল কুদ্দুস (১৭)।
স্থানীয় সূত্র জানায়, কয়েকদিন আগে সাহাপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকদলের আহ্বায়ক মো. রাসেল পারভেজ জামিনে মুক্তি পান। এ উপলক্ষে একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ওই অনুষ্ঠানে স্কুলছাত্র রুহুল কুদ্দুস যোগ দেন। পূর্ব শত্রুতার জেরে শনিবার বিকালে যুবদল নেতা বাপ্পীর নেতৃত্বে লাঠিসোঁটা সজ্জিত যুবকেরা কুদ্দুসকে ধরে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর করে।
এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। কিছুক্ষণের মধ্যেই দুই গ্রুপ ফের মুখোমুখি হয়। শুরু হয় ধাওয়া–পাল্টাধাওয়া। একপর্যায়ে যুবদল নেতা বাপ্পী ও জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের এক নেতার নেতৃত্বে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে আতঙ্কে চারপাশের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়, রাস্তাঘাট জনশূন্য হয়ে পড়ে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও রাসেল গ্রুপের দাবি, সংঘর্ষের একপর্যায়ে তারা অস্ত্রধারী তিনজনকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। তবে পরে বাপ্পী গ্রুপের লোকজন জোর করে ওই তিনজনকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় এলাকায় আরও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
রোববার সকাল পর্যন্ত ঘটনাস্থলে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। দুপুরে সাহাপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকদলের সভাপতি রাসেল পারভেজ ও তাঁর সমর্থকেরা নিরাপত্তার দাবিতে একটি প্রতিবাদ সমাবেশ করেন।
ঈশ্বরদী থানার ওসি আ স ম আব্দুন নূর বলেন, ছোটখাটো একটি ঝামেলা থেকে এমন ঘটনা ঘটেছে।” তবে স্কুলছাত্রকে মারধরের ঘটনায় মামলা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আটককৃতদের ছিনিয়ে নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষই একে অপরকে দায়ী করছে। এলাকাজুড়ে এখনও উত্তেজনা বিরাজ করছে।