
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, জনগণই বিএনপির সকল রাজনৈতিক ক্ষমতার উৎস। নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নতুনভাবে দলকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করছি। গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত বিএনপির আন্দোলন থেমে থাকবে না।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের বড় মাঠে অনুষ্ঠিত জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান অভিযোগ করে বলেন, বিগত ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকার দেশে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে। রাজনৈতিক দলগুলোর জবাবদিহিতা নষ্ট করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করে গুম-খুনের রাজনীতি চালিয়েছে। লাখ লাখ গায়েবি মামলা দিয়ে বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের আদালতের বারান্দায় ঘুরিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দেশে তিন কোটি নতুন ভোটার ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে ভোট দিতে পারেনি। ফলে ভোট ব্যবস্থাকে পুরোপুরি ধ্বংস করা হয়েছে। আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য শিশু ও শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষকে রাস্তায় গুলি করে হত্যা করেছে। দেশের অর্থনীতি, শিক্ষাব্যবস্থা, স্বাস্থ্য খাত, কৃষি ও কর্মসংস্থান সব ক্ষেত্র ধ্বংস করেছে। মেগা প্রকল্পের নামে মেগা দুর্নীতি হয়েছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের মতামত দিয়েছে। কিছু বিষয়ে কম-বেশি সবাই একমত হয়েছেন। আর কিছু বিষয়ে মতের ভিন্নতা রয়েছে। এটি থাকতেই পারে। ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারা বিষয়গুলো জনগণের হাতে ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
তারেক রহমান বলেন, আমরা প্রত্যেকে ভিন্ন রাজনৈতিক দল। তাই মতের ভিন্নতা থাকবেই। কিন্তু এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। আজকের সম্মেলনে যেমন প্রার্থীরা কাউন্সিলরদের কাছে গিয়েছেন, তাদের মতামত নিয়েছেন, সেই মতামতের ভিত্তিতেই নতুন নেতৃত্ব গঠিত হয়েছে এটাই গণতন্ত্র।
তিনি বলেন, জনগণই বেছে নেবে কার হাতে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব যাবে। জনগণ শুধু বেছে নেবে না, জনগণই চূড়ান্তভাবে সিদ্ধান্ত নেবে কে আগামী দিনে দেশ পরিচালনা করবে।
তারেক রহমান সতর্ক করে বলেন, যদি রাজনৈতিক দলগুলো আলোচনার টেবিলে বসে জনগণকে বাদ দিয়ে নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিতে চায়, তবে দেশে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি হবে। এটি দেশের জন্য কাঙ্ক্ষিত নয়। বরং এতে পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচার আবার ফিরে আসার সুযোগ পাবে।
তিনি মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, বিএনপি জনগণের কাছে ৩১ দফা রূপরেখা দিয়েছে। বিএনপি সরকার গঠন করতে পারলে সেই কর্মসূচির ভিত্তিতে দেশ পরিচালিত হবে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্র সফল হবে না। দেশের অর্থনীতি পুনর্গঠন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, কর্মসংস্থানসহ সবখাতের সংস্কারের মাধ্যমে সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে তুলতে বিএনপি বদ্ধপরিকর।
তারেক রহমান বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন যতটা সহজ মনে হচ্ছে, ততটা সহজ নাও হতে পারে। দিন যত যাচ্ছে, সেই আশঙ্কা সত্যি হচ্ছে। তাই নেতাকর্মীদের সতর্ক থেকে শপথ নিতে হবে। তিনি দুটি শপথের কথা স্মরণ করান। ১. গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। ২. জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করে জনগণের প্রত্যাশাপূরণে বিএনপি কাজ করবে।
এর আগে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু এবং রংপুর বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু।