
জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ বলেছেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নিয়ে কারো সন্দেহ থাকার কথা নয়। বিভিন্ন মহল থেকে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা চললেও বাস্তবতা হলো, অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে, সেনাবাহিনী, ব্যবসায়ী সমাজ, কূটনৈতিক মহল ও অধিকাংশ রাজনৈতিক দল নির্বাচনের পক্ষেই রয়েছে। তিনি মনে করেন, এখন যারা নির্বাচনের বিরুদ্ধে কথা বলছে, তারাও মূলত কৌশলগত অবস্থান নিচ্ছে কিন্তু শেষ পর্যন্ত অংশগ্রহণ করবে।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সিনিয়র সাংবাদিক মাসুদ কামালের ইউটিউব চ্যানেল ‘অন্যমঞ্চ’-তে সাক্ষাৎকারে ববি হাজ্জাজ এসব কথা বলেন। সাক্ষাৎকারটি সঞ্চালনা করেন মাসুদ কামাল নিজেই।
মানুষের মধ্যে এখনো সন্দেহ রয়েছে—ফেব্রুয়ারিতে সত্যিই নির্বাচন হবে কি না।
কেন বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে—এই প্রশ্নের জবাবে ববি হাজ্জাজ বলেন, ‘কিছু গোষ্ঠী আছে যারা আদতেই নির্বাচন চায় না। এদের মধ্যে অনেকে প্রভাবশালী, অনলাইনে জনপ্রিয়।
ববি হাজ্জাজ আশাবাদী যে আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় এবারের নির্বাচন কিছুটা হলেও ভালো হতে পারে। কারণ মানুষ এখন অনেক সচেতন, সামাজিক মিডিয়া আছে, তথ্য আদান-প্রদান আগের তুলনায় অনেক সহজ। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী যদি ঠিকভাবে কাজ করে এবং রাজনৈতিক দলগুলো যদি সঠিকভাবে প্রচারণা চালায়, তাহলে একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব।’
জাতীয় পার্টি বা ১৪ দল নিষিদ্ধ করার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এসব দলের খুব একটা ভোট নেই। কিন্তু কেউ অপরাধ করলে, সেটা ব্যক্তির বিচারে দেখা উচিত, দলকে নিষিদ্ধ করে নয়। দল নিষিদ্ধ করার জন্য আইনি প্রক্রিয়া আছে। সেটা অনুসরণ না করে যেকোনো দলকে হুট করে নিষিদ্ধ করা গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। আজকে যদি আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি ওঠে তাহলে ৭১ সালে যারা তার চেয়েও বড় অপরাধ করেছে, তাদের ক্ষেত্রেও একই দাবি উঠবে। এভাবে চললে গণতন্ত্র আর থাকবে না।’
ববি হাজ্জাজ বলেন, ‘বর্তমানে জাতিকে বিভক্ত করার চেষ্টা চলছে। শেখ হাসিনার সরকার দীর্ঘদিন ৭১-এর ইতিহাসকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করেছে, যার ফলে এখন কেউ মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কথা বললেও তাকে ‘হাসিনা সরকারপন্থী’ বলে ট্যাগ করা হয়। অথচ ৭১ আমাদের সবার গৌরবের ইতিহাস।’
তিনি বলেন, এখন কেউ যদি ৭১ নিয়ে একটি অনুষ্ঠান করে তাকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। আবার অন্যদিকে দেখা যায়, যারা ৭১-এর বিরোধী ছিল, তাদের ছবি বিশ্ববিদ্যালয়ে টানিয়ে সম্মান জানানো হয়। এসব দ্বিচারিতা মেনে নেওয়া যায় না।
তার মতে, গণতন্ত্র মানে সবার কথা বলার অধিকার। সবচেয়ে গৌরবময় ইতিহাস ৭১—তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। এটা মেনে নেওয়া যায় না।
তিনি বলেন, ‘আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে অনেক ভুলভ্রান্তি আছে, অনেক জায়গায় আমরা শৃঙ্খলাবিহীন হয়ে পড়েছি। এসব জায়গা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে, নইলে সামনে বড় বিপদ আসতে পারে।’