Image description

দেশের মানুষ পিআর পদ্ধতি বোঝে না মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেছেন, ধমক দিয়ে দেশের জনগণকে দাবিয়ে রাখা যাবে না, অতীতেও যায়নি। যারা বলেন দেশে নির্বাচন হতে দেবেন না, তাদের কথায় আমরা স্বৈরাচারের পদধ্বনি শুনতে পাই।

বুধবার (১৩ আগস্ট) সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

এর আগে বিএনপির চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) নবনির্বাচিত নেতাদের সঙ্গে নিয়ে মাজার জিয়ারত করেন ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন। এ সময় জিয়া পরিবার ও দেশের সমৃদ্ধি কামনায় দোয়া করা হয়। উপস্থিত ছিলেন ড্যাবের সাবেক প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, ড্যাবের নবনির্বাচিত সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ, সিনিয়র সহসভাপতি অধ্যাপক ডা. আবুল কেনান, মহাসচিব ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, কোষাধ্যক্ষ ডা. মো. মেহেদী হাসান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ডা. খালেকুজ্জামান দিপু।

ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, ড্যাবের নবনির্বাচিত নেতাদের নিয়ে আমরা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে এসেছি। তিনি বলেন, আজকে নির্বাচন নিয়ে অনেক কথা শুনতে পাই। যারা নির্বাচন হতে দিবে না তাদের কথায় ষড়যন্ত্র ও স্বৈরাচারের পদধ্বনি শুনতে পাই। অথচ প্রধান উপদেষ্টা প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনকে বলে দিয়েছে যে ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতে।

তিনি বলেন, কেউ কেউ সরকারের অংশে থেকে বলছে এটা হতে দেবো না, সেটা হতে দেবো না। জনগণ পিআর পদ্ধতি বোঝে না। তারা কোনোদিন সেটি প্র্যাকটিস করেনি। আমেরিকা বলেন, যুক্তরাজ্য বলেন কিংবা বড় গণতান্ত্রিক দেশ ভারতের কোথাও পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হয় না। সুতরাং জনগণ তার নির্বাচিত প্রতিনিধি দেখতে চায়। যারা পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় যেতে চায় তারা পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের কথা বলে। যারা নির্বাচন বন্ধের ধমক দেন জনগণ তাদের সঙ্গে নেই।

ডা. জাহিদ বলেন, মব কালচারের মাধ্যমে দেশকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন? দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার কী অবস্থা? আমরা বলবো কেউ ধমক দিয়ে দেশের মানুষকে দাবিয়ে রাখতে পারেনি। অতীতে অনেক গুম খুন ও নির্যাতনের পরও জনগণকে দাবিয়ে রাখা যায়নি। তাদের পরিণতি হয়েছে করুণ। সুতরাং এখন সময় এসেছে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে হবে।

তিনি বলেন, ড্যাবের কাউন্সিলে ভোটাররা হারুন-শাকিল প্যানেলকে রায় দিয়েছেন আগামীতে ড্যাবের নেতৃত্ব কীভাবে চলবে।

ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ বলেন, ড্যাবের নির্বাচন একটি মাইলফলক। নির্বাচন পরবর্তী আমরা শহীদ জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন করে দোয়া করতে এসেছি। বিএনপি সবসময় গণতন্ত্র ও জনগণের জন্য কথা বলে। ড্যাব একটি আস্থাশীল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলবে।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বিজন কান্তি সরকার, বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. মো. রফিকুল ইসলাম, ড্যাব নির্বাচনে আজিজ-শাকুর প্যানেলের অধ্যাপক একেএম আজিজুল হক, অধ্যাপক ডা. আবদুস শাকুর খান, ড্যাব নেতা ডা. এমএ সেলিম, ডা. সিরাজুল ইসলাম, ডা. মোসাদ্দেক হোসেন বিশ্বাস ডাম্বেল, ডা. এরফানুল হক সিদ্দিকী, ডা. মো. ফখরুজ্জামান ফখরুল, ডা. আতিকুল ইসলাম, ডা. আদনান হাসান মাসুদ, ডা. শেখ ফরহাদ, ডা. জাহেদুল কবির জাহিদ, ডা. গালিব হাসান প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, গত ৯ আগস্ট উৎসবমুখর পরিবেশে ড্যাবের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। সেদিন হারুন-শাকিল পূর্ণ প্যানেলের নিরঙ্কুশ বিজয় হয়েছে। ড্যাবের নির্বাচনে পদসংখ্যা পাঁচটি। পদগুলো হলো-সভাপতি, সিনিয়র সহসভাপতি, মহাসচিব, কোষাধ্যক্ষ ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব। এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ৩ হাজার ১৩১ জন। নির্বাচন উপলক্ষে দুইটি প্যানেলে ঘোষণা করা হয়। হারুন-শাকিল প্যানেলের সভাপতি পদে অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ পেয়েছেন ১৩৬৯ ভোট, মহাসচিব পদে ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল পেয়েছেন ১৪৫৮ ভোট, সিনিয়র সহসভাপতি পদে ডা. আবুল কেনান পেয়েছেন ১৩৩০ ভোট, কোষাধ্যক্ষ পদে ডা. মো. মেহেদী হাসান পেয়েছেন ১৩১২ ভোট এবং সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব পদে ডা. এ কে এম খালেকুজ্জামান দিপু পেয়েছেন ১৩১৬ ভোট। এই প্যানেল পূর্ণ জয়ী হয়েছে।

অন্যদিকে আজিজ-শাকুর প্যানেলের সভাপতি পদে অধ্যাপক ডা. এ কে এম আজিজুল হক পেয়েছেন ১২০২ ভোট, মহাসচিব পদে ডা. আব্দুস শাকুর খান ১০৭৯ ভোট, সিনিয়র সহসভাপতি পদে ডা. সাইফ উদ্দিন নিসার আহমেদ তুষার পেয়েছেন ১২৩৩, কোষাধ্যক্ষ পদে ডা. তৌহিদ উল ইসলাম পেয়েছেন ১২৫৯ ভোট এবং সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব পদে ডা. আবু মো. আহসান ফিরোজ পেয়েছেন ১২৪৯ ভোট। এই প্যানেলের কেউ জয়ী হননি।

দুই প্যানেলের মধ্যে অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ ২০১৯ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত ড্যাবের নেতৃত্বে ছিলেন। ডা. আজিজুল হক ২০০৫ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ড্যাবের সভাপতি ছিলেন।