
এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ করেছেন এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা। সমাবেশ থেকে জাতীয়করণ দাবি মেনে নিতে সরকারকে এক মাসের সময় বেঁধে দেন তারা। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে কদম ফোয়ারা থেকে পল্টন মোড় পর্যন্ত রাস্তায় শিক্ষকরা অবস্থান নিয়ে সমাবেশ করলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তৈরি হয় তীব্র যানজটের ভোগান্তি।
এদিকে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া-চিকিৎসাভাতা বৃদ্ধি করার প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রেস ক্লাবের সামনে এসে এ তথ্য জানান আন্দোলনরত শিক্ষক নেতারা। পূর্বঘোষিত গতকালের এ সমাবেশে সারা দেশ থেকে কয়েক হাজার শিক্ষক অংশ নেন। এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের এ কর্মসূচিতে প্রেস ক্লাবের সামনে কদম ফোয়ারা থেকে পল্টন মোড় পর্যন্ত রাস্তায় শিক্ষকরা অবস্থান নিলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত এ পরিস্থিতি বিরাজ করলে রাজধানীতে তীব্র যানজটের ভোগান্তি তৈরি হয়। প্রেস ক্লাব, পল্টন মোড় ছাড়িয়ে যানজটের তৈরি হয় গুলিস্তান, কাকরাইল, মালিবাগ, মৌচাক, শাহবাগ, বাংলামোটর, কারওয়ানবাজার, ফার্মগেটসহ বিভিন্ন এলাকায়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন বিভিন্ন গন্তব্যে রওনা হওয়া মানুষ।
এ সময় যানজটে আটকে পড়া অনেককে হেঁটে গন্তব্যের উদ্দেশে রওয়া হতে দেখা যায়। রাস্তা বন্ধ করে শিক্ষকদের সমাবেশ শুরু হলে বেলা ১২টার দিকে আন্দোলনরতদের ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে বসেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরার। এর মধ্যেই শিক্ষকদের একটি গ্রুপ প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে সচিবালয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে সেখানে ব্যারিকেড ও পুলিশি বাধার মুখে পড়েন। এ সময় উত্তেজিত শিক্ষকরা জাতীয়করণ দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এ সময় সতর্ক পাহারায় থাকতে দেখা গেছে। শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রেস ক্লাবের সামনে এসে জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, চিকিৎসা ভাতা ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা এবং বাড়িভাড়া ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকায় উন্নীত করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া এমপিওভুক্ত কর্মচারীদের জন্য বাড়ি ভাড়া ৫০ শতাংশ থেকে ৭৫ শতাংশ করে ডিও লেটার অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের কর্তাব্যক্তিরা আমাদের দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন। তারা বলেছেন, দাবিগুলো পূরণে কী পরিমাণ অর্থ লাগবে তা নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করবেন। আজিজী বলেন, এক মাসের মধ্যে আমাদের দাবি মানা না হলে আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর অর্ধদিবস এবং ১৫ ও ১৬ সেপ্টেম্বর পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালান করা হবে। এরপরও দাবি মানা না হলে ১২ অক্টোবর থেকে প্রেস ক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে।