
ছাত্রীদের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্যকে জড়িয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন। তিনি বলেন, ‘কলেবর না বাড়িয়ে সর্বাগ্রে আমি আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী এবং বাংলাদেশের প্রতিটি মা-বোনের কাছে সরাসরি দুঃখ প্রকাশ করছি, আমার কোনও অনভিপ্রেত আচরণে কষ্ট পেয়ে থাকলে।’
রবিবার (১০ আগস্ট) মধ্যরাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক দীর্ঘ স্ট্যাটাসে ক্ষমা চান শামসুল আরেফিন। তিনি লিখেছেন, ‘কোনও ভণিতা না করে দুঃখ প্রকাশ করার একটিই কারণ, মা-বোন ধারণ ও ধারকের জায়গা আমার অস্তিত্বের আত্মপ্রকাশ। ধর্মপ্রাণ মুসলমানের প্রতিও দুঃখ প্রকাশ করছি। নিঃশর্ত ক্ষমা চাচ্ছি মহান আল্লাহর কাছে, যিনি অশেষ রহমত ও মাগফিরাতের আশ্রয়। দুঃখ প্রকাশ করছি যার সাথে আমার তর্ক হয়েছে উনি আমার জন্যে সাথে সাথেই উদিগ্ন হয়েছেন, যা একজন মহান মুসলমানের কাজ।’
দুটি কথা চিন্তা ও অনুভূতি প্রকাশের জন্যে বলছি উল্লেখ করে শামসুল আরেফিন বলেন, ‘যাদের অতটুকু পড়ার সময় নেই, আপনারা জানুন আমি দুঃখ প্রকাশ করেছি। ধর্ম-দর্শন ও চিন্তা অনুযায়ী যে যে মতাদর্শের অনুসারীই হই না কেন, আমরা মানুষ। মাতৃত্ব ও নারী একটি শ্রদ্ধা এবং সম্মানের বিষয়। যে একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ হয়েছে, দেশমাতৃকার জন্যে ৩০ লাখ জীবন দিয়েছে। ইজ্জত দিয়েছে ২ লাখ মা-বোন।’
‘যেখানে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মহান সূফীদের হাত ধরে, নিপীড়নের বিরুদ্ধে মানবতার বার্তা দিয়ে। যেখানে দেশমাতৃকার জন্যে জিয়াউর রহমান সব ছেড়ে যুদ্ধে গেছেন এবং দেশ চালিয়েছেন সততায়, সেটি আমি ধারণ করার চেষ্টা করি। আমার চিন্তার জগত তৈরির অসাধারণ অনুপ্রেরণা আপোষহীন মহীয়সী নারী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। আমার মা যিনি শৈশবে আমাকে প্রকৃতি ও সমাজের সাথে পরিচয় করিয়েছেন,’ যোগ করেন তিনি।
শামসুল আরেফিন বলেন, ‘প্রত্যেকের ব্যক্তি-দর্শন আলাদা, এটি আমি সব সময় বিশ্বাস করি। এ স্বাতন্ত্র্য আমি চরমভাবে স্বীকার করি। স্মরণ করছি ২৪ এর শহিদ ভাই-বোনদের, যাদের প্রাণের বিনিময়ে বাংলাদেশের নতুন স্বপ্ন। এ আত্মত্যাগ আমার সামান্য ভুলে, অসচেতনতায় সামান্যও ধূলিসাৎ হোক, তা আমি চাই না। স্মরণ করছি তারেক রহমানের আত্মত্যাগকে, যিনি ১৭-১৮ ঘণ্টা শ্রম দিয়ে একটি সুন্দর বাংলাদেশ চান। আমাদের ক্যাপ্টেন রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও নাছির উদ্দিন নাছির যাদেরও অনেক প্রচেষ্টা একটি সুন্দর আগামীর ছাত্রদল গড়বার।
তিনি বলেন, ‘বিনীতভাবেই শ্রদ্ধা রেখে নিবেদন করছি, আমি চিন্তা ও আদর্শে বলিষ্ঠতায় বিশ্বাসী। মৃত্যুর মুখেও সত্যের মুখোমুখি হতে অভিপ্রায় ব্যক্ত করি ও বিশ্বাস করি। দীর্ঘ ১৬ সতেরো বছরে যে নিপীড়ন দেখেছি, সে জায়গা থেকে জাতিকে একটি অবাধ ও মুক্ত বাংলাদেশে কল্পনা করি। রাজনীতি হোক উন্মুক্ত এবং সৎ-সাহসের।’
শামসুল আরেফিন আরও বলেন, ‘আবারও দুঃখ প্রকাশ করে রাসুল (সা.) মধ্যপন্থী চিন্তাধারাকে ধারণ করে নিজেকে যেন সব সময় সংযতদের দলে পাই, সেই আশাবাদ রেখে এগিয়ে যেতে চাই।’