
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে পদত্যাগ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মুরাদনগর উপজেলার মুখপাত্র খাদিজা আক্তার কেয়া। শনিবার বিকেলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক আবেগঘন এক পোস্টের মাধ্যমে তিনি এই ঘোষণা দেন। পরে তার এ পোস্ট ভাইরাল হয়ে গেছে।
নিজের পোস্টে কেয়া লেখেন, ‘যার জন্য করলাম চুরি, সেই বলে চোর! এটা আমার ক্ষেত্রেই যে প্রযোজ্য হবে না, কে বলল? আপনারা সবাই জানেন আমি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন দায়িত্বশীল কর্মী ছিলাম। কিন্তু আজকের পর থেকে এই আন্দোলনের সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’
তিনি আরও লেখেন, ‘আমরা একটি গণ-অভ্যুত্থানের পর একটি প্লাটফর্মে এসেছিলাম মুরাদনগর থেকে। সেই অভ্যুত্থানে আমাদের হাজারো ভাই-বোন শহীদ হয়েছেন। আমি তাদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করতে পারি না। তাই আমি নিজেই এইসব কিছু থেকে সরে দাঁড়ালাম। আজ থেকে এই প্লাটফর্মের সঙ্গে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা থাকবে না।’
কেয়া তার বক্তব্যে স্পষ্ট করেন, তিনি কোনো রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তি কেন্দ্রিক রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না এবং ভবিষ্যতেও থাকবেন না। তবে দেশের স্বার্থে ও সংস্কারের পক্ষে তিনি সবসময় সংগ্রামে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তিনি লেখেন, ‘দেশের স্বার্থে আমি সবসময় লড়াই করে যাবো। আমাকে সবসময় দেশের পক্ষে পাওয়া যাবে ইন-শা-আল্লাহ।’
এ বিষয়ে কেয়া মুঠোফোনে সমকালকে বলেন, ‘সম্প্রতি কুমিল্লা টাউনহল মাঠে এনসিপির পদযাত্রায় আওয়ামী লীগের লোকজন সামনের সারিতে ছিলেন। যারা আমাদেরকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে বাধা দেয়। এ বিষয়গুলো দেখে মনে হয়েছে আমাদের শহীদের সঙ্গে বেঈমানি করা হচ্ছে। এগুলো দেখে এই ফ্ল্যাটফর্মে আমি থাকতে চাচ্ছি না।’ তিনি বলেন, ‘আমি স্বেচ্ছায় পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
কেয়ার এ পদত্যাগের ঘোষণায় ছাত্র আন্দোলনে সম্পৃক্তদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রয়া দেখা গেছে। তবে কেউ আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাননি। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কুমিল্লার জেলা সমন্বয়ক সাকিব হোসাইন সমকালকে বলেন, ‘কেয়ার পদত্যাগের বিষয়টি জেনেছি। তবে আমরা এখনও আনুষ্ঠানিক চিঠি (পদত্যাগ পত্র) পাইনি। সে যে বিষয়গুলো অভিযোগ করেছে, আমরা সেগুলো খতিয়ে দেখব।’ তিনি বলেন, ‘আমরা তো আর সবাইকে চিনি না। এনসিপির প্রোগ্রামে যদি আওয়ামী লীগের কেউ এসে থাকেন তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা উচিত।’