Image description

মাহফুজ আনাম যে কত বড় ফ্যাসিস্ট দোশর, সেটা প্রমাণ করেছিল গত বছর এই দিনে। ২৬শে জুলাই অনেকটা ইন্টারনেট ফিরে এসেছে। আন্দোলন মনে হচ্ছিল দমন করা হয়তোবা শেষ। ব্ল্যাকআউটের দিনগুলো অনেকেই জানেন যে The Daily Star বেশ ভালো রিপোর্টিং করেছিল — অনেক কিছুই তুলে এনেছিল যেগুলো অন্যান্য পত্রিকায় আসেনি।

ঠিক এমন সময়ই মাহফুজ আনাম একটা কলাম লিখে ছাপায় The Daily Star-এ। প্রথম প্যারাগ্রাফেই সে আন্দোলনকারীদের তীব্র নিন্দা জানায় "ভায়োলেন্স" এর জন্য। সরকারের পতন করতে চাওয়া হয়ে থাকলে সে "vigorously denounce" করে থাকে। এই আন্দোলন ও সরকারের পতন করতে চাওয়া লোকজন দেশের অভ্যন্তরীণ শত্রু, যারা দেশের উন্নয়ন ও সাফল্যের বিরুদ্ধে কাজ করছে বলেন আনাম।

তারপর কিছুক্ষণ কান্না করল মেট্রোরেল ও সব উন্নয়নের স্থাপনাগুলা নিয়ে। এগুলা যারা করেছে, তাদের খুঁজে দিতে মিডিয়া আওয়ামী সরকারকে সাহায্য করবে বলে সে ঘোষণা করে ফেলে।

১২ দিন আগে হাসিনা যেভাবে আন্দোলনকারীদের সবাইকে রাজাকার ডেকেছিল, মাহফুজ আনামও তাই করে — কিন্তু একটু ভিন্নভাবে। সরকারবিরোধী আন্দোলনের সবাইকেই মুক্তিযুদ্ধ-বিরোধী তকমা দিয়ে দেয়। তাদেরকে পরাজিত করে "destroy" করতে চায়। সে লিখে:

"We in the media will assist the government in unearthing this move against Bangladesh. Those who opposed our birth in 1971 must be resisted, defeated and destroyed."

এত কিছু লিখে ফেলেছিল স্যারে জাস্ট প্রথম প্যারাগ্রাফেই। পরে একটু সরকারকে বকা দিল গুলি চালানোর জন্য। “এভাবে না করলেও পারত, ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে, বিএনপি-জামায়াতের উপর দোষ চাপিয়ে দেওয়া, এভাবে ছাত্ররা কেন স্লোগান দিল, ছাত্রলীগ না লেলিয়েও কি করা যেত না”— ইত্যাদি বলে আবার ফিরে এসে বলল, সরকারের কঠোর হতে হবে। সরকারবিরোধীরা হাইজ্যাক করে ফেলেছে আন্দোলন।

একটু নির্বাচনের কারচুপির কথাও বলে, কিন্তু বিএনপির দোষ— এই গণতন্ত্র হারিয়ে যাওয়ার কারণ তারা নির্বাচনে আসে না! এক পর্যায়ে ষড়যন্ত্রের কথাও বলে সে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে থাকা শক্তি ১৫ বছর ক্ষমতায় থেকেও কিভাবে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তির সাথে মোকাবিলা করতে সেনাবাহিনী নামানো লাগে— সেটা আনাম সাহেব একেবারেই বুঝে উঠতে পারছিলেন না।
আন্দোলনকারীদের অনেকেই জামায়াত ও শিবিরের — বলেও দাবি আছে লেখায়। এত এত মানুষ আন্দোলনে থাকলে এই এক দলের নাম নেয়ার কারনটাও স্পষ্ট।

পুরো লেখাটার লিংক কমেন্টে দিলাম। এই লেখাটা আমাদের সবার পড়া দরকার বুঝার জন্যে— যে আমাদের মিডিয়া কিভাবে এক ফ্যাসিস্ট খুনিকে সমর্থন দিচ্ছিল জুলাইয়ের রক্তাক্ত দিনগুলোতেও।

আমরা যারা ইংলিশ মিডিয়াম ব্যাকগ্রাউন্ডের, তাদের দেশ চেনার একটা বড় অংশ হয়েছিল The Daily Star থেকে। এবার অনেকেই হয়তো বুঝবেন কেন আমরা ফার্মের মুরগিরা এত চেতনাইজড হিসেবে বড় হয়েছিলাম।
আমার বাবা ভাগ্যিস অনেক বছর আগে New Age-এর দিকে ঝুঁকে যাওয়ায়, অতটা এক্সপোজড হই নাই আমি নিজে।

https://www.thedailystar.net/opinion/views/the-third-view/news/column-mahfuz-anam-are-we-going-learn-our-mistakes-or-keep-repeating-them-3662026

Raiiq Ridwan