
ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিগুলোর মধ্যে ঐক্যের কোনো অভাব নেই এবং ঐক্য অটুট রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কথার ছড়াছড়ি, কখনো পক্ষে, কখনো বিপক্ষে বকাবকি- এগুলো থাকবে। এটাই রাজনীতি। রাজনীতি মানেই হচ্ছে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার চেষ্টা করা, কথা দিয়ে ঘায়েল করার চেষ্টা করা এবং নিজেরটাকে এস্টাবলিশ করার চেষ্টা করা। সেটা নিয়ে আমরা খুব বেশি চিন্তিত না। রাজনীতির নিয়ম এটাই। রাজনীতির এমন ধারাটাই চাই। এটা থাকলেই রাজনীতি এগুবে। রাজনীতি থাকলেই দেশের জন্য মঙ্গল। এই কথাবার্তার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র শাণিত হচ্ছে। শতফুল ফুটতে দিতে হবে। গণতন্ত্র মানেই হচ্ছে, সবাইকে কথা বলতে দিতে হবে। প্রত্যেকের কথা শুনতে হবে। শতফুল ফুটবে, তার মধ্য থেকে সবচেয়ে ভালো সৌরভ সুবাস হয়ে আসবে।
আজ বুধবার সকালে গুলশান চেয়ারপারসন অফিসে জাতীয়তাবাদী ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী দলের সাথে বৈঠক শেষে তিনি একথা বলেন। জাতীয়তাবাদী ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী দলের সভাপতি মৃগেন হাগিদের নেতৃত্বে ২০ সদস্য প্রতিনিধি দল বৈঠকে অংশ নেয়। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিল সদস্য ও হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকার।
মির্জা ফখরুল বলেন, ৩১ দফার আলোকে আমরা বাংলাদেশে একটা রেইনবো স্টেট নির্মাণ করার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, সেই কমিটমেন্টে সকল ধর্ম জাতি গোষ্ঠী ক্ষুদ্র গোষ্ঠী সবাইকে নিয়ে একটা সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য কাজ করব।
গতকাল রাতে প্রধান উপদেষ্টার সাথে বৈঠক প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের কোনো ক্রাইসিস তৈরি হলে, তারা আমাদের ডাকেন। আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তাই যাই। গণতন্ত্রের উত্তোলনের জন্য যা কিছুই করা দরকার, সেই কাজগুলো করব। তবে মনে করি, মতবিনিময় আরো ঘন ঘন হলে ভালো হতো। তাহলে হয়তো উদ্ভুত সমস্যাগুলো তৈরি হতো না। ‘সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর যারা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছে, লড়াই করেছে। তাদের সাথে তিনি ( ইউনূস) মতবিনিময় করার জন্য ডেকেছিলেন এবং আমরা সেখানে আলোচনা করেছি।
তিনি বলেন, জুলাই এবং আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে পরিবর্তন নিয়ে আসা হয়েছে। ফ্যাসিস্ট শক্তিকে পরাজিত করা হয়েছে। এই জুলাই-আগস্ট মাসেই ওই (ফ্যাসিস্ট) শক্তির আবারো উত্থানের একটা নমুনা দেখার মতো অবস্থা তৈরি হয়েছে। সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার কথা বলেছি এবং একই সাথে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে দ্রুত রান্বিত করা এবং প্রতিশ্রুত ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন দেয়া, সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুলের বিমান বিধ্বস্তের বিষয়টি একটি ‘দুর্ঘটনা’।
মির্জা ফখরুল বলেন, গোপালগঞ্জের সহিংসতার ঘটনাটা ডেফিনেটলি রাজনীতি জড়িত । নির্বাচন বাঞ্চাল করার একটা চক্রান্ত এর মধ্যে অবশ্যই আছে। সচিবালয়ে ঢুকে পড়া এবং উপদেষ্টাদের আটকে রাখার বিষয়গুলোতে ফ্যাসিস্টদের লোকজন জড়িত আছে। তারা কিছু কিছু সমস্যা তৈরি করার চেষ্টায় আছে। এটা কখনোই পারবে না। বাংলাদেশের মানুষ অত্যন্ত সজাগ-সচেতন আছে। তারা সমস্ত চক্রান্তকে নস্যাৎ করে দেবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের টার্গেট আমি এখনো দেখছি এবং বুঝছি।’