Image description

রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হাতে পর্যাপ্ত ক্ষমতা থাকা প্রয়োজন বলে  মনে করে বিএনপি। দলটির নেতারা বলছেন, যদি রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ব্যাপক বৃদ্ধি করা হয়, তাহলে সংসদীয় গণতন্ত্র তেমন অর্থবহ থাকবে না। এছাড়া সংসদে নারীর ক্ষমতায়ন ও প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর পক্ষে তারা। গত বৃহস্পতিবার রাতে চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপি’র সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হয় বলে সূত্রে জানা গেছে। এতে লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন- বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

সূত্র জানিয়েছে, বৈঠকে নারী সদস্যদের নির্বাচন পদ্ধতি নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। সংরক্ষিত ৫০টি নারী আসন সংখ্যা ১০০তে উন্নীত করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এ বিষয়েও নতুন করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। ১০০টির মধ্যে ৫০টি নারী আসন সংরক্ষিত চাইবে তারা। বিএনপি বাস্তবতার নিরিখে ধাপে ধাপে নারী আসনে সরাসরি নির্বাচন চাইবে। এর অংশ হিসেবে আগামী নির্বাচনে ৩০০ সংসদ সদস্যের মধ্যে ৫ শতাংশ, অর্থাৎ ১৫টি আসনে সরাসরি নির্বাচন এবং পরবর্তী নির্বাচন অর্থাৎ চতুর্দশ সংসদ নির্বাচনে ১০ভাগ মানে ৩০টি আসনে সরাসরি নির্বাচন হবে।

বৈঠক সূত্র জানায়, বৈঠকে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য কেমন হওয়া উচিত, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। দলটি তাদের মধ্যে ক্ষমতার কিছু ভারসাম্য আনতে রাজি আছে। তবে এমন ভারসাম্য চায় না, যেখানে সরকার প্রধান তথা প্রধানমন্ত্রীর হাতে পর্যাপ্ত ক্ষমতা থাকবে না। নেতারা মনে করেন যে, রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হাতে পর্যাপ্ত ক্ষমতা থাকা প্রয়োজন। বিএনপি নেতারা অভিমত দেন, যদি রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ব্যাপক বৃদ্ধি করা হয়, তাহলে সংসদীয় গণতন্ত্র তেমন অর্থবহ থাকবে না। প্রধানমন্ত্রীর হাতে যথেষ্ট ক্ষমতা না থাকলে সেটা অকার্যকর হয়ে পড়বে। দলটি মনে করে, আগামীতে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার কিংবা সংসদীয় সরকার- যে পদ্ধতিই করা হোক, সরকারপ্রধানকে পর্যাপ্ত ক্ষমতা দিতে হবে। তবে আলোচনায় কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এটা নিয়ে আগামীতে আরও আলোচনা হবে।

ওদিকে, পিআর (ভোটের অনুপাতে) পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষের আসন বণ্টন বিএনপি চায় না বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে সংসদের নিম্ন্নকক্ষের আসনের অনুপাতে উচ্চকক্ষের আসন বণ্টন চায় দলটি। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আগামীর সংলাপে তারা আবারও তাদের আগের এই অবস্থানই তুলে ধরবে। আর কমিশন ভোটের অনুপাতের (পিআর পদ্ধতি) কথা বললেও তাতে রাজি হবে না তারা। ঐকমত্য কমিশন উচ্চকক্ষ বাতিলের প্রস্তাব করলে সেটারও বিরোধিতা করবে না দলটি। তবে আগামীতে ক্ষমতায় এলে ৩১ দফার আলোকে দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট সংসদের উচ্চকক্ষ গঠনের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সেই অঙ্গীকার রক্ষা করবে বিএনপি।