
কুমিল্লার মুরাদনগরে বসতঘরের দরজা ভেঙে হিন্দু সম্প্রদায়ের এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ফজর আলীর বিরুদ্ধে। ঘটনার পর অভিযুক্তকে বিএনপি নেতা বলে প্রচার চালানো নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটে ২৬ জুন (বৃহস্পতিবার) দিবাগত রাতে মুরাদনগর উপজেলার রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের বাহেরচর পাচকিত্তা গ্রামে। ২৫ বছর বয়সী ওই নারী বর্তমানে বাবার বাড়িতে অবস্থান করছিলেন।
ভুক্তভোগী নারী নিজে বাদী হয়ে মুরাদনগর থানায় ধর্ষণের মামলা করেছেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, রাত আনুমানিক ১০টার দিকে অভিযুক্ত ফজর আলী তার বাড়ির দরজায় এসে ডাকাডাকি শুরু করে। তিনি দরজা খুলতে অস্বীকৃতি জানালে একপর্যায়ে ফজর আলী জোরপূর্বক দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে এবং তাকে ধর্ষণ করে।
চিৎকার শুনে ভুক্তভোগীর চাচি এবং স্থানীয় কয়েকজন পূজার অনুষ্ঠান থেকে ছুটে এসে ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করেন। উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, তারা ঘরে ঢুকে ফজর আলীকে ধর্ষণের সময় হাতে-নাতে দেখতে পান।
রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি ও অপপ্রচার:
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, অভিযুক্ত ফজর আলী দীর্ঘদিন ধরেই স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত এবং তিনি ১১নং রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম কিবরিয়া খোকনের বডিগার্ড হিসেবেও পরিচিত।
তবে ঘটনার পরপরই একটি ফেসবুকভিত্তিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘মুরাদনগর লাইভ টিভি’—যা আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুনের মিডিয়া উইংয়ের সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ রয়েছে। ওই পেজ থেকে ফজর আলীকে বিএনপি নেতা হিসেবে উপস্থাপন করে বিভ্রান্তিকর প্রচার শুরু হয়।
মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অন্জন ও সদস্য সচিব মোল্লা মজিবুল হক এক যৌথ বিবৃতিতে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তারা বলেন— আওয়ামী লীগের মিডিয়া উইং বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে বারবার এমন অপপ্রচার চালিয়ে আসছে।
বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়, সাবেক এমপি ইউসুফ হারুন ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা বিএনপিকে জড়িয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নানা অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত করার অপচেষ্টা করছে।
মুরাদনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহিদুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ভুক্তভোগীর দায়েরকৃত অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করা হয়েছে। অভিযুক্তকে ধরতে অভিযান চলছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।