
ক্লাস চলাকালীন অনুষ্ঠান ও চাঁদা না দেওয়ায় ক্ষোভে রাজধানীর একটি কলেজে হামলা করছে ছাত্রদলের ৩০ থেকে ৪০ জন নেতাকর্মী। এই ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির ৮/৯ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানায় কলেজ কর্তৃপক্ষ। ঘটনাস্থলে থেকে ৬ জন হামলাকারীকে আটক করেছে সেনাবাহিনীর সদস্যরা। পরে রাতে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। আটককৃতরা সবাই স্থানীয় ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আজ রবিবার (২৫ মে) রাজধানীর মিরপুর- ১৩ নম্বরে অবস্থিত সাইক কলেজ অব মেডিকেল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে এই ঘটনা ঘটে।
আটকরা হলেন, ফয়সাল মাহবুব, রিফাত আহমেদ, শাহরিয়ার প্রান্ত, আতাউর রহমান ও আকাশ। এরমধ্যে ফয়সাল মাহবুব কাফরুল থানা ছাত্রদলের ৪নং ওয়ার্ডের সাবেক আহ্বায়ক ও সাংগঠনিক সম্পাদক। তারা সবাই ঢাকা মহানগর পশ্চিম থানার সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসেনের অনুসারী। আর আকরাম হোসেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরের অনুসারী বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আবু হাসনাত মো. ইয়াহিয়া দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘দুপুর দুইটার দিকে কাফরুল থানা ছাত্রদলের ৪নং ওয়ার্ডের সাবেক আহ্বায়ক ও সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল মাহবুব এসে আমাদের কলেজে প্রোগ্রাম করার জন্য টাকা দাবি করে। পরে এই বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি হলে তারা চলে যায়। এর একঘণ্টা পর ফের ৩০ থেকে ৪০ জন নেতাকর্মী নিয়ে ফিরে আসেন। মব তৈরি করে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়।’ এছাড়াও তারা বিভিন্ন সময়ে আমাকে আওয়ামী লীগের দোসর বলে হুমকি দেয়। বিভিন্ন কৌশলে টাকা দাবি করে।
প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘এই ঘটনা অন্তত ১১ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। অনুষ্ঠান করতে না দেওয়ায় আমাকে আওয়ামী লীগের দোসর বলে গালাগালি করতে থাকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীকে জানানো হয়। তারা এসে ছয়জনকে আটক করে নিয়ে যায়।’ তাদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে কাফরুল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীর ওপরে হামলার ঘটনার ৬ জনকে সেনাবাহিনী আটক করে নিয়ে গেছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ মামলা করলে পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করবো।’ আটককৃতরা এখনো সেনাবাহিনীর হেফাজতে রয়েছে। তাদেরকে থানায় দেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পশ্চিম থানার সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসেন দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বর্তমানে কাফরুলে ছাত্রদলের কোন কমিটি নেই। তবে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি সাবেক ছাত্রদলের নেতা ছিলেন। তার সাথে যারা গিয়েছে তারাও আগে ছাত্রদল করতো।
তিনি আরও বলেন, আমরা জেনেছি প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগের দোসর। তারা একটি প্রোগ্রাম করতে চেয়েছিল ওই প্রতিষ্ঠানে কিন্তু অনুমতি না পাওয়া কথা কাটাকাটি হয়। তবে ওখানে কোন মব তৈরি হয়নি, আর চাঁদাবাজির ঘটনাও হয়নি।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরকে মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।