Image description

এবার নিবন্ধন হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছেন আওয়ামী লীগের জোটের শরিক দলের নেতারা। মহাজোট সরকার ও ১৪-দলীয় জোট সরকার আমলে যেসব দল নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল তারাই এ ঝুঁকিতে রয়েছেন। বিচার না হওয়া পর্যন্ত সন্ত্রাসবিরোধী আইনে আওয়ামী লীগের ও সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের যাবতীয় কার্যক্রম গত ১২ মে নিষিদ্ধ করে সরকার। ওই দিন সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশন নিবন্ধন স্থগিত ঘোষণা করে।

আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল হওয়ার পর ঝুঁকিতে আছে মহাজোট সরকারের শরিক জাতীয় পার্টি, ১৪-দলীয় জোটের শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্র্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, সাম্যবাদী দল, গণতন্ত্রী পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপ, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, জাতীয় পার্টি-জেপি। আওয়ামী লীগের জোটে ১৩টি রাজনৈতিক দল থাকলেও বেশ কয়েকটির নিবন্ধন নেই। আওয়ামী লীগের জোটে না থাকলেও সমঝোতা করে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কারণে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টিও ঝুঁকির মধ্যে আছে।

জানা গেছে, জাতীয় পার্টি এবং আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোটের শরিকদের নিবন্ধন বাতিলের দাবিতে ইসির কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছে গণঅধিকার পরিষদ। গত সোমবার নির্বাচন ভবনে সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিনের হাতে এ আবেদন তুলে দেন গণঅধিকার পরিষদের ৭ সদস্যের প্রতিনিধিদল। এ ছাড়াও আওয়ামী লীগের সহযোগী ১৪-দলীয় জোটের নিবন্ধন বাতিলের দাবি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। যারা পাতানো নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে তা জনকল্যাণে ব্যয় করার তাগিদও দেন দলটির নেতারা। ১২ মে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তারা।

আওয়ামী লীগের শরিক দল ওয়ার্র্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছেন। একাধিক হত্যা মামলাসহ বেশ কিছু মামলা তার মাথার ওপর। দলের সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা আওয়ামী লীগের পতনের পরই গা-ঢাকা দিয়েছেন। ফলে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দিয়ে চলছে দলটি। এ দলের একাধিক নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা দলের নিবন্ধন নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পলিটব্যুরোর একজন সদস্য জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট করলেও গণহত্যার পক্ষে ছিলাম না। কাজেই আমাদের নিবন্ধন যদি বাতিল করা হয় তাহলে অন্যায় হবে।

১৪-দলীয় জোটের আরেক শরিক জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু গ্রেপ্তার হয়ে জেলহাজতে রয়েছেন। দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতারও গা-ঢাকা দিয়েছেন। এ ছাড়াও ন্যাপ, জেপি, সাম্যবাদী দলের নেতারাও গা-ঢাকা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের জোট শরিক হিসেবে তাদের নিবন্ধন বাতিলের দাবি উঠেছে। অন্যদিকে ২০০৯ সালে মহাজোট সরকারের শরিক জাতীয় পার্টির নিবন্ধনও বাতিলের দাবি করা হয়েছে। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোট করে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। জাতীয় পার্টি থেকে মন্ত্রিসভায় স্থান দেওয়া হয়েছিল কয়েকজনকে। এ ছাড়াও একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি বিরোধী দলের ভূমিকায় ছিল। কেউ কেউ বলছেন, জাতীয় পার্টি ভোটে না গেলে এককভাবে আওয়ামী লীগ ভোট করতে পারত না। দেশে কোনো সংকটও সৃষ্টি হতো না।