
আওয়ামী লীগের সাম্প্রতিক মিছিল এবং রাজনৈতিক সক্রিয়তা নিয়ে বিশ্লেষণ করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও গবেষক ড. জাহেদ উর রহমান। তিনি মনে করেন, আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মসূচিকে ঘিরে সরকার এবং বিরোধী দলের প্রতিক্রিয়া যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি মিছিলের পেছনের কৌশল ও আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গিও গভীরভাবে মূল্যায়নের দাবি রাখে।
ড. জাহেদ বলেন, ‘‘এই প্রথম আমি বলছি, আওয়ামী লীগের মিছিলে যখনই গ্রেপ্তার করার চেষ্টা করা হয়েছে, বিএনপি বা অন্য কেউ বাধা দেয়ার চেষ্টা করেছে, খুবই বীরের মতো সেলফি তুলে দেখাতে দেখেছি যে কাউকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে, আমি এই প্রত্যেকটির প্রতিবাদ করেছি। কারণ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ দল ছিল না। তার যেকোনো রাজনৈতিক কর্মসূচী যদি ভায়োলেন্ট না হয়ে থাকে, তাহলে তাকে বাধা দেয়ার অধিকার সরকারের ছিল না।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘তবে এখন যেই প্রক্রিয়ায় তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে, সেটাকে সমালোচনা করতে পারেন।’’আওয়ামী লীগের নেতাদের দেশে ফেরার বিষয় নিয়েও মন্তব্য করেন তিনি। ড. জাহেদ বলেন, ‘‘শেখ হাসিনা চান আওয়ামী লীগের নেতারা দেশে আসুক। এর সাথে মিছিলের যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া যাবে। শেখ হাসিনা চান তারা দেশে এসে মিছিল করুক, তারা কোনো না কোনো জায়গায় যেয়ে ধ্বংসাত্মক কাজ করার চেষ্টা করুক। খেয়াল করবেন পশ্চিমা দেশগুলো আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার বিষয়টা পছন্দ করে না।’’
রাজনীতিতে সরকারের দ্বৈত অবস্থান এবং আন্তর্জাতিক সমীকরণ—এই দুইয়ের মধ্যে যে টানাপোড়েন চলছে, তা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘‘সরকারও জানে, বিদেশি শক্তিগুলোর চাপের কারণে সরাসরি নিষেধাজ্ঞা আরোপ কঠিন। ফলে রাজনৈতিক উত্তেজনা উসকে দিয়ে কিংবা সীমিত সহনশীলতার বার্তা দিয়ে তারা একটি নতুন বার্তা দিতে চাইছে।’’
বিশ্লেষকদের মতে, এই বক্তব্যগুলো কেবল রাজনৈতিক কৌশল ব্যাখ্যা করে না, বরং ক্ষমতার রাজনীতিতে পরিবর্তিত সমীকরণের দিকেও ইঙ্গিত করে। আওয়ামী লীগের মিছিল তাই শুধু রাস্তায় হাঁটার কর্মসূচী নয়—তা হতে পারে একটি বড় কূটনৈতিক বার্তার বাহক।