Image description

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশে নির্বাচনের কথা বললে সরকার অখুশি হয়।

সোমবার বিকেলে সিলেটে বিএনপির সিলেট বিভাগের সদস্য ফরম সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, আরো একজন মহিলা উপদেষ্টা বলেছেন, '৫ আগস্ট যা হয়েছে তা নির্বাচনের চাইতেও বেশি।' এসব বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে নজর দেয়ার জন্য তিনি আহ্বান জানান। বর্তমান সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টার কথাবার্তায় মনে হয় যত দিন ইচ্ছা, ততদিন তারা ক্ষমতায় থাকবে। নির্বাচন যদি না হয়, তাহলে নির্বাচন কমিশনের কাজ কি?

বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট বিভাগ) জিকে গউছের সভাপতিত্বে ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকীর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির কোষাধ্যক্ষ এম. রাসেদুজ্জামান মিল্লাত।

সম্মানিত অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরী, আরিফুল হক চৌধুরী ও এম.এ মালিক, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক এমপি শাম্মী আক্তার।

সালাহউদ্দিন আহমেদ তার বক্তব্যে বলেন, 'আওয়ামী লীগের মৃত্যু হয়েছে বাংলাদেশে আর দাফন হয়েছে ভারতে।' তারা ইতিহাসের জঘন্যতম গণহত্যাকারী। আজ পর্যন্ত তারা কোন অনুসূচনা বা ক্ষমা প্রার্থনা করেনি। বিএনপির কি এতো আকাল পড়েছে যে আওয়ামী লীগ থেকে সদস্য আমদানী করতে হবে?

তিনি বলেন, যিনি বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী, যিনি নিজেকে বাংলাদেশী পরিচয় দিবেন, তিনিই জাতীয়তাবাদী দলের সদস্য হতে পারবেন। এই দেশের প্রতিটি ধূলিকণাকে বিএনপি ধারণ করে, লালন করে। বাংলাদেশ অফিসিয়ালি ১৮ কোটি জনগণ বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে তা ১৯ কোটি ছাড়িয়ে গেছে।

তিনি বলেন, যেই আওয়ামী লীগের ডিএনএ তে গণতন্ত্র নাই, তাদেরকে কেন আহবান করতে হবে? গত বছরের ৫ আগস্ট বাংলাদেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে বিতাড়িত করে দিয়েছে। তাদের রাজনৈতিক মৃত্যু হয়েছে। উল্টো তারা গণঅভূত্থানে আন্দোলনকারীদের দুষ্কৃতকারী বলে আখ্যায়িত করছে। তারা কি ভাবে বাংলাদেশে রাজনীতি করতে পারবে?

তিনি বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমান ২০২৩ সালেই রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছিলেন। আমরা জানতাম নিষ্ঠুরভাবে ফ্যাসিবাদের পতন হবে। যারা দেশের জনগণকে হত্যা করেছে, পঙ্গু করেছে, গুম, অপহরণ করেছে, তাদেরকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতেই হবে। বাংলাদেশে যেন কোন দিন আর স্বৈরশাসকের বা ফ্যাসিবাদের উত্থান না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

সভায় সূচনা বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য (দপ্তরে দায়িত্বে) তারিকুল আলম তেনজিন, স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এম. নাসের রহমান, মিজানুর রহমান চৌধুরী, শেখ সুজাত মিয়া ও কয়সর এম আহমদ, সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপি আহবায়ক ফয়জুল করিম ময়ূন, হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মিজানুর রহমান।

অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাদিয়া চৌধুরী মুন্নী, সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুর রহিম রিপন, সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এডভোকেট আব্দুল হক, হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক নুরুল ইসলাম, জাসাসের কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ আরাফুল কবির খোকন প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে সিলেট জেলা ও মহানগর, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ জেলা বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনসহ সিলেট বিভাগের সকল উপজেলা, পৌর এবং সিলেট মহানগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডের বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, দুপুর ১২টায় সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে সালাহউদ্দিন আহমেদকে দলীয় নেতাকর্মীরা স্বাগত জানান। পরে দুপুর ২টায় হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার জিয়ারত করেন।