Image description

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের মাথায় পানির বোতল ছুঁড়ে মারার ঘটনায় বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। সংগঠনটি তথ্য-প্রমাণ ও তদন্ত ছাড়াই অন্যদের ওপর দায় চাপানোর রাজনীতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। অনাকাঙ্ক্ষিত এ ঘটনার দায় ছাত্রশিবিরের ওপর চাপিয়ে ফ্যাসিস্ট আচরণের পুনরাবৃত্তি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে এ সংগঠন। 

শুক্রবার (১৬ মে) সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম স্বাক্ষরিত এক যৌথ বিবৃতিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

 
 

 

বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় নেতারা বলেন, ‘বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই সত্য, ন্যায়নীতি ও আদর্শিক ধারার রাজনীতি জাতিকে উপহার দিয়ে আসছে। বিশেষ করে যেকোনো জাতীয় সংকট নিরসনে ও শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনে বরাবরই অগ্রণী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। ছাত্রশিবিরের এই গঠনমূলক ও বুদ্ধিবৃত্তিক কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করে দেশবাসীর দৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে একটি চক্র পরিকল্পিত উপায়ে মিথ্যাচারের পথ বেছে নিয়েছে।’

তাঁরা বলেন, ‘ছাত্রশিবিরকে বিতর্কিত করতে কিছু ব্যক্তি এবং গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম, বিশেষ করে ফেসবুক ব্যবহার করছে।

 
যেখানে সংগঠনের লোগো, পতাকা, বর্তমান ও সাবেক দায়িত্বশীলদের ছবি এবং অন্যান্য প্রতীক ব্যবহার করে রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অশালীন ভাষা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে। এমনকি ভুয়া ফটোকার্ড তৈরি করে ছাত্রশিবিরের নামে প্রচার করা হচ্ছে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একটি মহল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ছাত্রশিবিরকে নিয়ে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। ফলে কেউ কেউ বিভ্রান্ত হয়ে ছাত্রশিবির সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করছেন।
 
এছাড়াও কিছু ছাত্র ও রাজনৈতিক সংগঠনের কিছু নেতা দলীয় স্বার্থ চরিতার্থ করতে ধারাবাহিকভাবে প্রোপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছেন, যা অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত। আমরা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিতে চাই, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির মিথ্যা, অপপ্রচার ও প্রোপাগান্ডার রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয়।’ 

 

শিবির নেতারা আরো বলেন, ‘বিরোধী মত দমনে দায় চাপানোর সংস্কৃতি ছিল বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের অন্যতম হাতিয়ার। অতীতেও ছাত্রশিবির মিথ্যাচার ও দোষারোপের রাজনীতির শিকার হয়েছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ড. তাহের হত্যাকাণ্ড, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কবির হত্যাকাণ্ড, কুয়েটে হামলা, ঢাবি শিক্ষার্থী সাম্য হত্যাকাণ্ডসহ অসংখ্য ঘটনায় ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে অপরাজনীতির চেষ্টা করা হয়েছে।

 
গত ১৪ মে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে একজন উপদেষ্টার সঙ্গে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার দায় কোনো ধরনের তদন্ত বা তথ্য-প্রমাণ ছাড়াই তিনি ছাত্রশিবিরের ওপর চাপিয়ে ফ্যাসিস্ট আচরণের পুনরাবৃত্তি করেছেন। রাষ্ট্রের দায়িত্বশীলের চেয়ারে বসে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার মনোবৃত্তি পরিহার করতে না পারলে তাঁর স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নেওয়া উচিত।’

 

ছাত্রশিবির নেতারা বলেন, ‘মনে রাখতে হবে, অনৈক্য, বিভক্তি ও দোষারোপের রাজনীতি দেশ গঠনের সুবর্ণ সম্ভাবনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। আমরা সবাইকে গঠনমূলক রাজনৈতিক সংস্কৃতির মাধ্যমে জুলাইয়ের স্পিরিটকে ধারণ এবং অপপ্রচার ও প্রোপাগান্ডার রাজনীতি পরিহারের আহ্বান জানাচ্ছি। পাশাপাশি, যারা রাজনৈতিক বিরোধিতার নামে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে ভুল ও অপতথ্য ছড়াতে বদ্ধপরিকর, তাদের বিষয়ে আমরা সজাগ আছি, প্রয়োজনে আইনের আশ্রয় নিতে আমরা বাধ্য হবো।’

এর আগে গত ১৪ মে রাত ১০টার দিকে কাকরাইল মসজিদের পাশে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কথা বলতে গেলে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের মাথায় পানির বোতল ছুঁড়ে মারা হয়।