
গত ৫ আগস্টের পর নানা অভিযোগের ভিত্তিতে শ্রীপুরে ৫টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও পৌরসভার মেয়রকে বরখাস্ত করা হয়েছে।তবে একই অপরাধে অভিযুক্ত হয়েও বহাল তবিয়তে পদে আছেন এই উপজেলার ৩টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানরা।
তারা হলেন গোসিঙ্গা ইউনিয়নের ছাইদুর রহমান শাহীন, রাজাবাড়ী ইউনিয়নের হাসিনা মোমতাজ এবং প্রহলাদপুর ইউনিয়নের নুরুল হক আকন্দ। তিনজনই গত ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত হয়েছিলেন।
জানা গেছে, ছাইদুর রহমান শাহীন গোসিঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি, নুরুল হক আকন্দ প্রহলাদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং হাসিনা মোমতাজ কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ সভাপতি আকবর আলী চৌধুরীর স্ত্রী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। তাদের বিরুদ্ধে সরকারি জমি, নদীর জমি দখল, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় হত্যাকাণ্ডসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে ইউনিয়ন পরিষদের প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগও রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৩ ইউপি চেয়ারম্যান পলাতক থাকলেও প্রশাসনের সহযোগিতায় তারা দায়িত্ব পালন করছেন। তবে তারা নিয়মিত অফিসে উপস্থিত না হওয়ায় ভোগান্তি বাড়ছে সাধারণ মানুষদের। আওয়ামী লীগের পতনের পর বেশ কিছুদিন আত্মগোপনে ছিলেন সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিরা। পরে অনেকেই বরখাস্ত হলেও প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে নিজেদের পদে বহাল রয়েছেন তারা। বর্তমানে অনেকটাই গোপনে অফিস করছেন। এতে সাধারণ নাগরিকরা সঠিকভাবে সেবা পাচ্ছেন না।
গোসিঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছাইদুর রহমান শাহীনের বিরুদ্ধে গোসিঙ্গা বাজারের সরকারি খাস খতিয়ানের জমি দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণের অভিযোগ রয়েছে। পাশাপাশি বানার নদীর জমিতে সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগও উঠেছে। প্রশাসন এখনো তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। হত্যা মামলার পর মাঝে মধ্যে গোপনে অফিসে এসে নথিপত্রে স্বাক্ষর করে ফের অন্তরালে চলে যান তিনি।
প্রহলাদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল হক আকন্দ বলেন, ‘উপজেলার মাসিক সভায় আমরাও সরাসরি অংশ নিই না, তবে প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে আমাদের সচিব উপস্থিত হন। ’
রাজাবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাসিনা মোমতাজের বিরুদ্ধেও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বরাবর সরকারি বরাদ্দের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ করেছেন ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘চেয়ারম্যান নিয়মিত অফিস করেন না। জনগণের ভোগান্তি বাড়ছে। আর গোপনে থেকেও লুটপাট অব্যাহত রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এরা সবাই নির্বাচিত হয়েছিল জনগণের আমানত ভোটরচুরি করে একই অপরাধে অন্য ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা বরখাস্ত হয়েছেন, অথচ এই তিনজন বহাল আছএ বিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ব্যারিস্টার সজীব আহমেদ বলেন, ‘গোসিঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা ও নিয়মিত অফিস না করার বিষয়ে মৌখিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অন্য চেয়ারম্যানদের বিরুদ্ধেও সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’