
নির্বাচন কমিশনে ‘আওয়ামী লিগ’ নামে একটি নতুন দলের নিবন্ধনের আবেদন জমা দিয়ে হইচই ফেলেছেন উজ্জ্বল রায় নামের এক ব্যক্তি। তবে তিনি ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।
উজ্জ্বল রায় (২৪) দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার হাবড়া ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের নরেশ চন্দ্র রায়ের ছেলে। এমন আবেদনের পর থেকে লাপাত্তা উজ্জ্বল। তার ব্যবহৃত দুটি মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে। পরিবার ও স্বজনরা জানিয়েছেন, উজ্জ্বল ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’। ২০১৬ সাল থেকে তার মানসিক ভারসাম্যহীনতার চিকিৎসা চলছে। তিনি কখনও কোনও রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না।
‘আওয়ামী লিগ’ নামে দল নিবন্ধনের আবেদনকারী ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’
নির্বাচন কমিশনে ‘আওয়ামী লিগ’ নামে একটি নতুন দলের নিবন্ধনের আবেদন জমা দিয়ে হইচই ফেলেছেন উজ্জ্বল রায় নামের এক ব্যক্তি। তবে তিনি ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।
উজ্জ্বল রায় (২৪) দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার হাবড়া ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের নরেশ চন্দ্র রায়ের ছেলে। এমন আবেদনের পর থেকে লাপাত্তা উজ্জ্বল। তার ব্যবহৃত দুটি মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে। পরিবার ও স্বজনরা জানিয়েছেন, উজ্জ্বল ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’। ২০১৬ সাল থেকে তার মানসিক ভারসাম্যহীনতার চিকিৎসা চলছে। তিনি কখনও কোনও রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২৪ মার্চ নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব বরাবর দল নিবন্ধনের আবেদন ফরমে একটি আবেদন দেন উজ্জ্বল রায়। সেখানে দলের পূর্ণ নাম আওয়ামী লিগ, প্রধান কার্যালয়ের ঠিকানা বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, দলের পক্ষে যোগাযোগ রক্ষাকারীর নাম-পদবিতে উজ্জ্বল রায় লেখা হয়। এ ছাড়া মোবাইল নম্বর এবং টেলিফোন নম্বর দেওয়া হয়। দলের প্রতীক হিসেবে চাওয়া হয় নৌকা কিংবা ইলিশ।
উজ্জ্বল রায়ের সম্পর্কে জানতে বৃহস্পতিবার দুপুরে যাওয়া হয় তার বাড়ি রামচন্দ্রপুর গ্রামে। এ সময় দেখা যায়, সাহা পরিবার নামের বাড়ির দরজার সামনে বসে আছেন উজ্জ্বলের বাবা নরেশ চন্দ্র রায়, মা পারুল রানী ও প্রতিবেশী মাধব চন্দ্র রায়। সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে বাড়ির ভেতরে নিয়ে যান। বাড়ির সামনে বসতে দিয়ে কথা বলতে গিয়ে একপ্রকার দুশ্চিন্তায় পড়ে যান নরেশ চন্দ্র রায়।
‘আওয়ামী লিগ’ নামে দল নিবন্ধনের আবেদনকারী ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’
নির্বাচন কমিশনে ‘আওয়ামী লিগ’ নামে একটি নতুন দলের নিবন্ধনের আবেদন জমা দিয়ে হইচই ফেলেছেন উজ্জ্বল রায় নামের এক ব্যক্তি। তবে তিনি ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।
উজ্জ্বল রায় (২৪) দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার হাবড়া ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের নরেশ চন্দ্র রায়ের ছেলে। এমন আবেদনের পর থেকে লাপাত্তা উজ্জ্বল। তার ব্যবহৃত দুটি মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে। পরিবার ও স্বজনরা জানিয়েছেন, উজ্জ্বল ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’। ২০১৬ সাল থেকে তার মানসিক ভারসাম্যহীনতার চিকিৎসা চলছে। তিনি কখনও কোনও রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২৪ মার্চ নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব বরাবর দল নিবন্ধনের আবেদন ফরমে একটি আবেদন দেন উজ্জ্বল রায়। সেখানে দলের পূর্ণ নাম আওয়ামী লিগ, প্রধান কার্যালয়ের ঠিকানা বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, দলের পক্ষে যোগাযোগ রক্ষাকারীর নাম-পদবিতে উজ্জ্বল রায় লেখা হয়। এ ছাড়া মোবাইল নম্বর এবং টেলিফোন নম্বর দেওয়া হয়। দলের প্রতীক হিসেবে চাওয়া হয় নৌকা কিংবা ইলিশ।
উজ্জ্বল রায়ের সম্পর্কে জানতে বৃহস্পতিবার দুপুরে যাওয়া হয় তার বাড়ি রামচন্দ্রপুর গ্রামে। এ সময় দেখা যায়, সাহা পরিবার নামের বাড়ির দরজার সামনে বসে আছেন উজ্জ্বলের বাবা নরেশ চন্দ্র রায়, মা পারুল রানী ও প্রতিবেশী মাধব চন্দ্র রায়। সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে বাড়ির ভেতরে নিয়ে যান। বাড়ির সামনে বসতে দিয়ে কথা বলতে গিয়ে একপ্রকার দুশ্চিন্তায় পড়ে যান নরেশ চন্দ্র রায়।
তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমার ছেলে উজ্জ্বল রায় মানসিক ভারসাম্যহীন। কখন কী করে, কখন কী বলে তার কোনও ঠিক নাই। ছেলে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন চেয়েছে এই খবর পাওয়ার পর থেকে চিন্তিত আমি। গত দুই দিনে সাংবাদিক, গোয়েন্দা সংস্থাসহ বিভিন্ন লোকজন বাড়িতে এসেছেন। নানা কিছু জিজ্ঞাসা করছেন। এতে আমি ভীত ও দুশ্চিন্তায় আছি।’
নরেশ চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমার দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে উজ্জ্বল সবার ছোট। বড় ছেলে কনক চন্দ্র রায় একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় চাকরি করে। বড় মেয়ে প্রতিমা রানীর বিয়ে হয়েছে বেশ কয়েক বছর আগে। উজ্জ্বল তিনবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে। এরপর ফুলবাড়ী উপজেলার টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজে ভর্তি হয়। কিন্তু সেখান থেকে এখন পর্যন্ত পাস করতে পারেনি।’
মা পারুল রানী বলেন, ‘২০১৬ সাল থেকেই উজ্জ্বল মানসিক ভারসাম্যহীন। চিকিৎসা করাচ্ছি রংপুর মেডিক্যাল কলেজের নিউরো সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. রাজকুমার রায়ের কাছে। ওষুধ খেলে কিছুদিন ভালো থাকে। কিন্তু ওষুধ খেতে চায় না ঠিকমতো। এজন্য মাঝেমধ্যেই সমস্যা দেখা দেয়। বাড়িঘর ছেড়ে চলে যায়। কখন কোথায় যায়, তার কোনও ঠিক নাই। আবার হঠাৎ বাড়িতে চলে আসে।’
উজ্জ্বল রায়ের চিকিৎসার কাগজপত্র দেখাচ্ছেন বাবা নরেশ চন্দ্র রায়
নরেশ চন্দ্র রায় বলেন, ‘বহু টাকা খরচ করেছি তার চিকিৎসার জন্য। ছেলেকে আটকে রাখা যায় না। পুরো এলাকা ঘুরে বেড়ায়। ওষুধ খেলে একটু ভালো থাকে। কিন্তু খেতে চায় না। বাড়ির পাশের স্কুলে গিয়ে মাস্টারের চেয়ারে বসে থাকে। শিক্ষকদের সঙ্গে ঝামেলা করে। পড়াশোনা করার সময়ে পরীক্ষায় প্রশ্ন আসতো একটা, উত্তর লিখতো আরেকটা। এজন্য পাস করতে তিনবার লেগেছে। তবে বড় ছেলে ভালো লেখাপড়া করেছে, মেয়েও ভালো লেখাপড়া করেছে। বড় ছেলে পাস করে এখন চাকরি করে।’
উজ্জ্বল রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন চেয়েছে, জানেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মানুষে বলেছে। তাই শুনেছি। আমি মূর্খ মানুষ। মোবাইল চালাতে জানি না। আমার এখন মৃত্যুর বয়স হয়েছে। যে যন্ত্রণায় পড়েছি ছেলেকে নিয়ে, কাউকে বলতেও পারি না। এরকম পাগল ছেলে যেন কারও ঘরে না জন্মায়।’
পারুল রানী বলেন, ‘এখন ছেলে কোথায় আছে, জানি না। গত পাঁচ-ছয় দিন ধরে বাড়িতে নাই। তবে কখনও রাজনীতি করেনি। কোথায় থেকে হঠাৎ এটি মাথায় এলো জানি না। হয়তো কেউ তাকে দিয়ে করিয়েছে।’
প্রতিবেশী মাধব চন্দ্র রায় বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এই বাড়িতে আমি সবসময় আসা-যাওয়া করি। উজ্জ্বল লেখাপড়া করে, কলেজে যায় এটা জানি। কিন্তু সে তো জেলার বাইরে যায় না। সে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন চেয়েছে কীভাবে, বুঝতেছি না। আগে সে কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত ছিল না।’
উজ্জ্বল রায়ের বাবা-মা ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলছেন সাংবাদিক বিপুল সরকার সানি
স্থানীয় মুদি দোকানদার আলিউল বলেন, ‘আমার সঙ্গে উজ্জ্বলের মাঝেমধ্যে কথা হয়। পাগলের মতো কথা বলে সবসময়। যেসব কথা বলা যায় সেসব বলে, যেসব কথা বলা যায় না, সেসবও বলে। কয়েকদিন আগে গ্রামের এক ছাত্রকে শিক্ষক মেরেছে বলে সেখানে গিয়ে শিক্ষককে বলেছে, কেন ছাত্রকে মারলেন? মাঝেমধ্যে এও বলে সে নাকি এমপি-মন্ত্রী। অথচ আমাদের এলাকায় মন্ত্রী ছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার।’
হাবড়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বার) নবদ্বীপ চন্দ্র রায় বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমি উজ্জ্বল ও তার পরিবারের সবাইকে চিনি। ২০১৬ সালে উজ্জ্বল মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে। এরপর থেকে চিকিৎসা করাচ্ছে পরিবার। বারবার এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার পরও পাস করতে পারেনি, পরে পাস করেছে। এরপর কলেজে পড়ছে। সেখানেও পড়ালেখায় উন্নতি নেই। কয়েকদিন আগে তার সঙ্গে কথা হয়েছিল। তখন বলেছিলে দিনাজপুরে ইসকনে থাকে। আবার সেখান থেকে চলে এসেছে। মানসিক ভারসাম্যহীনতা বেড়ে গেছে তার। তবে সে কিংবা তার পরিবার কখনও কোনও দলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল না।’