
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে অন্য কোনো নির্বাচন হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ শহরের মিশনপাড়া এলাকায় জেলা বিএনপির উদ্যোগে এক জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
মির্জা আব্বাস বলেন, আমরা কোনো ভাইকে সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচনে দেখতে চাই না। সংসদ নির্বাচনের আগে বাংলাদেশে অন্য কোনো নির্বাচন নয়। ১৭ বছর রাজপথে লড়াই করেছি। আমাদের পাঁচ হাজার নেতা জীবন দিয়েছে। অনেকে আহত হয়েছে। মামলা খেয়েছি। এটা স্থানীয় নির্বাচনে জন্য নয়, এটা সংসদ নির্বাচনে জন্য। যারা স্থানীয় নির্বাচনে কথা বলছে তাদের উদ্দেশ্য দুরভিসন্ধি ও ষড়যন্ত্রমূলক। কোনো পরিস্থিতিতে দেশের মঙ্গলের জন্য এটা আপনারা চান না।
তিনি আরও বলেন, একটি পক্ষ ষড়যন্ত্র করছে। পত্র-পত্রিকা পড়লে সেটা আপনারা বুঝে যাবেন। স্থানীয় সংসদ নির্বাচন হলে এক দলের অনেক সুবিধা হয়। কারণ গ্রামে পা ফেলার জায়গা নেই। গ্রামে অনেকের পায়ের তলায় মাটি নেই। তারা স্থানীয় সরকার নির্বাচন করে পায়ের তলায় মাটি তৈরি করতে চাইছে। আমরা স্থানীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য এতো লড়াই করিনি। আমরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য লড়াই করেছি। যখন স্থানীয় সংসদ নির্বাচনের প্রয়োজন হবে তখন হবে।
নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপির এ নেতা বলেন, ওরা বলে নির্বাচনের কথা যারা বলে তারা নাকি জাতির শত্রু। তাহলে বলে দেন, বাংলাদেশে আর নির্বাচনে প্রয়োজন নেই। যেমন করে শেখ হাসিনা বিগত ১৫ বছর ক্ষমতায় ছিল সেভাবে আপনিও থাকেন। দেখেন এভাবে থাকতে পারেন কিনা। কিন্তু গণতন্ত্রের জন্য এ দেশের মানুষ লড়াই করেছে, আন্দোলন করেছে। এটা ভুলে গেলে চলবে না। আমরা অপেক্ষা করব নির্বাচন পর্যন্ত। কিন্তু আজীবন অপেক্ষা করব না। আজীবন আমরা কোনো ষড়যন্ত্রের কাছে মাথা নত করব না। সব ষড়যন্ত্রকে আমরা মোকাবিলা করব।
তিনি বলেন, কেউ কেউ বলেন, নির্বাচন যারা চায় তারা এ দেশের মঙ্গল চায় না। আমি তাদের বলতে চাই, এ ১৭ বছর আপনারা কোথায় ছিলেন। যারা ধরেই নিয়েছেন ভোট হলে বিএনপি ক্ষমতায় চলে আসবে, তাহলে তো এর কারণও আপনারা জানেন। কারণ হলো, বিএনপি অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি দল। এ দলের জনপ্রিয়তাকে ধ্বংস করার জন্য এক শ্রেণির লোক মাঠে নেমেছে। তারা বিএনপির সুনাম ধ্বংস করতে চায়। অপকর্ম করছে আরেকজন নাম হচ্ছে বিএনপির।
বিডিআর বিদ্রোহ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিডিআর যারা বেঁচে আছেন ও বিনা অপরাধে যারা জেলে আছেন তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। আমরা জানতে পেরেছি, ওই দিন তাদের হত্যা করেছিল একদল প্রশিক্ষিত প্রাতিষ্ঠানিক একটি বাহিনীর লোক। যারা এ দেশে থাকে না, যারা এ দেশের লোক না। বিদেশ থেকে এসে আমার দেশের ৫৭ সেনা অফিসারকে হত্যা করা হয়েছে। এই সেনা হত্যার বিচার আজও হলো না। যাদের বিচার হচ্ছে, যাদের ফাঁসির আদেশ হয়েছে এবং যাদের বিচার হয়েছে তারা সবাই নির্দোষ। তারা কেউ দোষী নয়। জেলের ভেতরে তাদের কান্না দেখে আমরা আমাদের চোখের অশ্রু ধরে রাখতে পারিনি। আর যারা এখন জেলে আছে তাদের ব্যাপারে আমরা কোনো কথা শুনতে চাই না। তারা দীর্ঘ ১৪-১৫ বছর জেলে পচে মরছে। এ সরকার তাদের কেন ছাড়ছে না তা আমি জানি না। আমার দাবি, যারা এ ঘটনায় জেলে আছে তাদের জেলের গেট অবিলম্বে খুলে দিয়ে বিনা বিচারে মুক্ত করা হোক। তাদের কোনো সাজার প্রয়োজন নেই। তাদের যথেষ্ট সাজা হয়েছে।
এ সময় জনসমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজীর আহমেদ টিটো, বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মামুন মাহমুদ, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান।