Image description
সিঙ্গাপুর থেকে স্কুলে চাকরি

কিশোরীগঞ্জ উপজেলার মাগুড়া দোলাপাড়া আদর্শ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক মেহেদী হাসান। স্কুলটির সঙ্গে তার চাকরিও এমপিওভুক্ত হয়েছে। কাগজে-কলমে তিনি নিয়মিত স্কুল করেন। হাজিরা খাতায় নিয়মিত স্বাক্ষর করেন এবং সরকারের অংশের বেতন ভাতা উত্তোলনও করছেন। 
এলাকাবাসীর অভিযোগ বাস্তবতায় মেহেদী হাসান বাংলাদেশে থাকেন না। তিনি প্রায় দেড় বছর ধরে সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন। মূলত তার বড় বোন তানজিনা আক্তার লাইজু স্কুলটির প্রধান শিক্ষক এবং লাইজুর স্বামী শাহ আলম স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি হওয়ার কারণেই প্রভাব খাটিয়ে এ সুবিধা পেয়ে আসছেন স্কুলের অফিস সহায়ক মেহেদী হাসান।
মঙ্গলবার এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২৩ সালের ৯ নভেম্বর স্কুলের অফিস সহায়ক হিসেবে যোগদান করেন মেহেদী হাসান। ২০২৪ সালের এপ্রিলে তিনি এমপিওভুক্তও হন। যদিও যোগদানের মাত্র দুই মাসের মাথায় সিঙ্গাপুর পাড়ি জমান তিনি। তবে দীর্ঘদিন ধরে সিঙ্গাপুর থাকলেও ওই স্কুলের হাজিরা খাতায় মেহেদীর নামে নিয়মিত স্বাক্ষর হয়।

পাশাপাশি সরকারি অংশের বেতন-ভাতা উত্তোলন করা হচ্ছে।স্কুলের কয়েকজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে  অভিযোগ করেন, স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০০ সালে। প্রতিষ্ঠার ২২ বছর পর ২০২৩ সালে প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্ত করা হয়। এরপর ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা. তানজিনা আক্তার লাইজু ও তার স্বামী বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি শাহ আলম পুরনো শিক্ষকদের বাদ দিয়ে মোটা অংকের টাকা নিয়ে নতুন করে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া শুরু করেন।

পরে কয়েকজন শিক্ষক-কর্মচারী থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে এমপিওভুক্ত করালেও যারা টাকা দিতে পারেননি তাদের বাদ দেওয়া হয়। স্কুলের ৬ জন কর্মচারীর সবাই এমপিওভুক্ত হলেও ১১ শিক্ষকের মধ্যে এমপিওভুক্ত হয়েছেন ৪ জন। যে ৬ জন কর্মচারী এমপিওভুক্ত হয়েছেন তার মধ্যে একজন প্রধান শিক্ষিকার ছোট ভাই মেহেদী হাসান। 
কিশোরীগঞ্জ উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান মিঠু বলেন, আমি যতটুকু জেনেছি মেহেদী হাসান প্রায় দুই বছর ধরে সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন। এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন নিয়োগের দুই মাস পরেই মেহেদী সিঙ্গাপুর চলে যায়। প্রধান শিক্ষক দাবি করেছেন মেহেদী হাসান এমপিওভুক্ত হলেও তার অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেনি।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক তানজিনা আক্তার লাইজু বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করে, ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি শাহ আলমের সঙ্গে কথা বলেন এবং নিউজ না করার জন্য সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন। অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষিকার স্বামী ওই স্কুলের সাবেক সভাপতি শাহ আলম বলেন, বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষকরা সিন্ডিকেট করে অপ্রচার চালাচ্ছে।

নিউজ না করে সাংবাদিকদের তিনি ঘটনাটি মিটমাট করার আহ্বান জানান।  উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম বলেন, ওই বিদ্যালয়ের বিষয়ে বিভিন্ন অভিযোগ শুনেছি। তবে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি।  ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির বর্তমান সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী হকের বলেন, প্রবাসে থেকে স্কুলের চাকরি করার কোনো নিয়ম নেই, বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।