Image description

মিনার রশীদ

রাজনৈতিক চিন্তাধারাকে সাধারণভাবে দুটি প্রধান ধারায় ভাগ করা হয় : বাম (Left Wing) ও ডান (Right Wing)। এই বিভাজনের উৎপত্তি ফরাসি বিপ্লবের সময়, যখন জাতীয় পরিষদের আসনে যারা রাজা ও ঐতিহ্যের পক্ষে ছিলেন, তারা বসতেন সভাপতির ডানপাশে আর পরিবর্তন, বিপ্লব ও সমতা চাওয়া গোষ্ঠী বসত বামপাশে। সেই থেকে ‘ডান’ ও ‘বাম’ ধারণা রাজনীতিতে প্রতীকী অর্থে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

তবে এই দেশের বামপন্থিরা তাদের প্রতিপক্ষ ডানদের কেন দক্ষিণপন্থি বলে ডাকা শুরু করল—সেটিও রীতিমতো গবেষণার বিষয়! একটু খোঁজ নিলে দেখবেন যে, পৃথিবীর আর কোনো দেশে বা ভাষায় ‘right-wing’-কে ‘south-wing’ বলা হয় না।

আমরা খাওয়া-দাওয়া, হ্যান্ডশেকসহ সব ভালো কাজ ডান হাতে করি এবং শৌচকর্মসহ অনেক অপছন্দনীয় অথচ প্রয়োজনীয় কাজ বাম হাতে সারি! ফলে ‘ডান’ শব্দটিতে একটি শ্রেয়তর অভিব্যক্তি ফুটে ওঠে! এই দেশে বামপন্থিরা নিজেদের ব্রাহ্মণ ঠাহর করে এবং ডানপন্থিদের নমশূদ্র জ্ঞান করে! এ কারণেই এই ব্রাহ্মণরা ডানপন্থাকে দক্ষিণপন্থি বানিয়ে দিয়েছে কিন্তু নিজেদের উত্তরপন্থি বলে ডাকে না।

শব্দ নিয়ে কথিত এই ব্রাহ্মণ বা এলিটদের এই খেলা নতুন নয়। সমাজে বিভক্তি ও পারস্পরিক ঘৃণা ছড়ানো এদের অস্থিমজায় ঢুকে গেছে। ৫০ বছর ধরে আমাদের রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতার এটিও একটা বড় কারণ।

এমতাবস্থায় সমাজকে সঠিক পথের দিশা দেখানোর জন্য যে ‘সিভিল সোসাইটি’র নৈতিক কম্পাস হিসেবে কাজ করার কথা ছিল, তাকেও বিকৃত করে ‘সুশীল সমাজ’ নাম দিয়ে সেখানেও এক ধরনের ব্রাহ্মণ্যতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এই ‘সুশীল সমাজ’ মূলত সত্যিকারের নাগরিক দায়িত্বশীলতার প্রতিনিধিত্ব করে না; বরং সেই একই এলিট ব্রাহ্মণ্যতন্ত্রের পুজো করে।

এই সুশীল সমাজে দেখবেন ডানপন্থি বুদ্ধিজীবীদের জন্য দরজা প্রায় বন্ধ করে রেখেছে! ড. মাহমুদুর রহমান গত বৃহস্পতিবার প্রেস ক্লাবের তার বক্তৃতায় সবার চোখে আঙুল দিয়ে এই সত্যটিই তুলে ধরেছেন। সংবাদপত্রজগৎ কীভাবে ব্রাহ্মণ সম্পাদক এবং নমশূদ্র সম্পাদকে ভাগ হয়েছে—সেই নির্মম কাহিনি উপস্থিত সুধীদের সামনে চমৎকারভাবে উপস্থাপন করেছেন।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং বুদ্ধিবৃত্তিক জগতে জাতীয়তাবাদী, ইসলামপন্থি ও রক্ষণশীল ধারার প্রতি যে অবজ্ঞা, বিকৃতি এবং অপরাধীকরণের (criminalization) প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, জুলাই-২৪ মূলত তারই জবাব!

তথাকথিত দক্ষিণপন্থাকে ক্রিমিনালাইজেশনের এই প্রকল্পটি অনেক পুরোনো। এই রোগটির নাম মূলত ইসলামোফোবিয়া। ৭১-এর চেতনা দিয়ে ইসলামোফোবিয়া কিংবা ইসলাম কোপানোর এই যজ্ঞটিকে এরা ঢেকে রাখেন!

বলতে গেলে আশির দশকের শেষদিকে এটি চরম আকার ধারণ করে। তখন আলো- স্টারের জন্ম না হলেও তাদের কর্ম বন্ধ ছিল না! তখনো নানা রঙের ও নানা বর্ণের অনেক দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকা চালু ছিল। বহুরূপী এরশাদও ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য তার এক ডানপন্থি চেহারা প্রদর্শন করতেন। এরশাদের তখনকার সহযোগী মওদুদ আহমদ জানিয়েছিলেন যে ওনারা দক্ষিণপন্থার উত্থান ঠেকাতেই নাকি রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ঘোষণা করেছিলেন। ইসলামের দিকে এরশাদের এই মহব্বত মেকি হলেও ইসলামোফোবিকদের আতঙ্ক কম ছিল না। তারা তাদের ভয় ঠিকঠাকমতোই পেয়ে গেলেন! ইরানের ইসলামি বিপ্লবও এদের ভয়ের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছিল!

দক্ষিণপন্থার উত্থান ঠেকাতে তখন ভয়ংকর রকমের গল্প পরিবেশন করা হতো। মধ্যযুগীয় শাসন শুরু হলে দেশের প্রশাসন, বিচারব্যবস্থাসহ সমাজের অন্যান্য জায়গায় কী ধরনের পরিবর্তন দেখা যাবে, তার একটা মোটামুটি চিত্র তুলে ধরাই এদের কাজ ছিল। সে সময় মহিলা সমিতি মঞ্চে নাটক দেখতে যেতাম। একটা নাটকে দেখানো হলো—নায়িকার ভাই এলাকার মাস্তান, প্রতিবাদী যুবক। পাড়ার রেসিডেন্সিয়াল রাজাকার ওই নায়িকার ‘মাই বডি, মাই চয়েজে’ বাধা দেয়। মুখে দাড়ি এবং মাথায় টুপি পরিহিত ওই ভিলেন একটি মেসওয়াক হাতে নিয়ে নায়িকাকে এনকাউন্টার করে! স্টেজে পা রেখেই নায়িকার দিকে তাকিয়ে ওয়াক-থু বলে থুতু ফেলতে উদ্যত হয়! তখন নায়িকা বলে, জানেন এটা অমুক ভাইয়ের বাসা। এ কথা শুনেই সেই ফেলা দেওয়া থুতু বিশেষ কৌশলে মুখে তুলে ফেলে। হলভর্তি মানুষ চরমভাবে বিনোদিত হয়। পুলকিত হয় পেছনের খেলারাম। অর্ধশতাব্দীর অধিককালব্যাপী দক্ষিণপন্থার উত্থান ঠেকাতে এভাবেই এই দেশের মানুষের বোধ বিশ্বাসকে কোপানো হয়।

সামনের বিভীষিকাময় সময়ের চিত্র আঁকতে গিয়ে আরেকজন লেখেন, ‘নতুন আমিরুল মোমেনিন দেশে নাটক, সিনেমা, সাহিত্য, সংস্কৃতির সব কাজকর্ম হারাম ঘোষণা করেছেন। আজ সকালে জাম্বুরা দিয়ে বল খেলার জন্য এক বালককে গ্রেপ্তার করে কাজির সামনে আনা হয়েছে। কারণ দেশে সব খেলাধুলা হারাম ঘোষণা করা হয়েছে। সেই আইনেই আজ ছেলেটির বিচার করা হবে...।’

আশির দশকের শেষভাগ থেকে নব্বই দশকের মধ্যভাগ পর্যন্ত এ রকম নাটক, সিনেমা, উপন্যাসের মাধ্যমে এই দক্ষিণপন্থার ক্রিমিনালাইজেশনের প্রজেক্টটি অব্যাহত থাকে। এসবকে বলা যায় হোমিও ডোজ! মাথায় পট্টি বেঁধে জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়ে এবং সর্বোপরি জামায়াতের বিশেষ আনুকূল্যে ১৯৯৬ সালে একুশ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতা ফিরে পায়। ১৯৯৬ সালের পর থেকে শুরু হয় এই ক্রিমিনালাইজেশনের অ্যালোপ্যাথি ডোজ! পহেলা বৈশাখে বটমূলে হামলায় দেখা যায় হাসান ইমামসহ পালের গোদারা মঞ্চ থেকে নামার পরই গোলাগুলি শুরু হয়ে যায়।

চারদলীয় জোট সরকারের সময় দেশের ৫০০ স্থানে এক যোগে বোমা (পটকা) হামলা, একুশে আগস্ট শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা, সবার পেছনেই ছিল একই খেলারাম। জেএমবি আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় আরোহণকে সহজ করে দেয়। জেএমবির সেই অবদান আওয়ামী লীগ ভোলেনি। ক্ষমতায় এসে শায়েখ আবদুর রহমানের আপন শ্যালককে আওয়ামী লীগ মন্ত্রী বানায়। র‍্যাবের যে কর্মকর্তা শায়েখ আবদুর রহমানকে পাকড়াও করেছিলেন, সেই কর্নেল গুলজারকে বিডিআর হত্যাকাণ্ডের সময় পৈশাচিক কায়দায় হত্যা করা হয়!

এরা একটি কাজে বোধহয় খুব সফল হয়েছে। ‘ডানপন্থার গন্ধ বিএনপির ওপর একটি বোঝা’—এটি বিএনপির বিশাল নেতাকর্মীর সাইকিতে প্রবেশ করিয়ে দিয়েছে। সর্বোচ্চ ৫০ হাজার নেতাকর্মী পদ-পদবি বা অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে, বাদবাকি কয়েক কোটি সমর্থন করে এই গন্ধটি থাকার কারণে।

বিএনপির এই গন্ধটি বেড়ে যাক, তা আমিও চাই না। এ রকম অল্পস্বল্প গন্ধযুক্ত একটি দল দরকার। বিএনপি যেখানে আছে, সেখানে রেখেই নেতাকর্মীদের মনের মধ্যে বা কলবে এই ধরনের জবাবদিহির ভয় ঢুকিয়ে দেওয়া যায় । ধরুন, বিএনপির প্রচেষ্টায় সারা দেশের ওসিসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা ঘুস খাওয়া বন্ধ করে দিলেন। তাতে কি আমেরিকা বা ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন বিএনপির ওপর খুব বেশি নাখোশ হয়ে পড়বে? অর্থাৎ গন্ধ বাড়বে না, কিন্তু গুণাগুণ বাড়বে। এটাই আসলে বিএনপির বৈশিষ্ট্য হওয়া উচিত।

কোরআন শুধু জামায়াতে ইসলাম কিংবা হেফাজতে ইসলামের লোকজনের জন্যই নাজিল হয়নি। বিএনপি এমনকি বামপন্থি লোকদের জন্যও অবতীর্ণ হয়েছে। কবরের সওয়াল-জবাব শুধু ডাক্তার শফিক কিংবা মাওলানা মুমিনুলদের জন্যই থাকবে না। আমাদের চিরসবুজ সেক্যুলার নেতাদেরও একই প্রশ্ন করা হবে। জীবনের মালিক আল্লাহ পাঁচটি প্রশ্নের সুরাহা না করে কাউকেই ছাড়বেন না। এই পাঁচটি প্রশ্নের মধ্যে আমার কাছে মারাত্মক মনে হয় এই প্রশ্নটি, অর্জিত সম্পদ কোন পথে আয় করেছো এবং কোন পথে তা ব্যয় করেছো? কেউ কেউ এটি বলেন, আবার অন্যদিকে সওয়াবে-পাপে কাটাকাটির ফর্মুলা শিখিয়ে দেন। কিন্তু এটা বলেন না যে আল্লাহ নিজের হক মাফ করে দিতে পারেন কিন্তু অন্য বান্দার হক মাফ করবেন না। এই দরকারি মেসেজটি যদি আমাদের সমাজের সব স্তরে পৌঁছে দেওয়া যেত, তাহলে দেশের চুরি-চামারি কমপক্ষে সত্তর ভাগ কমে যেত।

এই অল্পস্বল্প গন্ধ রেখেই শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সংবিধানের শুরুতে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম ঢুকিয়েছিলেন। ধর্মনিরপেক্ষতার বদলে আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস প্রতিস্থাপন করেছিলেন।

সর্বনাশের কথা হলো, নিজের ধর্ম সম্পর্কে কম জানা কিংবা অজ্ঞ থাকাকে গর্বের বিষয় বলে ভাবা হয়।

এই অতিবুদ্ধিমানরা বলেন, আল্লাহ কেন নিজেকে প্রকাশ করেন না। আল্লাহকে চেনার জন্য, জানার জন্য অনেক চিহ্ন (Sign or Clue) দিয়ে রেখেছেন। আকাশের দিকে তাকিয়ে সৃষ্টিরহস্য নিয়ে গবেষণার তাগিদ দিয়েছেন। এমনকি আমরা যে খাবার খাই, সেই খাবার নিয়েও গবেষণা করতে বলেছেন। কোরআনের এসব ক্লু (Clue) একজন রাখাল বালক থেকে শুরু করে মহাকাশ বিজ্ঞানীকেও স্পর্শ করে। রাখাল বালকটি দেখতে পায়, তার গরুটি খাচ্ছে ঘাস কিন্তু বের হচ্ছে গোবর। এটি নিয়ে চিন্তা করে রাখাল বালক তার আল্লাহকে দেখতে পায়। এই ছোট্ট একটি পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে রাখাল বালকটি তার স্রষ্টার অস্তিত্ব অনুভব করে। অর্থাৎ মানব বুদ্ধিমত্তার নানা স্তরকে স্পর্শ করার এই ক্ষমতা জীবন্ত কোরআনের রয়েছে!

একজন বিজ্ঞানী দেখেন, কয়েক কিলোমিটার ব্যাসের একটি গোলককে পৃথিবীবাসী ঘোরাতে পারবে না। অথচ পৃথিবী নিজে—প্রায় ১৩ হাজার কিলোমিটার ব্যাস এবং ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন টন ওজন নিয়ে—প্রতিদিন নিজ অক্ষের চারপাশে ঘুরছে নিখুঁত ভারসাম্যে, আবার সূর্যের চারদিকে পরিক্রমণ করছে। এই সূর্যও কিন্তু স্থির নয়—সে নিজেও ঘুরছে এবং তার সব গ্রহ-উপগ্রহ নিয়ে মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির কেন্দ্রের চারপাশে আবর্তিত হচ্ছে।

এখানেই শেষ নয়। আজকের বিজ্ঞান বলছে, আমরা যে মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে আছি, সেটি তার পুরো সংসার (১০০ থেকে ৪০০ বিলিয়ন সূর্য, কমপক্ষে সমপরিমাণ গ্রহ) নিয়ে ঘণ্টায় ২ মিলিয়ন কিলোমিটার বেগে ঘুরছে। আমাদের পাশের গ্যালাক্সি এন্ড্রুমেডাতে সূর্যের মতো এ রকম এক ট্রিলিয়ন নক্ষত্র রয়েছে। সেটিও একইভাবে ঘুরছে! দৃশ্যমান মহাবিশ্বে আনুমানিক ২ ট্রিলিয়ন গ্যালাক্সি রয়েছে বলে ধারণা করা হয় এবং ১-এর পর ২৪টি শূন্য দিয়ে যে সংখ্যা হয়, ততটি তারকা (নক্ষত্র) রয়েছে।

সংখ্যাটি কেমন, তা আমাদের উপলব্ধিতে টানার জন্য বিজ্ঞানীরা বলেন, সহজ কথায় পৃথিবীর সব সৈকতগুলোয় যতগুলো বালুকণা রয়েছে, স্রষ্টার সৃষ্টিজগতে তারকার (নক্ষত্র) সংখ্যা তার চেয়েও বেশি।

এটি আমার নিজস্ব গবেষণা বা অনুমান যে কোরআনে বর্ণিত সাত আসমানের মধ্যে এ পর্যন্ত মানুষের নলেজে এসেছে তিন আসমান। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল বোধহয় প্রথম আসমান, সৌরমণ্ডল দ্বিতীয় আসমান, গ্যালাক্সি জগৎ তৃতীয় আসমান! একই ধারাবাহিকতায় চতুর্থ, পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম আসমানের অবয়ব কী হতে পারে, তা মানুষের কল্পনাতেও ঢুকতে পারবে না।

এখন প্রশ্ন হলো, যার সৃষ্টিজগৎকেই আমরা সম্যক ভিজুয়ালাইজ করতে পারি না, সেখানে তার স্রষ্টাকে দেখা আমাদের এই চোখ দিয়ে কতটুকু সম্ভব হবে? আল্লাহ কেন আমাদের সম্মুখে আসেন না বা দেখা দেন না—এটিই সবচেয়ে বড় কারণ হতে পারে। আল্লাহ যেখানে তাকে হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে বলেছেন, এই বেকুবের দল তা চোখ দিয়ে দেখতে চায়? মুশকিল হলো, এই বেকুবের দলই নিজেদের সবচেয়ে জ্ঞানী বলে ঠাহর করে!

এমন বিশাল সৃষ্টিজগৎ যিনি সৃষ্টি করেছেন, যিনি ঘূর্ণনের এই নিয়ন্ত্রক শক্তি, তার ওপর বিশ্বাস রাখার চেয়ে যৌক্তিক আর কিছু হতে পারে না। এই মহাশক্তির সঙ্গে যারা নিজেদের অ্যালাইন করে ফেলতে পারে, তাদের অন্য কারোর দরকার নেই। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো, আমাদের সময়ের কিছু কথিত ‘সুশীল’ বা ‘আধুনিক’ শ্রেণি এতটাই আত্মম্ভরিত যে, তারা নিঃসংকোচে বলে ফেলেন—‘There is no God!’

তারা চায়, এই অসীম শক্তির স্রষ্টায় বিশ্বাস করাটাকেই অপরাধ বানাতে। অথচ এরাই হলো মানব ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অপরাধী।

 

লেখক : কলামিস্ট