ভারতের ত্রিপুরার আগরতলায় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের হামলা, পতাকা ছিঁড়ে ফেলা ও দিল্লির আগ্রাসনের প্রতিবাদে ঢাকাসহ সারাদেশ উত্তাল হয়ে উঠেছে। বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে দেশের আমজনতা। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, নাগরিক কমিটি, ছাত্র সংগঠন, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে দিল্লির আগ্রাসনের প্রতিবাদ জানাচ্ছে। এমনকি হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদও দিল্লির আগ্রাসনের প্রতিবাদ জানিয়েছে। তাদের একটাই কথাÑ সার্বভৌমত্বে আঘাত আসলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ করা হবে। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি, জাতীয় নাগরিক কমিটি, জাসদ, এবি পার্টি, জামায়াতে ইসলামী, খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। ঢাকার বাইরে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে।
সমাবেশে বক্তারা বলেছেন, বাংলাদেশের পতিত স্বৈরাচার হাসিনাকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে ভারত। তাদের এ ষড়যন্ত্র কোনো দিনও সফল হতে দেবো না। ভারতের এ ষড়যন্ত্রকে আমরা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধের শামিল বলে মনে করি। আমরা প্রয়োজনে ৫ আগস্টের মতো আবারও রক্ত দেবো, যুদ্ধ করব।
এদিকে, ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচির ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ সিভিল সোসাইটি নামের এক সংগঠন। এ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাস এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, ভারতকে বুঝতে হবে, এটা হাসিনার বাংলাদেশ নয়। সোমবার তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ মন্তব্য করেন তিনি। ওই পোস্টে তিনি বলেন, ‘আজকে ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন তছনছ করা হয়েছে, বাংলাদেশের পতাকায় অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি নামে একটি সংগঠনের সদস্যরা এই ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে। প্রশ্ন করি, এই ঘটনা ‘মুসলিম সংঘর্ষ সমিতি’ নামের কোনো সংগঠন বাংলাদেশে করলে কেমন আক্রমণাত্মক প্রচারণায় মেতে উঠতো ভারত? আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে ভারতের মাটিতে বাংলাদেশের সহকারী হাইকিমশনকে পরিপূর্ণ নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব ভারতীয় সরকারের। তারা এটি করতে ব্যর্থ হয়েছে। এই ব্যর্থতার নিন্দা জানাই।
বাংলাদেশ প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতার মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আসিফ নজরুল। পোস্টে তিনি বলেন, নিন্দা জানাই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতার মন্তব্যের। ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে যা ঘটে, সংখ্যালঘু ও দলিত সম্প্রদায়ের ওপর, এর জন্য বরং উল্টো ভারতের (এবং মমতার) লজ্জিত হওয়া উচিত।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ভারতের উত্তর আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন প্রাঙ্গণে হিন্দু উগ্রবাদীদের আক্রমণের তীব্র নিন্দা জানিয়ে এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি’ নামে সংগঠনের সদস্যরা সহকারী হাইকমিশন প্রাঙ্গণে যে আক্রমণ করেছে তা পূর্বপরিকল্পিত বলে ধারণা করা হয়। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ভারতে সংখ্যালঘুদের ওপর অসংখ্য নির্মমতার ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। সেসব নিয়ে দেশটির কোনো সংকোচ বা অনুশোচনা নেই। কিন্তু বাংলাদেশের বিষয়ে অযাচিত উদ্বেগ-উগ্রতা প্রকাশ করছে, যা সীমা অতিক্রম করেছে। ভারতের ভূমিকা ডাবল স্ট্যান্ডার্ড। বাংলাদেশের জনগণকে চোখ-কান খোলা রেখে সজাগ ও সতর্ক থাকার জন্য আহ্বান জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। দলটি বলছে, জাতীয় ঐক্যই বিদেশি যেকোনো আগ্রাসন রুখে দিতে পারে। ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশন প্রাঙ্গণে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। একই সঙ্গে ভারতীয় রাজনৈতিক নেতাদের দেওয়া বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি অবমাননাকর এবং কূটনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত উসকানিমূলক বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে সংগঠনটি। ভারত সরকারের প্রচ্ছন্ন সহযোগিতায় উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা বাংলাদেশের ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সার্বভৌমত্বকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে নানা অপতৎপরতা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে ছাত্র ফেডারেশন।
গত সোমবার আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা, ভাঙচুর ও জাতীয় পতাকা নামিয়ে ছিঁড়ে ফেলে উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের সমর্থকরা। এতে নিরাপত্তাজনিত কারণে কমিশনের কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সরকার। এর আগে আগরতলায় সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনায় কড়া প্রতিবাদ জানায় ঢাকা। এ ছাড়া হাইকমিশনে হামলার ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে আগরতলাসহ ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশের সব মিশনের নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে নোট পাঠায় বাংলাদেশ। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল মঙ্গলবার ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে জরুরি তলব করে সরকার।
স্বৈরাচারী হাসিনার পতনের পর থেকে প্রায় চার মাস ধরে বিভিন্ন ইস্যুতে ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কে টানাপড়েন চলে আসছিল। ভারত বিভিন্ন কায়দায় বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ করার জন্য একের পর এক ষড়যন্ত্র করে আসছে। সর্বশেষ চট্টগ্রামে ইসকন নেতা চিন্ময় দাসকে গ্রেফতারের ঘটনায় উগ্রবাদী হিন্দুরা আদালত চত্বরে একজন সরকারি আইনজীবীকে নৃশংসভাবে হত্যা করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মাধ্যমে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার অপচেষ্টা চালায়। এখন এই ইস্যুতে ভারত কলকাতা ও আগরতলায় বাংলাদেশ মিশনে হামলা ও পতাকা পোড়ানোর ঘটনা ঘটায়।
চিন্ময় দাসকে গ্রেফতারের পর প্রথমে ভারতের পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দেওয়া হয়। সেই বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনায় অপরাধীরা যেখানে ধরাছোঁয়ার বাইরে সেখানে একজন ধর্মীয় নেতা এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে যখন কথা বলেছেন, তার বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ এনে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাল্টা বিবৃতি দিয়ে বলে, ভারতের এ ধরনের ভিত্তিহীন বিবৃতি শুধু ভুল তথ্য ছড়ানো নয়, বরং দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বন্ধুত্ব ও বোঝাপড়ার চেতনার পরিপন্থি।
এরপর গত ২৮ নভেম্বর কলকাতায় বাংলাদেশ মিশনের সামনে বঙ্গীয় হিন্দু জাগরণ নামে একটি উগ্রবাদী সংগঠন বিক্ষোভ সমাবেশ করে। সমাবেশের ব্যারিকেড ভেঙে মিশনে হামলার চেষ্টা চালায় ও বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা পোড়ায়। এ ছাড়া বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কুশপুত্তলিকা পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনার পরদিন ২৯ নভেম্বর ঢাকা বিবৃতি দিয়ে কড়া প্রতিবাদ ও নিন্দা জানায়। বিবৃতিতে ভারতের সব বাংলাদেশ মিশনের নিরাপত্তার আহ্বান জানানো হয়।
এরপর গত ২ ডিসেম্বর আগরতলার বাংলাদেশ মিশনের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ ডাকে উগ্রবাদী সংগঠন হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি। সংগঠনের সদস্যরা ব্যারিকেড ভেঙে মিশনে হামলা চালায় এবং বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননা করে। ঘটনার প্রেক্ষিতে ভারত সরকার দুঃখ প্রকাশ করেছে। তবে বাংলাদেশ সরকার এ ঘটনার কড়া প্রতিবাদ জানিয়ে যথাযথ তদন্ত দাবি করেছে। এ ছাড়া চলমান ঘটনার প্রেক্ষিতে ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
সংখ্যালঘু ইস্যু নিয়ে যখন দুই দেশের মধ্যে টানাপোড়েন চলে আসছিল, এরমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর আহ্বান জানান। এ নিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিবিদরাও অসন্তোষ জানিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে বিভিন্ন সময়ে বলে আসছেন প্রধান উপদেষ্টা, পররাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ বিভিন্ন উপদেষ্টাগণ। সংখ্যালঘুদের নিয়ে যেন কোনোভাবেই বিভ্রান্তি না ছড়ায়, সে বিষয়ে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করতে গত সোমবার বিকেলে ঢাকাস্থ বিদেশি কূটনীতিকদের ডেকে ব্রিফ করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। তবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা যখন ঢাকার বিদেশি কূটনীতিকদের ব্রিফ করছিলেন, ঠিক তখনই আগরতলায় বাংলাদেশ মিশনে হামলার ঘটনা ঘটছিল।
বিএনপির বিক্ষোভ
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনে হামলা, পতাকা ছিঁড়ে ফেলা ও দিল্লির আগ্রাসনের প্রতিবাদে ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি।
প্রতিবাদী এই মিছিলে ‘দিল্লি না ঢাকা? ঢাকা, ঢাকা’, ‘ভারতীয় আগ্রাসন ভেঙে দাও, ভেঙে দাও’, ‘ভারতের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘দিল্লির আগ্রাসন, রুখে দাও জনগণ’, ‘বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনে হামলা কেন? নরেন্দ্র মোদি জবাব চাই’, ‘ইসকনের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’-সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন নেতাকর্মীরা।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে দলটি। এর আগে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সামনে থেকে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে নাইটিঙ্গেল মোড় ঘুরে আবার কার্যালয়ের নিচে গিয়ে শেষ হয়।
সংক্ষিপ্ত বিক্ষোভ সমাবেশে রিজভী বলেন, পতিত স্বৈরাচার হাসিনাকে প্রত্যাবাসনের জন্য ভারতের নরেন্দ্র মোদি সকল ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।
তিনি ভারতীয় গণমাধ্যমের সমালোচনা করে বলেন, শেখ হাসিনা গুম-খুন করেছে, এর জন্য তো কোনোদিন কথা বলেনি। শেখ হাসিনা বিতাড়িত হওয়ায় পর এদেশের মানুষ আনন্দে আছে, স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারছে। কিন্তু দিল্লি তার ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। ভারতের আগ্রাসনবিরোধী এই মিছিলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন, যুবদলের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির, সহ-সভাপতি রেহেনা আক্তার শিরীন, ডা. তৌহিদুর রহমান আউয়াল, দফতর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমসহ বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ে হাজারো নেতাকর্মী অংশ নেন।
জাতীয় নাগরিক কমিটির বিক্ষোভ কর্মসূচি
ভারতের ত্রিপুরার আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। এসময় আন্দোলনকারীরা বলেন, ভারতের ত্রিপুরার আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা হামলা করেছে। এটা আমাদের সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন। বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বে কোনো আঘাত আসলে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলবো।
সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবীদের মানববন্ধন
ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে নজিরবিহীন হামলার প্রতিবাদে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিতে মানববন্ধন করেছেন আইনজীবীরা। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সাধারণ আইনজীবীরা এ মানববন্ধন করেন।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে অংশ নিয়ে আগরতলায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে হামলা ও বাংলাদেশের জাতীয় পতাকায় আগুন দেওয়ার প্রতিবাদ জানান আইনজীবীরা।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন আইনজীবী আবেদ রাজা, তৈমূর আলম খন্দকার, শাহ আহমেদ বাদল, আশরাফুজ্জামান, সাবেক জেলা জজ শহিদুল ইসলাম, জিয়াউর রহমান, রফিকুল হক তালুকদার রাজা, মতিলাল ব্যাপারী ও পারভেজ হোসেন প্রমুখ।
প্রতিবাদে উত্তাল ঢাবি
ভারতের আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশন প্রাঙ্গণে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা।
গত সোমবার রাত সোয়া ৯টার দিকে ঢাবির শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এরপর একটি মিছিল বের করা হয়। এ সময় বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিলে যোগ দেন। পরে মিছিলটি ভিসি চত্বর হয়ে পুনরায় রাজু ভাস্কর্যের সামনে এক সমাবেশে মিলিত হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, ভারত আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ। তাদের সঙ্গে আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক থাকবে, প্রতিবেশী হিসেবে ভালো সম্পর্ক থাকবে। কিন্তু কোনোভাবেই তাদের সঙ্গে আমাদের রাজা-প্রজার সম্পর্ক হতে পারে না। ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশের হাইকমিশনে হামলার জন্য অবশ্যই ভারতকে ক্ষমা চাইতে হবে।
জাবিতে মশাল মিছিল
ভারতের ত্রিপুরার আগরতলায় বাংলাদেশি দূতাবাসে হামলা ও জাতীয় পতাকা অবমাননার প্রতিবাদে মশাল মিছিল করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রগতিশীল শিক্ষার্থীরা। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে মশাল মিছিল বের করেন তারা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি সড়ক ঘুরে বটতলা এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। এরপর সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।
মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘দূতাবাসে হামলা কেন, নরেন্দ্র মোদি জবাব দে’, ‘আমার মাটি আমার মা, ধ্বংস হতে দেব না’ ‘ভারতীয় আগ্রাসন, রুখে দাঁড়াও জনগণ’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
আগরতলায় বাংলাদেশ মিশনে হামলার মাধ্যমে ভারত বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের উপর আঘাত হেনেছে। এ হামলার জন্য ভারতকে নি:শর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। হাইকমিশনে হামলা করে বাংলাদেশের ওপর যুদ্ধ বাধানোর চক্রান্ত করছে ভারত। হামলার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। অন্যথায় বাংলাদেশের জনগণ এর দাঁত ভাঙ্গা জবাব দিবে। তিনি বলেন, নরেন্দ্র মোদি পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। ফ্যাসিস্ট হাসিনার ষড়যন্ত্র ও ভারতের আধিপত্যবাদী আগ্রাসন মোকাবেলায় বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। ভারতের আগ্রাসন মোকাবেলায় বাংলাদেশের মানুষ জীবন দিতে প্রস্তুত রয়েছে। ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশ উপহাইকমিশনে উগ্রবাদীদের বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে বিভিন্ন ইসলামী দলের বিক্ষোভ সমাবেশে ও বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ : ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেছেন, ভারত তাদের স্বার্থে আঘাত লাগায় বাংলাদেশের উপর ক্ষেপে গেছে। বিগত ১৬ বছরে ফ্যাসিস্ট হাসিনা ভারতের স্বার্থে সবকিছু করে বাংলাদেশকে গিলে খাওয়ার ক্ষেত্র তৈরি করে দিয়েছিল। দেশ ভারতের রাহু মুক্ত হয়েছে। ভারতের ইচ্ছা ও অভিপ্রায়ে এখন আর কিছু হচ্ছে না। তাই ভারতের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। এখন পায়ে পারা দিয়ে যুদ্ধ বাধানোর চেষ্টা করছে। উগ্রবাদী ইসকনকে দিয়ে সরকারি আইনজীবীকে হত্যা করে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় এখন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিভিন্নভাবে উস্কানি দিচ্ছে। ভারতের বিভিন্ন হাইকমিশন, উপ-হাইকমিশনে হামলা ও পতাকা ছিঁড়ে চরম অসভ্যতার পরিচয় দিয়েছে। মাওলানা ইউনুছ আহমাদ আন্তর্জাতিক আইন এবং ভিয়েনা কনভেনশনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশের সব কূটনৈতিক মিশন ও কূটনৈতিকদের নিরাপত্তা বিধান করার জন্য ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, মুসলমানদের হত্যা করে দেশে হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা সৃষ্টি করে দেশে গৃহযুদ্ধ লাগাতে বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করছে ভারত। কিন্তু মুসলমানরা হিন্দুদের মত অসভ্য নয়। তারা অত্যন্ত ধৈর্যশীলতার পরিচয় দিয়েছে। মুসলমানরা ক্ষেপে গেলে জালিমদের রক্ষা হবে না।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশ উপহাইকমিশনে হামলা ও বাংলাদেশ বিরোধী ভারতীয় উস্কানির প্রতিবাদে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের উদ্যোগে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সংগঠনের ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, দলের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম, মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মাওলানা আরফিুল ইসলাম, ডা. শহিদুল ইসলাম, মুফতি হাফিজুল হক ফাইয়াজ, মাওলানা কেএম শরীয়াতুল্লাহ ও উত্তর মুফতি ফরিদুল ইসলাম।
মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, কলকাতা ও আগরতলায় ভারতের সরকার দলীয় উগ্র কর্মীরা বাংলাদেশ উপহাইকমিশনে হামলা করে দেশে যুদ্ধ চাপিয়ে দিতে চাচ্ছে। বিগত ১৬ বছরে ভারতের অভিপ্রায়ে শেখ হাসিনা দেশ পরিচালনা করেছিল। হাসিনা জনতার আন্দোলনে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়ে ভারতে আশ্রয় নেয়। খুনি হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ করেছে ভারত। তিনি বলেন, প্রতিনিয়ত ভারতের মিডিয়াগুলো বাংলাদেশের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক নিউজ প্রচার করছে। ভারত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। তিনি বলেন, আমরা ভারতকে ভয় করিনা। এদেশে ১৬ কোটি যোদ্ধা ভারতের চক্রান্ত রুখে দিতে প্রস্তুত। ভারতের মদদে ইসকন নেতা চিন্ময় দাস বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চক্রান্তে লিপ্ত। পরে একটি বিশাল মিছিল বায়তুল মোকাররম উত্তর গেট থেকে বের হয়ে পল্টন মোড় হয়ে বিজয়নগর ঘুরে পুনরায় পুরানা পল্টন মোড়ে এসে সমাপ্ত হয়। মিছিলে ভারতের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শ্লোগান দেয় বিক্ষোভকারীরা।
খেলাফত মজলিস : খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমীর মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী বলেছেন, আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে উগ্রবাদীদের হামলার সুযোগ করে দিয়ে ভারত ভিয়েনা কনভেনশন লঙ্ঘন করেছে। বাংলাদেশ মিশনে হামলার মাধ্যমে ভারত বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের উপর আঘাত হেনেছে। এ হামলার জন্য ভারতকে নি:শর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। হামলার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। অন্যথায় বাংলাদেশের জনগণ এর দাঁত ভাঙ্গা জবাব দিবে। তিনি বলেন, নরেন্দ্র মোদি পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। ফ্যাসিস্ট হাসিনার ষড়যন্ত্র ও ভারতের আধিপত্যবাদী আগ্রাসন মোকাবেলায় বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। ভারতের আগ্রাসন মোকাবেলায় বাংলাদেশের মানুষ জীবন দিতে প্রস্তুত রয়েছে। আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে ভারতীয় উগ্রবাদীদের হামলার প্রতিবাদে গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ সভাপতি অধ্যাপক মাওলানা আজীজুল হকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ড. মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সল, অধ্যাপক মো. আবদুল জলিল, অধ্যাপক কাজী মিনহাজুল আলম, তাওহিদুল ইসলাম তুহিন, অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শায়খুল ইসলাম, কে এম ইমরান হুসাইন, এইচ এম এরশাদ, অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম, মাওলানা ফরিদ আহমদ হেলালী, মাওলানা শরীফুল ইসলাম। সমাবেশ শেষে বিক্ষুব্ধ জনতার এক বিক্ষোভ মিছিল জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে শুরু হয়ে পল্টন মোড় ঘুরে পুরানা পল্টন মসজিদ সংলগ্ন বিজয়নগর সড়কে গিয়ে শেষ হয়।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ : জমিয়তে উলামায়ে বাংলাদেশের সভাপতি মাওলানা শায়খ জিয়া উদ্দীন ও মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী আগরতলাস্থ বাংলাদেশে হাইকমিশনে হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলছেন, এই অসভ্য আচরণের দায় ভারত সরকারকেই নিতে হবে। ভারতের উগ্রবাদী হিন্দুরা একের পর এক এ রকম ঘটনা ঘটিয়ে মূলত বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সংঘাত সৃষ্টি করতে চায়। জমিয়ত নেতৃদ্বয় আরো বলেছেন,ঘটনার পূর্বাপর বিশ্লেষণ করলে এ কথা বলা খুবই স্বাভাবিক যে, ভারত সরকারের মদদপুষ্টরাই এ সব করছে। অন্যথায় প্রতিবেশী একটা রাষ্ট্রের কূটনৈতিক মিশন আক্রান্ত হবে কেন? ভারতীয় বিভিন্ন সংবাদ মধ্যমও নির্লজ্জ ভাবে বাংলাদেশ নিয়ে অবিরত বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে। এহেন পরিস্থিতিতে দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে জাতীয় ঐক্য অপরিহার্য বলে আমরা মনে করি। এ দেশের মানুষ আর যাই হোক ভারতীয় যে কোন চক্রান্ত রুখে দিতে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকবে ইনশাআল্লাহ।
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন : ভারতীয় উগ্র হিন্দুত্ববাদী হিন্দু সমিতি কর্তৃক কলকাতা ও আগরতলায় বাংলাদেশ উপ-হাই কমিশনে হামলা ও স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী। তিনি বলেন,কূটনৈতিক শিষ্টাচার ও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে একটি স্বাধীন দেশের জাতীয় পতাকা ও প্রধান উপদেষ্টার কুশপুত্তলিকা পোড়ানোর ঘটনা দেশের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে হুমকিস্বরূপ। অবিলম্বে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং এজন্য ভারত সরকারকে বাংলাদেশের কাছে প্রকাশ্য ক্ষমা চাইতে হবে। সংখ্যালঘুদের রক্ষায় বাংলাদেশে ভারতীয় শান্তি রক্ষী বাহিনী পাঠানোতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর দাবিকে হাস্যকর আখ্যায়িত করে মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী বলেন,পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা অনেক নিরাপদ জীবন যাপন করছে।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস : ভারতের একটি উগ্রবাদী সংগঠনের অনুসারীরা ত্রিপুরার আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে পতাকা পুড়ানো ও হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমীর শায়খুল হাদীস আল্লামা ইসমাঈল নুরপুরী ও মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক। এক বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেছেন, ভারত বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের ষড়যন্ত্র করছে। দূতাবাসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন থাকতে কিভাবে একটি উগ্রবাদী সংগঠনের অনুসারীরা ত্রিপুরার আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে ঢুকে পতাকা পুড়িয়েছে এবং কর্মকর্তাদের পিটিয়েছে। তা আমাদের বোধগম্য নয়। দূতাবাসে হামলার মাধ্যমে ভারত বাংলাদেশের জনগণের উপর হামলা করেছে। এ হামলার সাথে জড়িতদের দ্রুত বিচার করতে হবে।
নেতৃদ্বয় ‘ভারতের পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বাংলাদেশের সম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে এখানে জাতিসংঘের শান্তি বাহিনী পাঠানোর প্রস্তাব করেছেন পশ্চিমবঙ্গের বিধান সভার শীতকালীন অধিবেশনে। প্রতিবেশী দেশের একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে এই ধরনের প্রস্তাব উস্কানিমূলক ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ববিরোধী। এটি একটি স্বাধীন দেশের ওপর সরাসরি হস্তক্ষেপের হুমকি। এসব উসকানিমূলক সহিংস তৎপরতার দায়দায়িত্ব নরেন্দ্র মোদির সরকারকে বহন করতে হবে।
বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের পর থেকেই আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি ভারত সরকার ও কায়েমী স্বার্থবাদী মিডিয়া নানা ধরনের উষ্কানি তৈরি করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে নানাভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করতে তারা চরম মিথ্যাচারের আশ্রয় নিচ্ছে।
বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট : ভারতের উগ্রবাদী কয়েকজন নেতার উস্কানি ও উগ্রবাদী মিডিয়া অতিরঞ্জিত সংবাদ প্রকাশ করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়িয়ে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের লেলিয়া দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট। গতকাল মঙ্গলবার একযুক্ত বিবৃতিতে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট চেয়ারম্যান আল্লামা এম এ মতিন ও মহাসচিব প্রিন্সিপাল স.উ.ম আবদুস সামাদ ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলা ও বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ভারতে নিয়মিত উগ্রবাদী গোষ্ঠি সংখ্যালঘু মুসলমানদের উপর নিপীড়ন করে আসছে। অথচ বাংলাদেশের বিচ্ছিন্ন ঘটনা নিয়ে তারা তুলকালামকাণ্ড ঘটাচ্ছে। আজমীর শরীফ নিয়ে আদালতের হটকারিতা ও সামভাল জামে মসজিদে ৩ জন মুসল্লিকে হত্যা নিয়ে ভারতীয় উগ্র-সন্ত্রাসীদের অপতৎপরতা সর্বজনজ্ঞাত। কিন্তু তাদের এহেন অপকর্মে বাংলাদেশ নাক গলায়নি। আমরা মনে করছি, ক্ষমতাধর উগ্রবাদী গোষ্ঠির প্রচ্ছন্ন সহযোগিতায় বাংলাদেশের ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সার্বভৌমত্বকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে নানা অপতৎপরতা চালানো হচ্ছে। সম্প্রতি চট্টগ্রামকে ভারতের অংশ করার নীলনকশাও দৃশ্যমান হয়েছে। নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ভিয়েনা কনভেনশন অনুসারে ভারত সরকার বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাধ্য। তাই এ ব্যাপারে ড.ইউনুসের অন্তবর্তী সরকারকে আরো কঠোর ভূমিকা নিতে হবে।
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন (আবু জাফর) ঃ বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মুফতি ফখরুল ইসলাম ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে উগ্রবাদী সন্ত্রাসীদের বর্বরোচিত হামলায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে গতকাল এক বিবৃতিতে বলেছেন, বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনে হামলা চালানোর সুযোগ দিয়ে ভারত বিশ্ব সন্ত্রাসী ইসরাইলের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। আন্তর্জাতিক রীতিনীতি লঙ্ঘন করে ভারত ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছে। ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনাকে পুর্নবাসনে মোদি সরকার যে সব ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পা দিচ্ছে তাতে ভারত গোটা বিশ্ব থেকে বিচ্ছন্ন হয়ে পড়বে। তিনি বলেন, সাম্রাজ্যবাদী ভারতকে মনে রাখতে হবে স্বাধীন বাংলাদেশ কারো পুতুল নয়। তিনি বাংলাদেশি মিশনে হামলা এবং কূটনৈতিকদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় ভারতকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানান।
হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিবাদ
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশ দূতাবাসে হামলা ও জাতীয় পতাকার অবমাননার ঘটনায় তীব্র নিন্দা, ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়েছে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। এ ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত, দুর্ভাগ্যজনক ও নিন্দনীয় বলেও উল্লেখ করে সংগঠনটি। গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিবৃতিতে ঐক্য পরিষদ বলেছে, বিশ্বের প্রতিটি দেশের জাতীয় পতাকার প্রতি সম্মান প্রদর্শন যেকোনো দেশের নাগরিকের পবিত্র দায়িত্ব। এর কোনো ধরনের অবমাননা সে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে ক্ষুণ্ন করার শামিল। কোনো দেশের পতাকা নিয়ে এহেন কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকা যেকোনো দেশের নাগরিকের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বার্থে অত্যাবশ্যক।
বিবৃতিতে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকার ও মহাসচিব এস এন তরুণ দে এরুপ ন্যাক্কার জনক ঘটনার তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও উদ্বেগ জানিয়েছেন। একই সঙ্গে এ ঘটনার সাথে জড়িত দোষীদের দ্রুত শাস্তির দাবি করেছেন। এ ঘটনায় বাংলাদেশের শান্তি প্রিয় মানুষকে ধৈর্ষ ধরান করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।
বরিশাল ব্যুরো জানায়, ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশন অফিসে হামলাসহ পরিকল্পিত ভারতীয় আগ্রাসনের পাশাপাশি গণমাধ্যমের অপপ্রচারের প্রতিবাদে গত সোমবার গভীর রাতে বরিশাল বিশ^বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সর্বস্তরের ছাত্র-ছাত্রীরা বিক্ষোভ প্রদর্শনসহ প্রতিবাদ সভা করেছে। উগ্র ভারতীয়দের হামলার এ ঘটনাকে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-ছাত্রীরা কূটনৈতিক শিষ্টাচারসহ মানবধিকারের চরম লঙ্ঘন বলে তার নিন্দা জানান। সমাবেশে ছাত্র নেতৃবৃন্দ গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানকে ভারত সরকার মেনে নিতে পারেনি বলেও উল্লেখ করেন।
গভীর রাতে বিভিন্ন হল থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে ভিসির বাসভবন এলাকা হয়ে ক্যম্পাসের বাইরে বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা/বরিশাল-ভোলা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে বিশ^বিদ্যালয়ের গ্রাউন্ড ফ্লোরে প্রতিবাদ সমাবেশের মাধমে শেষ হয়।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন ৫ আগস্ট বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পরে ভারত সরকার ও কতিপয় গণমাধ্যম নানামুখী অপপ্রচার শুরু করে সে দেশের জনগণের মাঝে বাংলাদেশ বিরোধী মনোভাব তৈরি করে চলেছে। তারা বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত নির্যাতনের কল্প কাহিনী তৈরি করে সে দেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করছে বলেও অভিযোগ করেন ছাত্র নেতৃবৃন্দ। এমনকি দেশে ও বিদেশে যারা বাংলাদেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র করছে তাদেরকেও প্রত্যক্ষ ও পরক্ষোভাবে উৎসাহিত করছে ভারতীয় কতিপয় গণমাধ্যমসহ দায়িত্বশীল মহল। ছাত্র নেতৃবৃন্দ কেন দল বা ব্যক্তি নয়, বাংলাদেশের আপমর জনগণের মনোভাবকে সম্মান দেখানোর জন্য ভারত সরকার ও গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানানোর পাশাপাশি ভারতীয় গণমাধ্যমকে বাংলাদেশে স্বাগত জানান হবে বলেও উল্লেখ করেন।
স্টাফ রিপোর্টার, রংপুর থেকে জানান, ভারতের ত্রিপুরায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলা ও বাংলাদেশের পতাকা পোড়ানোর প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির ব্যানারে রংপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। সমাবেশ থেকে ভারতীয় পণ্য ও ভারতীয় মিডিয়া বর্জনের ডাক দিয়েছেন তারা। পাশাপাশি ভারত ষড়যন্ত্র বন্ধ না করলে বাংলাদেশের সব ভারতীয় দূতাবাস বন্ধ করে দেওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা। গত সোমবার রাতে প্রেসক্লাবের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর জেলা ও মহানগর কমিটি এবং বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে ভারতকে এ হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। এর আগে বিক্ষোভ মিছিলটি নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে রংপুর প্রেসক্লাব চত্বরে এসে সমাবেশ করে। এতে বক্তব্য দেন জাতীয় নাগরিক কমিটি রংপুরের সদস্য সচিব আলমগীর নয়ন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জেলা আহ্বায়ক ইমরান হোসেন, মহানগরের আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহমেদ ইমতি, জেলা সদস্য সচিব ডা. আসফাক আহমেদ জামিল, মহানগর সদস্য সচিব রহমত, জেলা মুখপাত্র ইয়াসির আরাফাত, মহানগর মুখপাত্র নাহিদ হাসান খন্দকারসহ প্রমুখ। এছাড়া রাত ১০ টায় নগরীর পার্কের মোড়-সংলগ্ন শহীদ আবু সাঈদ চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি পার্কের মোড় থেকে মডার্ন মোড় হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে এসে শেষ হয়।
নোয়াখালী জেলা সংবাদদাতা জানান, নোয়াখালীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা। আগরতলায় বাংলাদেশ হাইকমিশনসহ দেশের বিভিন্ন সীমান্তে ভারতীয় উগ্রবাদী জঙ্গীগোষ্ঠির হামলার প্রতিবাদে এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে মাইজদী পৌর বাজার থেকে শুরু করে মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এতে নেতৃত্বে দেন জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম হায়দার বিএসসি।
পরে এক সমাবেশে তিনি বলেন, স্বাধীন বাংলাদশের জনগণকে অনিরাপদ করার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত পতিত শেখ হাসিনা ও তার ভারতীয় জঙ্গী দোসররা। তাদের এসব দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে দেশ রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে বিএনপি নেতাকর্মীদের। আমরা সেই কাজে সর্বদা প্রস্তুত আছি।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি গিয়াস উদ্দিন সেলিম, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক লিয়াকত আলী খান, সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম কিরণ, দফতর সম্পাদক ওমর ফারুক টপি, জেলা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট শাহাদৎ হোসেন, সদর উপজেলা বিএনপি সভাপতি সলিমুল্যাহ বাহার হিরণ প্রমুখ।
ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, ভারতের ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশ সরকারি হাইকমিশন অফিসে হামলার প্রতিবাদে ফরিদপুর জেলা বিএনপি ও সকল অঙ্গদলের নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে জেলা শহর এক বিশাল মিছিলও প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার শেষ বিকেলে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ফরিদপুর প্রেসক্লাব থেকে শুরু করে শহর পদ দক্ষিণ শেষে, জনতা ব্যাংকের মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন ফরিদপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মুদাররেস আলী ঈসা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আফজাল হোসেন খান পলাশ, যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ জুলফিকার হোসেন জুয়েল, যুগ্ম-আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন, বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট আলী আশরাফ নান্নু, যুবদলের সভাপতি রাজিব হোসেন সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেনসহ বিএনপির অন্যান্য অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী। এ সময় বক্তারা বলেন, খুনি ও ফ্যাসিস্ট হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে মোদির সাথে মিলে দেশে অরাজকতা পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক সম্প্রীতির এই দেশে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা বাধানোর জন্য উস্কানি দিচ্ছে। হাসিনা ভারতে বসে দেশকে ভারতের অঙ্গরাজ্যে পরিণত করার ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি দেশের জনগণকে সাথে নিয়ে তাদের এই ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র রুখে দেবে। ভারতের ত্রিপুরার রাজধানী আগড়তলাসহ সমগ্র ভারতে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননা করা হচ্ছে, এই অপমান দেশের মানুষ মেনে নেবে না। প্রয়োজনে ভারতের সাথে সব সম্পর্ক ছিন্ন করা হবে। এদেশে কোনো ভাবেই আর ভারতের আগ্রাসন মেনে নেয়া হবে না। এর আগে বিভিন্ন স্থান থেকে নেতাকর্মী উক্ত বিক্ষোভ মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশে অংশগ্রহণ করে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন