Image description

সবাই ধরে নিয়েছিল এবার বিএনপি ক্ষমতায় আসবে, জামাত হবে প্রধান বিরোধী দল। জামাতের তাতে কোন আপত্তি ছিল বলে মনে হয় না, কারণ এতে তারা ইন্টেরিম গভমেন্ট এবং বিএনপি গভমেন্টের বছর কয়েক প্রস্তুতির সময় পাবে, লোক তৈরির সময় পাবে আওয়ামী নির্যাতনের ক্ষত সারিয়ে তুলতে পারবে এবং এর পরের নির্বাচনে তারা বিপুল ভোটে জয়লাভ করতে পারবে।

কিন্তু এই ক্যালকুলেশন আপনার আমার আগে ভারত করে বসে আছে। সঙ্গে সঙ্গে রয়ের এজেন্টরা বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে তাদের অতীত রেকর্ড দেখিয়ে দিল। এসব রেকর্ডে ইহুদী লবির সঙ্গে মিটিং এর ছবি, নারীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ছবি, আওয়ামী নেতৃবৃন্দ এবং ভারতীয় রয়ের এজেন্টদের সঙ্গে বসে মদ্যপানের ছবি আরো অনেক রকমের গোপন ছবি ও ভিডিও তাদের কাছে আছে। আছে অজস্র অডিও কল রেকর্ড। এসব ব্ল্যাকমেইলিং এর শিকার হয়ে বিএনপি নেতৃবৃন্দ রাতারাতি বদলে ফেললেন মতামত। এবার ভারতের এজেন্ডাই হয়ে উঠলো বিএনপির এজেন্ডা।
ভারত চায় জামাত যেন প্রধান বিরোধী দলও হতে না পারে। কারণ জামাত যদি এবার প্রধান বিরোধী দল হয় আগামীবার নিশ্চিত তারা সরকার গঠন করবে।
রয়েল এজেন্টেবার প্রচারণা শুরু করলো জামাতের বিরুদ্ধে কিন্তু তাদের হাতে যেহেতু কোন অডিও কল রেকর্ড ভিডিও নাই তাই ওই সেই ৭১ এর রেকর্ড বাজাতে শুরু করল। এই ভাঙা রেকর্ড অবশ্য কেউ কেউ কানে তুলল বিশেষ করে নিজেকে সুশীল প্রমাণ করতে সচেষ্ট একদল তরুণ এবং মিডিয়াকর্মী এই প্রচেষ্টায় অংশ নিলো।

কিন্তু এখন ঘটনা ঘুরতে শুরু করেছে অন্যদিকে। জামাত-কে আর প্রধান বিরোধী দল নয় বরং সরকারি দল হিসেবে দেখতে চায় জনগণ।

আচ্ছা বিএনপি তো জানে তাদের জনসমর্থন আছে তাহলে তারা কেন আবার সেই ভারতের মেকানিজমে প্রবেশ করলো, ফাঁদে পা দিল?
মাহমুদুর রহমানের আজীবন প্রাণান্তকর চেষ্টা ছিল বিএনপিকে ভারতের ফাঁদ থেকে বাঁচানো এবং বাংলাদেশের জনগণের ওপর আস্থা রাখার জন্য। খোদ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পর্যন্ত তিনি নসিহত করেছেন। কেন বিএনপি বারবার ক্ষমতায় আসার জন্য ভারতের ওপর নির্ভর করবে? কেন তারা জনগণের উপর আস্থা রাখতে চায় না?

কারণ বিএনপি'র একটি বড় অংশ শীর্ষ নেতৃত্বের বড় অংশই ভারতপন্থী।

বিএনপি'র এই ভারতপন্থী অংশ ভারতপন্থী আওয়ামী লীগের তুলনায় কম হিংস্র নয়। আওয়ামী লীগে ভারতপন্থীদের দুইটা গ্রুপ ছিল, এক গ্রুপে ছিল পঞ্চপান্ডব, এই গ্রুপ এতটাই হিংস্র ছিল যে ভারতের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য তারা শেখ হাসিনাকেও কুরবানী দিতে প্রস্তুত। আরেকটা ভারতপন্থী গ্রুপ ছিল হাসিনা কেন্দ্রিক, তারা ভারতের জন্য নিজেদের শাড়ি শরীর এবং গোটা বাংলাদেশটাকে তুলে দিতে প্রস্তুত।
বাংলাদেশের পদ্মা সেতু ট্রানজিট রেলপথ সীমানা ইলিশ মাছ আইটি সেক্টর ব্যাংকিং খাত সবকিছু ভারত নির্ভর করে ভারতের স্বার্থসংশ্লিষ্ট করে সাজানো হয়েছে। আর ভারত তাদের সেই স্বার্থ রক্ষার জন্য আওয়ামী লীগের পতনের পর বিএনপির উপর সওয়ার হয়েছে। বিএনপি'র এখন প্রতিটি কথাই রয়ের কথা আওয়ামী লীগের কথা, এতদিন আওয়ামী লীগ যা যা বলেছে, বিএনপি এখন থেকে ঠিক তাই তাই বলবে।

বিএনপির এখন প্রধান শত্রু ধর্ম, বিএনপি'র এখন প্রধান শত্রু ইসলাম, বিএনপি'র এখন প্রধান শত্রু জামাত ইসলাম, বিএনপি'র এখন প্রধান হাতিয়ার ১৯৭১ বিএনপির এখন প্রধান সম্পদ সংবিধান বিএনপির এখন প্রধান সম্পদ রাষ্ট্রপতি বিএনপির এখন প্রধান টার্গেট নির্বাচন।

জনগণ যে স্বপ্ন নিয়ে ৫ ই আগস্ট বাংলাদেশকে ভারতীয় তাঁবেদার মুক্ত করেছে সেই তাঁবেদারি আবার বাংলাদেশকে ঘিরে ধরে রেখেছে।

এই মুহূর্তে উচিত সরকারের অন্তত পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকা। কম হলেও চার বছর। যাতে এমন কিছু সংস্কার হয় যাতে এমনভাবে পুরো পরিস্থিতি বদলে যায় যাতে বাংলাদেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো, বিচার বিভাগ, আইন আদালত, পুলিশ প্রশাসন, নির্বাচন ব্যবস্থা, সংসদ ব্যবস্থাকে আর কেউ কোন ভিনদেশী রাষ্ট্র চাইলেও নিজেদের মতো করে পরিচালনা করতে না পারে।

বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনে কোন অবস্থাতেই ভারতীয় তাঁবেদাররা সুবিধা করতে পারবে না ইনশাআল্লাহ।