বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বাধীন ১১ দলীয় জোটের প্রায় ৬০০ প্রার্থী ৩০০ আসনের বিপরীতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। আর চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ একাই ২৭২টি আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে বলে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
নির্ভরযোগ্য সূত্রের মতে, জামায়াত ১১০ আসন ছাড়ছে শরিকদের জন্য। এর মধ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ৩৫, এনসিপি ৩০, খেলাফত মজলিস ১৫, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ১০, এলডিপি ৩, লেবার পার্টি ৩, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি (বিডিপি) ২, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) ৩, খেলাফত আন্দোলন ৪ এবং নেজামে ইসলাম পার্টি ২টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ রোববার রাতে জানিয়েছে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষদিনে তারা ২৭২টি আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছে। শীর্ষ নেতাদের মধ্যে সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম, শায়েখে চরমোনাই বরিশাল-৫ ও ৬, নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুল আউয়াল খুলনা-৩, প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী ঢাকা-৪, মহাসচিব মাওলানা ইউনুস আহমদ খুলনা-৪, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান গাজীপুর-৫, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম কুমিল্লা-২, অধ্যক্ষ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ ঢাকা-১১, সহকারী মহাসচিব কেএম আতিকুর রহমান মুন্সীগঞ্জ-১, মাওলানা আহমদ আব্দুল কাইয়ুম কুমিল্লা-৩, সৈয়দ এসহাক মুহাম্মাদ আবুল খায়ের বরিশাল-৪ এবং সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ ইফতেখার তারিক ঢাকা-৯ সংসদীয় আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। একই সঙ্গে আসন সমঝোতার আলোচনা অব্যাহত রয়েছে বলে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব ও মিডিয়া সেলের প্রধান মুশফিক উস সালেহীন যুগান্তরকে জানান, জোটভিত্তিক সমঝোতার আওতায় রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় এনসিপির ৩০ নেতা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। ইতোমধ্যে ৩০ নেতার নাম প্রায় চূড়ান্ত হয়েছে।
এনসিপি সূত্র জানায়, ঢাকা-১১ আসনে নাহিদ ইসলাম, ঢাকা-৯ জাভেদ রাসিন, ঢাকা-২০ ইঞ্জিনিয়ার নাবিলা তাহসিন, ঢাকা-১৯ দিলশানা পারুল এবং ঢাকা-৮ আসনে নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারীর নাম আলোচনায় রয়েছে। এছাড়া পঞ্চগড়-১ আসনে সার্জিস আলম, দিনাজপুর-৬ আব্দুল আহাদ, রংপুর-৪ আখতার হোসেন, কুড়িগ্রাম-২ আতিক মুজাহিদ এবং সিরাজগঞ্জ-৬ আসনে সাইফ মুস্তাফিজের নাম উঠে এসেছে।
ঢাকার বাইরে অন্য আসনের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আশরাফউদ্দিন মাহদি, নারায়ণগঞ্জে আব্দুল্লাহ আল আমিন, বান্দরবানে সুজাউদ্দৌলা, কুমিল্লায় হাসনাত আবদুল্লাহ, নোয়াখালীতে হান্নান মাসুদ ও সুলতান জাকারিয়া, নেত্রকোনা-১১ ডা. জাহেদুল, বরিশালে আরিফ আদিব, ঝালকাঠিতে ডা. মাহমুদা মিতু, লক্ষ্মীপুরে মাহবুব আলম এবং নরসিংদীতে সরোয়ার তুষারের নাম প্রাথমিক তালিকায় রয়েছে।
তবে ইতঃপূর্বে যারা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বা নিয়েছেন, সমঝোতার বাইরে থাকা এমন প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা রয়েছে। তবে এর সংখ্যা জানা যায়নি। এছাড়া মৌলভীবাজারে প্রীতম দাশ, চট্টগ্রামে জোবায়রুল আরিফ, নাটোরে জার্জিস কাদের এবং চুয়াডাঙ্গায় মোল্লা ফারুক এহসানের নামও সমঝোতার অংশ হিসাবে আলোচনায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট নেতারা।
তবে দলীয় সূত্রগুলো বলছে, এ তালিকা চূড়ান্ত নয়। জোট শরিকদের সঙ্গে আলোচনার অগ্রগতির ওপর ভিত্তি করে প্রার্থী তালিকায় পরিবর্তন আসতে পারে। আনুষ্ঠানিক ঘোষণা জোটগতভাবেই দেওয়া হবে।
জামায়াত সূত্র জানায়, সমঝোতায় যারা আছেন, তারা সবাই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর বাইরেও কেউ কেউ জমা দিয়ে থাকতে পারেন। তবে এর সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি।
অন্যদিকে খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, এলডিপি, লেবার পার্টি, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি (বিডিপি), জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা), খেলাফত আন্দোলন এবং নেজামে ইসলাম পার্টিও তাদের ভাগে পাওয়া আসনসংখ্যা থেকে অতিরিক্ত আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
সব মিলিয়ে ১১ দলের প্রার্থী সংখ্যা ৬০০-এর বেশি হতে পারে। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের দিন পর্যন্ত দরকষাকষি করার জন্যই অতিরিক্ত প্রার্থী রেখে দেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।