Image description

সিলেটের ৬টি নির্বাচনী আসনের মধ্যে ৫টি রেখে দিয়েছে বিএনপি। কেবলমাত্র সিলেট-৫ আসনটি তারা জোটের শরিক দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলামকে ছেড়ে দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত জমিয়ত জোটের সিদ্ধান্ত মেনে অন্যান্য আসনে প্রার্থীদের সরিয়ে নিচ্ছে। এতে করে সিলেট বিএনপি’র প্রার্থীদের মধ্যে স্বস্তি বিরাজ করছে। বিএনপি’র প্রার্থীরা রয়েছে ফুরফুরে মেজাজে। তবে সিলেট-৫ আসনে জোটের প্রার্থী জমিয়ত সভাপতি মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুক কিছুটা টেনশনে রয়েছেন। ইতিমধ্যে এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে থাকা জেলা বিএনপি’র প্রথমসহ সভাপতি মামুনুর রশীদ চাকসু মামুন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। তিনি ঘোষণা দিয়েছেন ভোটের মাঠে থাকছেন। এতে করে এ আসনে জমিয়তের জন্য হিসেব কঠিন হয়ে পড়বে। এরইমধ্যে চাকসু মামুন লড়াইয়ের আভাস দিয়েছেন। সিলেট-৫ আসনের এ হিসেবে সিলেট-৬ আসনে জমিয়ত প্রার্থী ফখরুর ইসলাম স্বতন্ত্র হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। তবে এতে বিচলিত নয় এ আসনের বিএনপি’র প্রার্থী এমরান আহমদ চৌধুরী। জমিয়তের ভোট ব্যাংক বিএনপি’র বাক্সে পড়বে বলে জানিয়েছেন এমরানের কর্মী সমর্থকরা।

মনোনয়ন ঘোষণার পর সিলেট বিএনপি’র ভেতরে কোন্দল কিছুটা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল। তবে দিন যত যাচ্ছে সেই কোন্দল কমছে। মান-অভিমান ভেঙে নেতাকর্মীরা ধানের শীষের পক্ষে মাঠে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছেন। সিলেট জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী জানিয়েছেন, সিলেট বিএনপি’র ভেতরে যে কোন্দলের কথা বলা হয়েছে সেটি সঠিক নয়। ধানের শীষের পক্ষে নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। কে প্রার্থী সেটি বড় কথা নয়। নির্বাচনে ধানের শীষের জয় চায় সবাই। এ কারণে সবাই ভোটের মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। সিলেটে বিএনপি যখন নির্ভার তখন ৮ দলের ভেতরে বিরাজ করছে অস্বস্তি। এখনো চূড়ান্ত করা যায়নি প্রার্থী। বড় দল জামায়াত থেকে প্রার্থী ঘোষণা করতে দেরি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জোটের শরিক থাকা অন্যান্য দলের নেতারা। খেলাফত মজলিসের অবস্থান শক্তিশালী রয়েছে সিলেটে। আছে ভোট ব্যাংক। এবার খেলাফত মজলিস জেলার ৬টি আসনের মধ্যে দু’টি আসন চায়। এর মধ্যে সিলেট-২ আসনে কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ মুনতাসির আলীর মনোনয়ন প্রায় চূড়ান্ত রয়েছে। খেলাফত মজলিস জেলায় আরও একটি আসন চায়। সেটি হচ্ছে সিলেট-৫ আসন। এ আসনে খেলাফত মজলিসের প্রার্থী মুফতি আবুল হাসান। দলটির নেতারা জানিয়েছেন, এ আসনে তাদের প্রার্থীর জয়ের সম্ভাবনা দেখছেন। 

আবুল হাসানও নির্বাচনী দৌড়ে অনেকখানি এগিয়ে রয়েছেন। আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হচ্ছেন জেলার নায়েবে আমীর মাওলানা আনোয়ার হোসেন খান। তিনি ভোটের মাঠে তেমন সাড়া ফেললেও আসনটিকে জামায়াত নেতারা তাদের বলেই চিন্তাভাবনায় রাখেন। এ আসনে ২০০১ সালে তাদের প্রার্থী মাওলানা ফরিদ উদ্দিন এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। খেলাফত নেতারা বলছেন, সিলেট-৫ আসন নিয়ে তারা আশাবাদী। এ কারণে তারা এ আসনটিতে সমর্থন চান। গতকাল বিকাল পর্যন্ত এ আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত হয়নি। তবে মনোনয়নপত্র কিনেছেন জামায়াত ও খেলাফত প্রার্থী উভয়ই। সিলেটে শরিক দলের কাছে একটি আসন চান বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা মামুনুল হক। কয়েক মাস আগেই সিলেটের ৬ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছিল। ৬ই ডিসেম্বর তিনি সিলেটের সমাবেশে এসে সিলেট-৩ আসনে মাওলানা মোসলেহ উদ্দিন রাজুকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেন। এখন রাজুকে নিয়ে তিনি ৮ দলের সঙ্গে দেন-দরবারে ব্যস্ত রয়েছেন। এ আসনে জামায়াতের প্রার্থী মাওলানা লোকমান আহমদ ও খেলাফত মজলিসের প্রার্থী দিলওয়ার হোসেন শক্ত অবস্থানে রয়েছেন। তবে জামায়াতে ইসলামীর তরফ থেকে এ আসনে ছাড় দিতে নারাজ নেতারা। কারণ, এ আসনে তাদের প্রার্থী মাওলানা লোকমান দক্ষিণ সুরমা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান। যদি জামায়াত সিলেট-৫ ও ৩ আসন ছাড় দেয় তাহলে ১, ৪ ও ৬ আসন নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হবে তাদের।