Image description

তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে রাজধানীতে নেয়া হয় সর্বোচ্চ নিরাপত্তাব্যবস্থা। তার আগমনের আগে থেকেই হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শুরু করে তার চলাচলের সকল রুট, জনসভাস্থল ও বাসভবন পর্যন্ত ছিল বহুস্তরবিশিষ্ট নিরাপত্তা। গতকাল দেশের মাটিতে পা রাখার আগেই ঢাকা মহানগর পুলিশসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিশেষ নিরাপত্তা ছকের আওতায় মাঠে নামে।
নিরাপত্তা জোরদারে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও ভাটারা ৩০০ ফিটের পাশাপাশি গুলশানসহ রাজধানীর অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মোতায়েন করা ছিল বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। সমাবেশস্থলের যাওয়ার পথে ছিল কয়েক হাজার পুলিশ।
আগে থেকেই গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, মোড় ও স্থাপনায় অতিরিক্ত পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়। তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকা থেকে শুরু করে তার চলাচলের সম্ভাব্য রুটে বসানো ছিল একাধিক চেকপোস্ট। তল্লাশির আওতায় ছিল সন্দেহভাজন সকল ব্যক্তি ও যানবাহন।
মাঠে ছিল পুলিশের বিশেষ প্রশিক্ষিত সোয়াট টিম ও বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট। সড়কের প্রধান মোড়গুলোতে পুলিশের পাশাপাশি অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও নিয়োজিত ছিল। যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে বাড়ানো হয় ট্রাফিক পুলিশের নজরদারিও।
সূত্র জানায়, তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিশ্চিতে রেড, ইয়েলো ও হোয়াইট এই তিন জোনে ভাগ করে সাজানো ছিল নিরাপত্তা পরিকল্পনা। রেড জোনে প্রবেশের জন্য ছিল বিশেষ সিকিউরিটি কার্ড। পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম জানিয়েছেন, তারেক রহমানের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ ও গোয়েন্দা সদস্যের পাশাপাশি মাঠে পোশাক ও সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়োজিত সদস্যদের কেন্দ্রীয়ভাবে নিরাপত্তা তদারকি করা হয়।
সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট ও চেয়ারপারসন সিকিউরিটি ফোর্সের (সিএসএফ) সঙ্গে একাধিক সমন্বয় সভা করে তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন।
তারেক রহমানের আগমন উপলক্ষে একদিন আগে গত বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে গতকাল বিকেল পর্যন্ত হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দর্শনার্থীদের প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। এ সময় কেবল যাত্রীদেরই বিমানবন্দরে প্রবেশের নির্দেশ দেয়া হয়।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পর তারেক রহমান সড়কপথে পূর্বাচলের ৩০০ ফিট এলাকায় যান। বিমানবন্দর থেকে ৩০০ ফিট পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশেই ছিল নিñিদ্র নিরাপত্তা। এছাড়া তার জনসভাস্থল থেকে শুরু করে এভারকেয়ার হাসপাতাল এবং গুলশানের বাসভবন ফিরোজা পর্যন্ত প্রায় একই রকম নিরাপত্তা ছিল।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, তারেক রহমান বিমানবন্দর থেকে গুলশানে আসার পথে কয়েক হাজার পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি মাঠে ছিল ডিএমপির সোয়াট টিম, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ও ডগ-স্কোয়াড। তার বাসা ও অফিস এলাকায় সুইপিং কার্যক্রম চালানো হবে। ইউনিফর্মধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করবেন।
পুলিশ জানায়, গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসভবন, তারেক রহমানের বাসভবন ও অফিস দেওয়ালঘেঁষা হওয়ায় এলাকাটিকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকেই সেখানে বিশেষ নজরদারি শুরু হয়। প্রতিটি থানা এলাকায় নিরাপত্তাব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় চেকপোস্টের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি বিশেষ এসকর্টের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।
এর আগে গণবিজ্ঞপ্তিতে বিশেষ ট্রাফিক নির্দেশনা জারি করে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। এতে বলা হয় তারেক রহমানকে অভ্যর্থনা জানাতে আসা ব্যক্তিরা কোনো ব্যাগ, লাঠি বা সন্দেহজনক সামগ্রী বহন করতে পারবেন না। কেউ তার গাড়িবহরে যুক্ত হতে পারবেন না। পাশাপাশি মোটরসাইকেল নিয়ে কোনোভাবেই গুলশান, বনানী থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত রাস্তায় অবস্থান বা চলাচল করা যাবে না। গতকাল ভোর থেকেই মহাখালী থেকে আব্দুল্লাহপুর এবং কুড়িল থেকে মস্তুল পর্যন্ত পূর্বাচল এ´প্রেসওয়ে এড়িয়ে চলার জন্য জনসাধারণকে অনুরোধ করা হয়।