Image description
দীর্ঘ ১৭ বছর সাড়ে তিন মাসের প্রবাস জীবন শেষে অবশেষে নিজ বাসভবনে ফিরলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। প্রায় ১৯ বছর পর তিনি নিজ বাড়িতে রাত কাটাবেন।রোববার (আজ) রাত ৮টা ২৭ মিনিটে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান ও কন্যা জাইমা রহমানকে সঙ্গে নিয়ে গুলশান এভিনিউয়ের ১৯৬ নম্বর বাসভবনে প্রবেশ করেন তারেক রহমান।
এর আগে আজ ১১টা ৪৪ মিনিটে তিনি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। বিমানবন্দর থেকে তিনি সরাসরি ৩০০ ফিট এলাকায় আয়োজিত বিএনপির সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অংশ নেন এবং সেখানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন। পরে তিনি তার মা, বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে সেখান থেকে বের হয়ে সরাসরি নিজ বাসভবনে যান।
উল্লেখ্য, ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি দেশে জরুরি অবস্থা জারির পর তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার (ফখরুদ্দীন–মঈনউদ্দীন) দুর্নীতিবিরোধী অভিযান শুরু করে। ওই সময় বিএনপি ও আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়। তৎকালীন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব তারেক রহমানকে ২০০৭ সালের ৭ মার্চ ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট এলাকার মইনুল রোডের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি প্রায় ১৮ মাস কারাবন্দি থাকার পর ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্তি পান। মুক্তির পর এক সপ্তাহ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর সরকারি ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসার উদ্দেশ্যে ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তিনি লন্ডনে যান। এরপর দীর্ঘ সময় সেখানেই অবস্থান করেন।
গুলশান এভিনিউয়ের ১৯৬ নম্বর বাড়িটি ১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদাতের পর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তারের মন্ত্রিসভার সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে বেগম খালেদা জিয়াকে বরাদ্দ দেওয়া হয়। দেড় বিঘা জমির ওপর নির্মিত ছায়াঘেরা এই বাড়িটির মালিক তিনি।
২০১০ সালের ১৩ নভেম্বর শহীদ মইনুল রোডের বাসভবন থেকে খালেদা জিয়াকে উচ্ছেদ করা হয়। পরে তিনি ২০১২ সালের ২১ এপ্রিল ‘ফিরোজা’য় ওঠেন। রাজনৈতিক জটিলতার কারণে দীর্ঘদিন ১৯৬ নম্বর বাড়িতে খালেদা জিয়া বা তারেক রহমান—কেউই বসবাস করতে পারেননি।
সম্প্রতি গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান ও রাজউক চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম রিজু আনুষ্ঠানিকভাবে বাড়িটির দলিলপত্র বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে হস্তান্তর করেন।
একতলা বিশিষ্ট এই বাসভবনে রয়েছে তিনটি বেডরুম, ড্রয়িং ও ডাইনিং রুম, লিভিং রুমসহ সুইমিংপুল এবং আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা। কয়েকদিন আগে বাড়ির দেয়ালে নতুন করে সাদা রং করা হয়। চারপাশে কাঁটাতারের বেড়া, সিসিটিভি ক্যামেরা এবং দুটি বড় গেটে পুলিশ বক্স স্থাপন করা হয়েছে।
১৯৬ নম্বর বাড়ি ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।