বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রায় একঘণ্টা যাত্রা বিরতি করবেন সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। তাকে বহনকারী বিমান সকাল ১০টার একটু পর বিমানবন্দরে এসে পৌঁছাবে। এরপর লন্ডনের যাত্রীদের নামিয়ে ওই বিমান ফের ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা দেবে। ওসমানীতে তারেক রহমানকে বহনকারী বিমানের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। গতকাল বিমানবন্দরে এ নিয়ে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বৈঠক হয়েছে। এ বৈঠকে সব বাহিনীর কর্মকর্তারা ছাড়াও বিমানবন্দর সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, সিলেটে তারেক রহমানের বহনকারী বিমানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ওই বৈঠক করা হয়েছে। সকাল থেকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হবে বিমানবন্দর এলাকা। এ সময় সেখানে মোতায়েন থাকবে সব বাহিনীর সদস্যরা। বৈঠকে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার আব্দুল কুদ্দুছ চৌধুরীসহ পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সিলেট নগর পুলিশের এডিসি (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম মানবজমিনকে জানিয়েছেন, নিরাপত্তায় কোনো ঘাটতি রাখা হচ্ছে না। তিনি বলেন, এরইমধ্যে বিমানবন্দরে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তারা ওই এলাকায় নিয়োজিত রয়েছেন। এদিকে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নিরাপত্তাজনিত কারণে তারেক রহমান ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নাও নামতে পারেন। বিমানে থেকেই তিনি ঢাকা ফিরে যাবেন। যদি তিনি নামেন সেজন্য প্রস্তুতি রয়েছে। এদিকে, সিলেটের নেতাকর্মীদের বিমানবন্দরে ভিড় না জমাতে নির্দেশনা দিয়েছেন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
গতকাল বিকালে সিলেট জেলা ও নগর বিএনপি’র নেতারাও এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ অনুরোধ জানিয়েছেন। জেলা বিএনপি’র সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, মহানগর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, জেলা সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী ও মহানগর সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী জানিয়েছেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বৃহস্পতিবার বিমানযোগে লন্ডন থেকে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করবেন। তাকে বহনকারী বিমান লন্ডন থেকে আসার পথে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে। বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানাতে সমবেত ও ভিড় না করার জন্য দলের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সিলেট থেকে দুই লাখ নেতাকর্মী ঢাকায়: দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে স্বাগত জানাতে সিলেট থেকে প্রায় দুই লাখ নেতাকর্মী ঢাকায় গেছেন বলে জানিয়েছেন দলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী। তিনি জানিয়েছেন, হাজারো গাড়িযোগে বেশির ভাগ নেতাকর্মী গতকাল বিকালের মধ্যে ঢাকা পৌঁছেছেন। রাতে ট্রেনযোগে অনেকেই ঢাকায় আসেন। তিনি বলেন, ঢাকা আসা নেতাদের মধ্যে বেশির ভাগই কর্মীদের থাকা-খাওয়ার বিষয়টি দেখভাল করছেন। এ ছাড়া, ১৯ আসন থেকেই প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা ঢাকায় এসেছেন বলে জানান মিফতাহ।
সিলেট জেলা বিএনপি’র সভাপতি আব্দুল কাইয়ূম চৌধুরী জানিয়েছেন, সিলেট জেলার অর্ধলাখ নেতাকর্মী ইতিমধ্যে ঢাকায় পৌঁছেছেন। সিলেট থেকে বিশেষ ট্রেন সার্ভিস মিলেনি। তবে ঢাকাগামী প্রতিটি ট্রেনে এক্সট্রা বগি দিয়ে যাতায়াতকে সহজতর করা হয়েছে। সিলেট জেলা থেকে অন্তত ২০০ গাড়ি নিয়ে নেতাকর্মীরা ঢাকায় এসেছেন বলে জানান তিনি। নগর বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান লোদী কয়েস জানিয়েছেন, সিলেট সিটি ও সদর মিলিয়ে প্রায় এক লাখ নেতাকর্মী ঢাকার পথে রওনা হয়েছেন। শতাধিক গাড়ির বহর সকালের মধ্যে ঢাকায় পৌঁছার কথা রয়েছে। তিনি বলেন, এই যাত্রায় মানুষ কষ্ট অনুভব করছে না। বরং আনন্দ-উচ্ছ্বাস নিয়ে নেতাকর্মীরা লিডারকে বরণ করতে ঢাকায় যাচ্ছেন বলে জানান তিনি।