Image description

শরীফ ওসমান হাদির অবর্তমানে ইনকিলাব মঞ্চের পরবর্তী মুখপাত্র কে হতে পারেন, এ নিয়ে নানা আলোচনা হচ্ছে। বিশেষ করে দেশ-বিদেশে তার অনুসারীরাও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ সংক্রান্ত বিভিন্ন মতামত ব্যক্ত করছেন। এ পদের জন্য কে উপযুক্ত হতে পারেন—অনেকে তাদের ছবি দিয়েও পোস্ট দিচ্ছেন। এরই মধ্যে একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার সম্পাদকের নামও আলোচিত হচ্ছে।

তবে এখনই হাদির বিকল্প কাউকে ভাবতে চান না মঞ্চের নেতারা। এ মুহূর্তে তার হত্যার বিচারের জন্য সোচ্চার থাকতে চান তারা। তাই ইনকিলাব মঞ্চের মূল নেতৃত্বে কে আসছেন, এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কারও নাম বলা হচ্ছে না তাদের পক্ষ থেকে।

জুমা বলেন, ‘‘আমরা মনে করি ইনকিলাব মঞ্চ মানে হাদি ভাই। আমরা এখনও বিশ্বাস করতে চাই না তিনি নেই। আমাদের প্রতিটি কর্মযজ্ঞেই তার অস্তিত্ব উপলব্ধি করি।

তারপরও বাস্তবতার আলোকে ইনকিলাব মঞ্চের প্রধান নেতৃত্ব অবশ্যই চূড়ান্ত করা হবে। তবে এ বিষয়ে এখনই সুনির্দিষ্ট কিছু বলা যাচ্ছে না। কোনও সিদ্ধান্ত হলে আমরা সংবাদ সম্মেলন করে তা জানিয়ে দেবো।’’

সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে একই কথা জানান মঞ্চের সদস্য সচিব আবদুল্লাহ আল জাবের। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘‘হাদির ঘাতকদের বিচার করতে হবে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে। তার আগে জাতীয় নির্বাচন হতে পারে না।’’ তিনি বলেন, এ মুহূর্তে হাদির খুনিদের বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তারা অন্য কিছু ভাবছেন না।

রাজধানীর শাহবাগে মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) ওসমান হাদি হত্যার বিচার দাবি ও ‘শহীদি শপথ’ গ্রহণ কর্মসূচি পালন করে ইনকিলাব মঞ্চরাজধানীর শাহবাগে মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) ওসমান হাদি হত্যার বিচার দাবি ও ‘শহীদি শপথ’ গ্রহণ কর্মসূচি পালন করে ইনকিলাব মঞ্চ

মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকালে রাজধানীর শাহবাগে শহীদি শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে জাবের বলেন, ‘‘আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে দ্রুত বিচারিক ট্রাইব্যুনাল এবং আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সংস্থার সাহায্যে শরীফ ওসমান হাদি হত্যার বিচার করতে হবে।’’

তিনি দেশবাসীর কাছে আগামী ২৪ ও ২৫ ডিসেম্বর হাদির বাণী দেয়াল-লিখন এবং গ্রাফিতির মাধ্যমে, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পুরো পৃথিবীর কাছে তুলে ধরার জন্য আহ্বান জানান।

প্রসঙ্গত, জুলাই আন্দোলনের চেতনাকে ধারণ করে ও আধিপত্যবাদকে রুখে দেওয়ার সংকল্প নিয়ে ২০২৪ সালের ১৩ আগস্ট ইনকিলাব মঞ্চ প্রতিষ্ঠা করেন শরীফ ওসমান হাদি। শুরু থেকেই এর মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তিনি। আর সদস্য সচিব হিসেবে রয়েছেন আব্দুল্লাহ আল জাবের। মঞ্চের অন্যতম পরিচিত মুখ ডাকসু নেত্রী ফাতিমা তাসনিম জুমা।

হাদি জুলাই আন্দোলনের সময় রাজধানীর রামপুরা এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীকালে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আন্দোলনেও তিনি সক্রিয় ছিলেন ইনকিলাব মঞ্চের নেতাকর্মীদের নিয়ে।

সবশেষ ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি ঢাকা-৮ (পল্টন, মতিঝিল, শাহবাগ ও শাহজাহানপুর) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দেন। সে অনুযায়ী নিজের অনুসারীদের নিয়ে ১০ দিনের মতো প্রচারণা চালান। গত ১২ ডিসেম্বর জুমার নামাজের পর গণসংযোগ শেষে রিকশায় করে ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে গুলি করে। তাৎক্ষণিক তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে এভারকেয়ার হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরবর্তী সময়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৮ ডিসেম্বর মারা জান তিনি।