জুলাই ২০২৪। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান ঘিরে দেশজুড়ে উত্তাল পরিস্থিতির মধ্যে সংঘটিত একাধিক হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে দায়ের হয় গণহত্যার মামলা। সেই মামলার এজাহারে নাম উঠে আসে ক্ষমতাধর এক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের। সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদের। কিন্তু মাসের পর মাস পেরিয়ে গেলেও প্রশ্ন রয়ে গেছে এজাহারভুক্ত হয়েও তিনি কেন গ্রেপ্তারমুক্ত?
এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে সামনে এসেছে ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, প্রশাসনিক নীরবতা এবং আইনের প্রয়োগে দৃশ্যমান বৈষম্যের চিত্র।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে মো. ওমর ফারুক চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ও চট্টগ্রামের পুলিশ সুপারের কাছে একটি লিখিত আবেদন জমা দেন।
আবেদনে স্পষ্টভাবে বলা হয়, জুলাই অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত গণহত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এজাহারভুক্ত আসামি হওয়া সত্ত্বেও তাকে এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি। এই মামলাটি করা হয় গত বছরের ২ অক্টোবর।
ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি, এটি কোনো প্রশাসনিক বিলম্ব নয় বরং প্রভাবশালী আসামিকে আইনের বাইরে রাখার কৌশল।
আবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার না করায় মামলার বাদী ও সম্ভাব্য সাক্ষীরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। বলা হয়, ‘আসামি গ্রেপ্তার না হওয়ায় আমরা প্রতিনিয়ত চাপ ও ভয়ভীতির মধ্যে আছি। এতে মামলার স্বাভাবিক তদন্ত ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।’
এদিকে গণহত্যার মতো গুরুতর অপরাধে এজাহারভুক্ত একজন সাবেক মন্ত্রীর ক্ষেত্রে আইনের এই নীরবতা স্বাভাবিক নয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে পুলিশের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, এ বিষয়টি পর্যালোচনায় রয়েছে। তবে গ্রেপ্তার বিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা বা অগ্রগতির তথ্য জানানো হয়নি।
জানা যায়, জুলাইয়ের ওই ঘটনার পাশাপাশি আনিসুল ইসলাম মাহমুদের বিরুদ্ধে ডবলমুরিং থানার মামলা নম্বর ১৫ (০৯) ২০২৪, হাটহাজারী থানার মামলা নম্বর ২ (১১) ২০২৪ এবং কোতোয়ালি থানার মামলা নম্বর ১২ (১১) ২০২৪-সহ একাধিক মামলায় তিনি এজাহারভুক্ত আসামি।