ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকার বনানী কবরস্থানে সাধারণ জায়গায় ২৫ বছরের জন্য কবর সংরক্ষণ করতে চাইলে গুনতে হবে সাড়ে ৪ কোটি টাকা। এখানে এক-তৃতীয়াংশের বেশি কবর সংরক্ষিত। ফলে সাধারণের কবর দেওয়ার সুযোগ কম। একটি কবরের ১৮ মাস থেকে দুই বছর পার হলেই সেখানে নতুন করে কবর দেওয়া হয়।
বনানী কবরস্থানে মূলত দুটি ভাগ। একটি সংরক্ষিত এলাকা আরেকটি সাধারণ। ডিএনসিসির কবরস্থান নীতিমালা ২০২২-অনুযায়ী সংরক্ষিত এলাকায় ২৫ বছরের জন্য একটি কবর সংরক্ষণে গুনতে হয় দেড় কোটি টাকা। সাধারণ এলাকায় এ ফি তিন গুণ বেড়ে দাঁড়ায় সাড়ে ৪ কোটি টাকায়।
ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, কবরস্থানগুলো অনেক আগের। নতুন করে জায়গা বাড়ানোর সুযোগ নেই। বনানী কবরস্থানে ২৫ বছরের জন্য একটি কবর সংরক্ষণের মূল্য সাড়ে ৪ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে মূলত সংরক্ষণকে নিরুৎসাহিত করার জন্য। ডিএনসিসির প্রধান সমাজকল্যাণ ও বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুন-উল-হাসান বলেন, আমরা বনানী কবরস্থানে সাধারণ এলাকা উন্মুক্ত রাখতে চাই। সংরক্ষণ করতে চাই না। এ জন্য সাধারণ এলাকায় কবর সংরক্ষণকে নিরুৎসাহিত করতে তিন গুণ বেশি ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। সরেজমিন দেখা যায়, বনানী কবরস্থানে জায়গার তীব্র সংকট। আগে যারা কবরের স্থান সংরক্ষণ রেখেছিলেন তারাই সে কবরের ওপর পুনঃকবর দিচ্ছেন। ১৮ মাস থেকে দুই বছর পর কবরের ওপর আবার নতুন কবর দেওয়া হচ্ছে। এখানে আছে চারটি ব্লক। শিশুদের জন্য আলাদা স্থান আছে। মাসে ৩০টির মতো কবর খোঁড়া হচ্ছে।
২০০৬ সালেই সংরক্ষিত এলাকায় স্থান ফুরিয়ে যায়। সাধারণ এলাকায় কবর সংরক্ষণ করতে চাইলে ১৫ ও ২৫ বছর মেয়াদে করা যাবে। প্রথমে ৫০০ টাকা ফি দিয়ে দুই বছরের জন্য কবর দিতে হবে। পরে ১৫ বছরের জন্য ৩ কোটি এবং ২৫ বছর মেয়াদের জন্য সাড়ে ৪ কোটি টাকা দিয়ে সংরক্ষণ করতে হবে। কবর সংরক্ষণের ক্ষেত্রে একজন মৃত ব্যক্তির জন্য ৫০০ টাকা ফি দিয়ে রেজিস্ট্রার করা হয়। পরে সেই মৃতের পরিবারের সদস্য মারা গেলে ৫০ হাজার ৫০০ টাকায় পুনঃকবর দেওয়া হয়। যার নামে প্রথমে কবর বরাদ্দ হয় সেই ব্যক্তি, তার স্ত্রী, মা-বাবা, ভাইবোন এবং ছেলেমেয়েরা এই কবরে পুনঃকবরের সুযোগ পাবেন। দুই বছরের মধ্যে হাড় পাওয়া গেলে নতুন করে খোঁড়া কবরে গর্ত করে সেই দেহাবশেষ রাখা হয়। বনানী কবরস্থানের মোহরার হারুনর রশিদ বলেন, যে অনুপাতে মৃত্যু হচ্ছে সে অনুযায়ী স্থান নেই। দুই বছর পার হলেই যাচাইবাছাই করে সেখানে আবার কবর দেওয়া হয়। ৫০০ টাকা ফিসহ বাঁশ-চাটাইয়ের খরচ মিলে ২ হাজার টাকা খরচ হয়। ঢাকায় যাদের কবর সংরক্ষণে আর্থিক সামর্থ্য নেই, তারা গ্রামের বাড়িতে কবর দিতে আগ্রহী।