জুলাই জাতীয় সনদে সই করা রাজনৈতিক দলগুলো জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কমপক্ষে ৫ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার অঙ্গীকার করলেও তা রক্ষা করছে না বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সংসদের ৩০০ আসনের জন্য নারী প্রার্থী রাখতে হবে অন্তত ১৫ জন। কিন্তু এরই মধ্যে দলটি ৩০০ আসনে প্রার্থী দিয়েছে। সেখানে একজনও নারী প্রার্থী দেয়নি জামায়াত। দলটি যদিও নীতিনির্ধারণী ফোরামে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছে। সেখানে ২-৩ জন নারী প্রার্থীর বিষয়ে গুরুত্ব পেয়েছে। তবে ইসলামিক নিয়ম ও সাংগঠনিক শৃঙ্খলা মেনে নারী প্রার্থী দেওয়া চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন জামায়াত নেতারা।
জানা যায়, জামায়াতে ইসলামী এখন পর্যন্ত কোনো নারী প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি। শূন্য শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব তাদের আদর্শিক ও রাজনৈতিক অবস্থানের সুস্পষ্ট প্রতিফলন। যদিও জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, বিষয়টি নীতিনির্ধারণী বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু মনোনয়নের চূড়ান্ত পর্যায়ে এসেও নারী প্রার্থীর নাম ঘোষণা করতে পারেনি। একই সঙ্গে জামায়াত নেতৃত্বাধীন আট দলের জোটেও নেই কোনো নারী প্রার্থী। নেতারা বলছেন, জামায়াতে ইসলামী একটি ইসলামী অনুশাসন মেনে চলা দল। সেখানে নারীদের প্রার্থী দেওয়া সংগঠনের পক্ষ থেকে খুবই চ্যালেঞ্জ। এর অন্যতম চ্যালেঞ্জ হলো- স্বামী থেকে অনুমতি পাওয়া। স্বামী অনুমতি না দিলে সে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ নেই। এ ছাড়া নারী প্রার্থীরা সভা-সমাবেশে গিয়ে ইসলামিক নিয়ম মেনে বক্তব্য এবং ভাষণসহ আনুষঙ্গিক কাজ সুচারুভাবে শেষ করা কঠিন কাজ। যেভাবে অন্য দলের নারী প্রার্থীরা প্রচারণা করছেন, সেখানে জামায়াতে প্রার্থীরা যেতে পারে না। একই সঙ্গে প্রার্থী হওয়ার অনাগ্রহ বিষয়টাও তো রয়েছেই। তবে ইসলামিক নিয়ম, সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ও যোগ্যতা দেখে প্রার্থী খোঁজা হচ্ছে।
নারী প্রার্থী মনোনয়ন প্রসঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নারীদের প্রার্থী করার বিষয়টি এখনো আলোচনায় আছে। কারণ, বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের ভাবতে হচ্ছে। তা ছাড়া আমাদের নারী কর্মীদের অনেকেই নির্বাচনে আগ্রহী নন। আমাদের জন্য কাক্সিক্ষত প্রার্থী পাওয়া অন্য দলের তুলনায় কঠিন। কারণ, এখানে সংগঠনের নিয়মনীতির একটা বিষয় আছে। আবার তাদের পক্ষ থেকেও সাড়া পাওয়ার বিষয় রয়েছে।
আলোচনায় নারী প্রার্থীরা : জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মহিলা বিভাগের সেক্রেটারি শিক্ষাবিদ অধ্যাপিকা নুরুন্নিসা সিদ্দিকার নাম এসেছে আলোচনায়। তবে কোন আসন থেকে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তা জানা যায়নি। জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য সাবেক এমপি ডা. আমিনা রহমানের নামও এসেছে আলোচনায়। তার আসন সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ মহিলা বিভাগ জামায়াতের সিনিয়র সদস্য কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য সাবেক এমপি শাহান আরা বেগম এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও জামায়াতের মহিলা বিভাগের সহকারী সেক্রেটারি ব্যারিস্টার সাবিকুন্নাহারের নামও আলোচনায় এসেছে। তাদেরও ঢাকার কোনো আসনে বা ঢাকার বাইরেও প্রার্থী করা হতে পারে।