১৭তম বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (বিজেএস) পরীক্ষায় ৭৯তম মেধাক্রমে সুপারিশপ্রাপ্ত তরুণ আইনবিদ, শিক্ষক ও লেখক সাইমন সৈয়দ চূড়ান্ত গেজেটে বাদ পড়েছেন। মেডিক্যাল পরীক্ষা থেকে শুরু করে ভ্যারিফিকেশন সব ধাপ সঠিকভাবে সম্পন্ন করেও ২৭ নভেম্বর প্রকাশিত গেজেটে নিজের নাম না দেখে হতবাক হয়েছেন তিনি। আইন পেশা ও শিক্ষাঙ্গনে জনপ্রিয় এই তরুণকে বাদ দেওয়া নিয়ে বিস্ময় ও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে পরিচিত মহলে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সাইমন সৈয়দ দীর্ঘদিন ধরে বিজেএস ও আইনসংক্রান্ত বই লেখে তরুণ আইনজীবীদের পাশে দাঁড়িয়ে আছেন। নিজস্ব যোগ্যতা, মেধা ও প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে তিনি সুপারিশপ্রাপ্ত হন। কিন্তু চূড়ান্ত মুহূর্তে তার নাম বাদ যায়, যা তিনি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় আটক শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়ে বিনা ফিতে আইনি সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দেন তিনি। ২ আগস্ট নিজের ফেসবুক পোস্টে লিখেছিলেন, ‘চট্টগ্রামে কোনো এইচএসসি পরীক্ষার্থী কারাগারে থাকলে দ্রুত আমার ইনবক্সে যোগাযোগ করুন। জুলাই যোদ্ধাদের সম্পূর্ণ বিনা ফিতে মুক্ত করার সব ব্যবস্থা করব ইনশাআল্লাহ।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে ১০০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে ১০০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়ার পর ২৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন মোট ১০২ জনকে চূড়ান্তভাবে সুপারিশ করে। প্রায় ১০ মাস অপেক্ষার পর ২৭ নভেম্বর আইন মন্ত্রণালয় যে নিয়োগ-গেজেট প্রকাশ করে, সেখানে মাত্র ৮৮ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয় এবং বাকি ১৩ জনকে কোনো কারণ উল্লেখ না করেই বাদ দেওয়া হয়। এতে চরম হতাশায় ভুগছেন বাদ পড়া এসব শিক্ষার্থী।
গেজেটে নাম না দেখে নিজের অবস্থান তুলে ধরে সাইমন বলেন, ‘আমার নামে কোনো দেওয়ানি বা ফৌজদারি মামলা নেই। আমার ক্যাম্পাস বা ক্যাম্পাসের বাইরে বা এলাকায় কোনো ধরনের রাজনৈতিক মিছিল-মিটিং-সভা কোনো কিছুতেই অংশগ্রহণ করিনি। কিন্তু গতকাল প্রকাশিত গ্যাজেটে নিজের নাম না দেখে আমার মন ভেঙে যায়। কোন ইস্যুতে আইন মন্ত্রণালয়ে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে আদৌ জানি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘রিকমন্ডেড হওয়ার দীর্ঘ সময় ধরে গেজেটের অপেক্ষায় ছিল আমার পুরো পরিবার। আমার বৃদ্ধ মা যার বয়স ৮৬ বছর যিনি তাকিয়ে আছেন আমার দিকে। আমার মা অসুস্থ হয়ে গেছেন। গেজেট থেকে বাদ দেওয়ার কারণে আমার পরিবার হেনস্তার শিকার হবেন। এর দায় কে নেব?’
তিনি দাবি করে বলেন, ‘আমি রিভ্যারিফিকেশন চাই না। আমি বাকিদের সাথে ১ তারিখ জয়েন করতে চাই।’