চট্টগ্রাম আদালতে জেলা কোর্ট ইন্সপেক্টর সোহেল আহম্মদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যে বাধা দেওয়ার অভিযোগ জানানোর পাঁচ দিন পর খাগড়াছড়ি সদর আদালতের এসআই রানা প্রতাপ বণিককে বদলি করা হয়েছে।
জেলা পুলিশের একটি সূত্র দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, তদন্ত কমিটি গঠন ছাড়াই এ বদলি করা হয়েছে ।
আজ মঙ্গলবার তাকে সদর আদালত থেকে জেলার ছোট মেরুং পুলিশ ফাঁড়িতে পাঠানো হয়।
একই আদেশে মানিকছড়ি সার্কেল অফিসে কর্মরত এসআই মোজাম্মেল হোসেনকে সদর আদালতে যুক্ত করা হয়েছে। জেলা পুলিশ সূত্র জানায়, এর আগে মোজাম্মেলকে ছোট মেরুং ফাঁড়িতে পোস্টিং দেওয়া হয়েছিল।
চট্টগ্রাম আদালত সূত্র জানায়, এসআই রানা প্রতাপ ২০ নভেম্বর খাগড়াছড়ি থেকে চট্টগ্রাম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসেন। পূর্বনির্ধারিত তারিখে হাজির না হওয়ায় দায়রা মামলা নং ৬৫৮/২০–এ তার বিরুদ্ধে আদালত ওয়ারেন্ট জারি করেছিল।
আদালতে উপস্থিত হলে বিচারক অনুপস্থিতির কারণ জানতে চান। জবাবে এসআই রানা জানান, দীর্ঘদিন ধরে কোর্ট ইন্সপেক্টর সোহেল আহম্মদ তার বিরুদ্ধে 'বিনা কারণে প্রতিহিংসামূলক আচরণ' করছেন এবং বিভিন্ন মামলায় সাক্ষ্য দিতে বাধা দিচ্ছেন।
এমনকি ওয়ারেন্ট থাকা সত্ত্বেও চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের প্রসিকিউশন শাখার আরও কর্মকর্তাদের কাছে তাকে নিয়ে নেতিবাচক বার্তাও পাঠানো হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
বিচারকের নির্দেশে এসআই রানা পরে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলীর মাধ্যমে লিখিত আবেদন দাখিল করেন। আদালত ২৩ নভেম্বর আবেদনটি খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশ সুপারের কাছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার জন্য পাঠায়। সিএমপি প্রসিকিউশনের ডিসি আবেদনটিতে স্বাক্ষর করেন।
তবে সিনিয়র কর্মকর্তার বিরুদ্ধে করা এই অভিযোগের বিষয়ে কোনো তদন্ত কমিটি গঠন ছাড়াই বদলি আদেশ কার্যকর করা হয়েছে বলে জেলা পুলিশ সূত্র নিশ্চিত করেছে।
সদর কোর্ট ইন্সপেক্টর সোহেল আহম্মদ, যিনি আগে চট্টগ্রামের আনোয়ারা থানার ওসি ছিলেন, ২০২৪ সালের জুনে কাঁচা চামড়াসহ ট্রাক আটকে চাঁদা দাবির অভিযোগে আলোচনায় আসেন এবং পরে তাকে ওই থানা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি বাধা দিলে তিনি সেখানে গেলেন কীভাবে? তিনি যেহেতু বলেছেন, তিনিই ভালো জানবেন।'
তবে ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের প্রশ্নে কোনো মন্তব্য করেননি।
এসআই রানা প্রতাপ লিখিত অভিযোগ ছাড়া আর কোনো বিষয়ে মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।
খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বদলি একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া। অভিযোগ বা অন্য কোনো কারণে নয়।'