Image description

‘একটা ভিনদেশি মানুষ, আমাদের কাছে থাকতে থাকতে মায়া হয়ে গেছে। যাইতে চায় না কোথাও। জামিন চাইতে মোট চারবার আদালতে আসছি। আজকে আদালতে জামিন পাইলো। যেহেতু জামিন হয়ে গেছে ওনার আমরা তাকে নানীর মতো করে সেবাযত্ন করবো। টাকা পয়সার কথা চিন্তা করিনা, যা খাবো, ওনাকে তাই খাওয়াবো। জামিন হওয়ায় আমরা খুব খুশি। উনি আমাদের দেশের আইনের প্রতি খুব শ্রদ্ধাশীল। তবে ওনাদের দেশের (ভারত) সরকারকে বলবো দ্রুত যেনও ওনাকে ফিরিয়ে নেয়, কারণ উনি পরিবারের কাছে যেতে চায়’ 

ভারতীয় নাগরিক সখিনার জামিনের পর রবিবার (২৩ নভেম্বর) চিফ মেট্রোপলিটন আদালতের সামনে এসব বলছিলেন সখিনার আশ্রয়দাতা ক্লান্তি আক্তার। যারা মূলত তাকে পেয়ে আশ্রয় দিয়েছিল এবং আদালতও আজকে ক্লান্তি আক্তার ও তার মা জাকিয়া আক্তারের জিম্মায় সখিনা বেগমকে জামিন দেন।

সখিনা বেগমের এখন জামিন হয়ে গেছে, কালকে কারামুক্তি হবে এরপরে কী উনি সখিনা বেগম ভারতে চলে যাবে জানতে চাইলে বাংলা ট্রিবিউনকে আশ্রয়দাতা ক্লান্তি আক্তার বলেন, সে যেতে চায়। পরিবার তো সবার আছে। এতদিন আমাদের কাছে আছে। মায়া হয়ে গেছে। কিন্তু তার সন্তান আছে, তারা আমাদের সঙ্গে কথা বলে ফিরিয়ে নিতে চায়।

উল্লেখ্য, পাসপোর্ট ও ভিসা ছাড়া পুশ ইনের মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রবেশের মামলায় ভারতীয় সেই ৬৮ বছর বয়সি নাগরিক সখিনা বেগমকে জামিন দিয়েছে আদালত। ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইন রবিবার জামিনের আদেশ দেন। প্রসিকিউশন বিভাগের এসআই সুবীর কুমার ঘোষ জানান, সখিনা বেগম যে বাসায় ছিলেন ওই বাসার লোকদের জিম্মায় তাকে জামিন দিয়েছেন আদালত।

সখিনা বেগমের পক্ষে অ্যাডভোকেট রহমাতুল্যাহ সিদ্দিক জামিন চেয়ে শুনানি করেন। তিনি বলেন, ‘মামলাটি জামিনযোগ্য ধারা। সখিনা বেগম ইচ্ছে করে এদেশে আসেননি। জোর করে (পুশ ইন) তাকে পাঠানো হয়েছে। তার জামিনের প্রার্থনা করছি।’ শুনানি নিয়ে আদালত সখিনা বেগমকে আশ্রয় দেওয়া ক্লান্তি আক্তার, তার মা মোছা. জাকিয়া এবং খালা ময়না আক্তারের জিম্মায় জামিনের আদেশ দেন। 

শুনানি শেষে অ্যাডভোকেট রহমাতুল্যাহ সিদ্দিক জানান, আশা করছি, সোমবারই কারামুক্ত হবেন সখিনা বেগম। এদিন শুনানিকালে সখিনা বেগমকে কাশিমপুর কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।

মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ২৫ সেপ্টেম্বর বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে সকিনাকে ভাসানটেক থানার টিনশেড টেকপাড়া গলির মাথায় পাওয়া যায়। জিজ্ঞেস করা হলে তিনি নিজেকে ভারতের নাগরিক বলে দাবি করেন।