অগ্নিদগ্ধ বাসচালক পারভেজ খান। জীবন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন। জাতীয় বার্ন প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে তাকে। শরীরের অধিকাংশই নাশকতাকারীদের জ্বালানো আগুনে ক্ষতবিক্ষত। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার ফলশাটিয়া এলাকায় মানিকগঞ্জ শহরের দি হলি চাইল্ড স্কুল বাসে নাশকতাকারীরা অগ্নিসংযোগ করলে বাসের ভেতরে ঘুমন্ত চালক পারভেজ খান দগ্ধ হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে ওই রাতেই জাতীয় বার্ন প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে যাওয়া হয়।
পারিবারিক সূত্র জানায়, মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বাড়ইবিকুরা এলাকার পারভেজ খান তিন দশকের পেশাদার গাড়িচালক। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম তিনি। নাশকতাকারীদের অগ্নিদগ্ধে গুরুতর আহত পারভেজের পরিবারের ওপর নেমে এসেছে অন্ধকার। গাড়ি চালিয়ে যা আয় হতো তা দিয়েই কোনোরকমে সংসার চলে যেতো । তার রয়েছে এক ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়ে বিয়ে হয়ে গেলেও ছেলে সুমন গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ করে। কিন্তু সংসারের পুরো দায়িত্বই ছিল পারভেজের কাঁধে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে ছেলে সুমন মানবজমিনকে বলেন, প্রায় তিন যুগ ধরে বাবা আমার গাড়ি চালিয়ে সংসার চালিয়ে আসছিল।
বাবা ছাড়া আমাদের কেউ নেই। গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ করে পরিবারকে কিছুটা সহযোগিতা করার চেষ্টা করলেও তা যৎসামান্য। বাবা অগ্নিদগ্ধ হয়ে তিন দিন ধরে লাইফ সাপোর্টে থাকায় আমাদের চারিদিকে অন্ধকার নেমে এসেছে। এমন নৃশংসতার বিচার কার কাছে চাইবো? এদিকে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে স্কুল বাসে আগুন দেয়ার ঘটনায় দি হলি চাইল্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এম আমান উল্লাহ বলেন, গভীর রাতে নাশকতার উদ্দেশ্যেই শিবালয় উপজেলায় পরপর দুটি স্কুল বাসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে দুর্বৃত্তকারী। দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্যই এটি একটি পরিকল্পিত ঘটনা। এ ঘটনায় পৃথক দু’টি মামলা হয়েছে। মুন্নু ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বাসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া দি হলি চাইল্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজের স্কুল বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।