Image description
রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ নিয়ে কৌশল অবলম্বন করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গণঅধিকার পরিষদসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ কৌশল নিয়েছে ইসি। কারণ, জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলীয় জোটের শরিকদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিরোধিতা করে আসছে ওই দলগুলো। এমনকি এসব দল সংলাপে অংশ নিক, সেটিরও বিরোধিতা করছে তারা।

নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো জানাচ্ছে, ওই বিরোধিতার কারণে সংলাপে কোন দলকে আমন্ত্রণ জানানো হবে, সেই সিদ্ধান্ত এক বা দুদিন আগে জানানো হচ্ছে; যাতে এ নিয়ে কোনো হইচই না হয়। ফলে জাতীয় পার্টি সংলাপে অংশ নেবে কি না, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশন স্পষ্ট কোনো বক্তব্যও দেয়নি। এ বিষয়ে রোববারও কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

রেওয়াজ অনুযায়ী, প্রতিটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করে আসছে ইসি। এরই ধারাবাহিকতায় এএমএম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনও সংলাপের আয়োজন করেছে। নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৃহস্পতিবার থেকে সংলাপ শুরু হয়। প্রতিদিন ১২টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এ সংলাপ চলছে। আজও ১২টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ হওয়ার কথা রয়েছে।

এবারের সংলাপ শুরুর আগেই জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোকে ডাকা হচ্ছে-গণমাধ্যমে এমন খবর প্রকাশিত হলে কয়েকটি রাজনৈতিক দল বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানায়। ওই খবর প্রকাশের পরই নির্বাচন কমিশনে ছুটে যায় গণঅধিকার পরিষদের (জিওপি) সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল। তারা জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোকে সংলাপে না ডাকতে ইসিকে আহ্বান জানান।

এর আগে ৩০ অক্টোবর জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ আটটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা সিইসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলীয় জোটের শরিকদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছিলেন। এছাড়া জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপিও বিভিন্ন সময় জাতীয় পার্টির নিবন্ধন স্থগিতের দাবি জানিয়েছে।

ইসি সূত্র জানায়, গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলোর চাপে এবার সংলাপ নিয়ে কৌশলী ইসি। আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিগত তিনটি নির্বাচনে অংশ নেওয়া নিবন্ধিত দলগুলোকে ভিন্নভিন্নভাবে সংলাপে ডাকা হচ্ছে। তবে তাদের চিঠি দেওয়ার ক্ষেত্রে খুব একটা ঢাকঢোল না পিটিয়ে সংলাপের ঠিক এক বা দুদিন আগে চিঠি দিচ্ছে। এরই অংশ হিসাবে আজ যে ১২টি রাজনৈতিক দলকে সংলাপে ডাকা হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে বিকল্পধারা বাংলাদেশ এবং জাকের পার্টিও রয়েছে। এছাড়া রোববার বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (বাংলাদেশ জাসদ) ও কৃষক-শ্রমিক জনতা লীগের মতো দলও ইসির সংলাপে অংশ নেয়।

ইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, সংলাপে নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত রয়েছে ইসির। পর্যায়ক্রমে এসব দলকে সংলাপে ডাকা হবে। তবে নিবন্ধন স্থগিত থাকায় আওয়ামী লীগকে সংলাপে ডাকবে না। জাতীয় পার্টিকে ডাকা হবে।