Image description

রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলে এক সময় হালচাষ, পরিবহনে মহিষের বিকল্প ভাবা যেত না। এ অঞ্চল থেকে হারিয়ে যাচ্ছে মহিষ দিয়ে হালচাষ ও পরিবহনের কাজ। বিকল্প পরিবহন ব্যবস্থা, উন্নত চাষাবাদ, প্রতিকূল পরিবেশ, খাদ্য সংকট ও কৃত্রিম প্রজনন ব্যবস্থা না থাকা, অন্যান্য গবাদি পশুর চেয়ে দাম বেশি- এসব কারণে মহিষের বংশবিস্তার আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে। ৩০ বছর আগে রংপুর বিভাগে মহিষের সংখ্যা ছিল প্রায় ২০ লাখ। এখন তা ৩০/৩৫ হাজারে নেমে এসেছে।

রংপুর প্রাণিসম্পদ অফিসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী এ অঞ্চলে গবাদি পশু রয়েছে ১ কোটি ৩৪ লাখ ৭৯ হাজার ৯০৪টি। এর মধ্যে গরু ৩৯ লাখ ৯৬ হাজার ৬৫৭টি, ছাগল ৫৮ লাখ ৩০ হাজার ৭২০, ভেড়া ৬ লাখ ৭৫ হাজার ৮৭৯ এবং মহিষ ৩৫ হাজার ৫৭ এবং অন্যান্য পশু ৪১ হাজার ৫২৭টি। রংপুর বিভাগে সবচেয়ে বেশি মহিষ রয়েছে পঞ্চগড় ও গাইবান্ধায়। তিন দশক আগে এ অঞ্চলে মহিষের সংখ্যা ছিল ২০ লাখের ওপরে।

তথ্য মতে রংপুরে ২ হাজার ২৭৯টি, গাইবান্ধায় ৭ হাজার ২০৮, কুড়িগ্রামে ৫ হাজার ৫৪৩, লালমনিরহাটে ২ হাজার ৬০৮, নীলফামারীতে ২ হাজার ৬২৫, দিনাজপুরে ৪ হাজার ২৭, ঠাকুরগাঁওয়ে ৪ হাজার ২৮ এবং পঞ্চগড়ে ৭ হাজার ৩০টি মহিষ রয়েছে। রংপুর বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরিচালক ডা. মো. আবদুল হাই সরকার বলেন, উন্নত চাষাবাদ পদ্ধতি আবিষ্কারের ফলে কেউ এখন মহিষ দিয়ে হালচাষ করেন না। যোগাযোগ ব্যবস্থায় ঘটেছে উন্নতি। গরু-মহিষের পরিবর্তে এখন ব্যবহার হচ্ছে যান্ত্রিক বাহন। অন্যান্য গবাদি পশুর তুলনায় মহিষের খাবার অনেক বেশি লাগে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পরিবেশের ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। ফলে মহিষের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। কৃত্রিম মহিষ প্রজনন কেন্দ্র না থাকায়ও মহিষের বংশবিস্তার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তবে গ্রামাঞ্চলে কেউ কেউ ঐতিহ্য ধরে রাখতে মহিষের ব্যবহার করছেন বলে তিনি জানান।

জানা গেছে, দেশের একমাত্র কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রটি হচ্ছে দেশের দক্ষিণাঞ্চল চট্টগ্রামে। উত্তরাঞ্চলে মহিষ নিয়ে চিন্তাভাবনা করার কেউ নেই বলে মহিষের বংশবিস্তার হচ্ছে না। এমন অভিযোগ সচেতন মহলের।