গণভোট এখন দেশের রাজনীতির সবচেয়ে আলোচিত ইস্যু। কিন্তু কখন এই গণভোেট অনুষ্ঠিত হবে-এ নিয়েই প্রধান দুই রাজনৈতিক দল বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী বিপরীত অবস্থানে। বিএনপি ও এর মিত্ররা বলছে, জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একদিনেই হতে হবে। তাদের দাবি, নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজনের প্রচেষ্টা ফেব্রুয়ারির ভোেট বানচালের ষড়যন্ত্র। বিপরীতে জামায়াত ও সমমনা আট দল নভেম্বরের মধ্যেই গণভোেট চায় এবং সে দাবি আদায়ে রাজপথে কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে।
পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠায় অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক দলগুলোকে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে পৌঁছাতে এক সপ্তাহ সময় দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে জামায়াত-বিএনপিসহ বিভিন্ন দলকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানালেও বিএনপি তাতে সাড়া দেয়নি। দলটির বক্তব্য, আলোচনার আহ্বান যদি সরকার জানায়, তবেই তারা বসবে। আগামীকাল সোমবার সরকারের বেঁধে দেওয়া এ সময়ও শেষ হচ্ছে। এরপরও অগ্রগতি না হলে সরকার শিগগির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে পারে। অন্যদিকে জামায়াত ও সমমনা আট দল মঙ্গলবারের মধ্যে গণভোটের ঘোষণা না এলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
সব মিলিয়ে গণভোটসহ জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সম্প্রতি জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ সরকারের কাছে জমা দিয়েছে। সুপারিশে কমিশন জাতীয় নির্বাচনের আগে অথবা একই দিনে গণভোট করার সুযোগ রাখা হয়েছে। এক্ষেত্রে তারা সরকারকেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের কথা বলেছে। গণভোট ছাড়াও জুলাই জাতীয় সনদের উচ্চকক্ষে পিআর, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের ২৭০ দিনের সময়সীমা নিয়ে দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে।
সূত্রমতে, জুলাই বিপ্লব-পরবর্তী রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি বিষয়ে সংস্কারের উদ্যোগ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। সে অনুযায়ী বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের ভিত্তিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সরকার কর্তৃক গঠিত হয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। দীর্ঘ আলোচনায় বেশ কিছু বিষয়ে দলগুলোর মধ্যে মতানৈক্য দেখা দেয়। বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ অনেক প্রস্তাবেই বিএনপি 'নোট অব ডিসেন্ট' দেয়। মতানৈক্যের বিষয়গুলো গণভোটে দেওয়ার জন্য শুরু থেকেই দাবি জানায় জামায়াতসহ সমমনা দলগুলো। এক পর্যায়ে গত ২৮ অক্টোবর ঐকমত্য কমিশন জুলাই জাতীয় সনদে গণভোটের সুযোগ রেখে সরকারের কাছে সুপারিশ পেশ করে।