দীর্ঘদিন সেন্টমার্টিনে পর্যটক যাতায়াত বন্ধ থাকার পর আজ ১লা নভেম্বর থেকে পর্যটক যাতায়াতের নুমতি দেয়। কিন্তু সরকারের অযৌক্তিক সিদ্ধান্তের কারণে ৬টি জাহাজ প্রস্তুত থাকা সত্ত্বেও আজ সেন্টমার্টিনগামী ৬টি যাত্রীবাহী জাহাজ চলাচল করতে পারেনি। ফলে পর্যটন নির্ভর অঞ্চলে সৃষ্টি হয়েছে চরম বিশৃঙ্খলা ও জনভোগান্তি। ভোর থেকেই কক্সবাজার-টেকনাফ এলাকায় পর্যটকদের দীর্ঘ সারি দেখা যায়। কেউ কেউ রাত থেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে শেষ মুহূর্তে জানতে পারেন—জাহাজ চলবে না।
পর্যটকরা জানান, কোনও পূর্বঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ করে জাহাজ চলাচল বন্ধ হওয়ায় তাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। হোটেল বুকিং, গাড়িভাড়া, খাবারসহ পুরো ভ্রমণ পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে। বিশেষ করে দূরদূরান্ত থেকে আসা পরিবার, নারী-শিশু ও বিদেশি পর্যটকরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
এ প্রসঙ্গে জাহাজ মালিকেরা জানান, টেকনাফ থেকে জাহাজ ছাড়ার অনুমতি দেয়নি সরকার। অনুমতি দিয়েছে কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিনে জাহাজ যাতায়াতের। এদিকে কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিনে জাহাজ যাতায়াত করলে পর্যটকরা সময় পান দুই থেকে দেড় ঘন্টা। এই সময়ের জন্য পর্যটকরা সেন্টমার্টিন যেতে আগ্রহী না। এছাড়াও সেন্টমার্টিন এর ঘাট এখনও প্রস্তুত হয়নি। তাই সরকারের এই অপ্রস্তুত অবস্থা এবং অযৌক্তিক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে তারা আজ কোন জাহাজ ছাড়েনি। এতে করে পর্যটকদের এবং জাহাজ মালিকদের অবশ্যই অনেক বড় ক্ষতি হয়েছে।
জাহাজ মালিক অন্যতম পর্যটন ব্যবসায়ী হোসাইনুল ইসলাম বাহাদুর জাহাজ না ছাড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অন্যদিকে, সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দারা সরকারের এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। দ্বীপের মানুষ জানান, পর্যটন মৌসুমই
তাদের জীবিকার প্রধান সময়। অথচ কোনও যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়াই জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দিলে পুরো দ্বীপের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দিনমজুর, রেস্টুরেন্ট-হোটেল কর্মী, নৌযান শ্রমিকসহ হাজারো মানুষ এই সিদ্ধান্তের মারাত্মক প্রভাবের শিকার।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেছেন—সিজনের শুরুতেই এ ধরনের সিদ্ধান্ত দ্বীপের প্রাণহানি ঘটানোর মতো। সরকারের উচিত ছিল যৌক্তিক ব্যাখ্যা উপস্থাপন করা।
জাহাজ মালিক সমিতি জানায়, আজ ৬ টি জাহাজই সমুদ্র চলাচলের উপযোগী ও প্রস্তুত ছিল। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলেও প্রশাসনের অযোক্তিক সিদ্ধান্তের কারণে তারা জাহাজ ছাড়েনি।
এমন পরিস্থিতিতে পর্যটক, ব্যবসায়ী ও দ্বীপবাসীরা দ্রুত সমস্যার সমাধান এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের অঘোষিত সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।