Image description
 

বাউফল আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ও জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, তার স্ত্রী দেলোয়ারা সুলতানা ও ছেলে রায়হান শাকিবের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) পৃথক তিনটি মামলা রুজু করা হয়েছে। পটুয়াখালী দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক তানভীর আহমদ বাদী হয়ে আজ সোমবার (২১ অক্টোবর) এ মামলা দায়ের করেন। (মামলা নং যথাক্রমে মামলা নং-৬, তারিখ-২১/১০/২৫ খ্রি., মামলা নং-৭, তারিখ-২১/১০/২৫ খ্রি. ও মামলা নং-৫, তারিখ-২১/১০/২৫ খ্রি.)।

 

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, আসামি আ স ম ফিরোজ, সাবেক চিফ হুইপ, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ; পিতা: মো. ইদ্রিস মিয়া, মাতা: আসাফুননেছা, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর: ২৮৪১৯৮৮৯৬৩, জন্ম তারিখ: ০১/০২/১৯৫৩ খ্রি., বর্তমান ঠিকানা: গ্রাম/রাস্তা: ওয়ার্ড নং-০৯, ডাকঘর: বাউফল, উপজেলা-বাউফল, জেলা-পটুয়াখালী; স্থায়ী ঠিকানা: গ্রাম/রাস্তা-কালাইয়া, পোস্ট-কালাইয়া, উপজেলা-বাউফল, জেলা-পটুয়াখালী। সরকারি কর্মচারী হয়েও জ্ঞাত আয়ের উৎসের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ ৩,২৯,২৬,৪৮৪/- টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনপূর্বক ভোগ দখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা তৎসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, অনুসন্ধানকালে প্রাপ্ত তথ্য প্রমাণে আসামি আ স ম ফিরোজ, সাবেক চিফ হুইপ, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের মোট ১৪,৫৬,৪৪,৯৫৬/- টাকা আয় এবং ৫,৯০,০৩,৮৭৭/- টাকা পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয়ের তথ্য পাওয়া যায়। ব্যয় ব্যতীত তার মোট সঞ্চয় পাওয়া যায় ৮,৬৬,৪১,০৭৯/- টাকা। অনুসন্ধানকালে দায়-দেনা ব্যতীত আসামি আ স ম ফিরোজের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ১১,৯৫,৬৭,৫৬৩/- (এগারো কোটি পঁচানব্বই লাখ সাতষট্টি হাজার পাঁচশ তেষট্টি) টাকা।

 

অনুসন্ধানকালে ব্যয় ব্যতীত আসামি আ স ম ফিরোজের বৈধ সঞ্চয়ের পরিমাণ পাওয়া যায় ৮,৬৬,৪১,০৭৯/- টাকা। অর্থাৎ ১১,৯৫,৬৭,৫৬৩/- টাকার সম্পদ অর্জনে তার বৈধ আয়ের পরিমাণ পাওয়া যায় ৮,৬৬,৪১,০৭৯/- টাকা। সুতরাং আসামি আ স ম ফিরোজের নামে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত/বৈধ আয়ের উৎসের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদের পরিমাণ পাওয়া যায় ৩,২৯,২৬,৪৮৪/- টাকা। অর্থাৎ তার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত/বৈধ আয়ের উৎসের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদের পরিমাণ পাওয়া যায় ৩,২৯,২৬,৪৮৪/- টাকা। উক্ত আয়ের স্বপক্ষে তিনি কোনো ধরনের রেকর্ডপত্র দেখাতে পারেননি। উক্ত সম্পদ তার বৈধ আয় দ্বারা পরিবৃত্ত নয় এবং তা অবৈধভাবে অর্জিত মর্মে অনুসন্ধানকালে প্রতীয়মান হওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলাটি রুজু করা হয়।

 

এছাড়াও সাবেক এমপি আ স ম ফিরোজের স্ত্রী দেলোয়ারা সুলতানার বিরুদ্ধে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, দেলোয়ারা সুলতানা, পিতা: মোহাম্মদ ইসরাইল, স্বামী: আ স ম ফিরোজ, মাতা: জয়নুবুন্নেছা, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর: ৬৪৪১৯৯৫৬৪১, জন্ম তারিখ: ২৩/০২/১৯৫৩ খ্রি., বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা: গ্রাম/রাস্তা-কালাইয়া, পোস্ট-কালাইয়া, উপজেলা-বাউফল, জেলা-পটুয়াখালী; জ্ঞাত আয়ের উৎসের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ ১,০১,০১,৬৫৪/- টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনপূর্বক ভোগ দখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় তার বিরুদ্ধে উক্ত ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়।

তার বিরুদ্ধে এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, অনুসন্ধানকালে প্রাপ্ত তথ্য প্রমাণে আসামি দেলোয়ারা সুলতানার মোট ৬৮,১১,৮৯৭/- টাকা আয় এবং ১৮,০০,৩৩৪/- টাকা পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয়ের তথ্য পাওয়া যায়। ব্যয় ব্যতীত আসামি দেলোয়ারা সুলতানার মোট সঞ্চয় পাওয়া যায় ৫০,১১,৫৬৩/- টাকা। অনুসন্ধানকালে আসামি দেলোয়ারা সুলতানার নামে মোট (২০,০০,০০০+১,৩৯,০৫,০১০)=১,৫৯,০৫,০১০/- টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ থাকার তথ্য পাওয়া যায়। অনুসন্ধানকালে দায়-দেনা ব্যতীত আসামি দেলোয়ারা সুলতানার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ১,৫১,১৩,২১৭/- টাকা।

অনুসন্ধানকালে ব্যয় ব্যতীত আসামি দেলোয়ারা সুলতানার বৈধ সঞ্চয়ের পরিমাণ পাওয়া যায় ৫০,১১,৫৬৩/- টাকা। অর্থাৎ ১,৫১,১৩,২১৭/- টাকার সম্পদ অর্জনে তার বৈধ আয়ের পরিমাণ পাওয়া যায় ৫০,১১,৫৬৩/- টাকা। সুতরাং আসামি দেলোয়ারা সুলতানার নামে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত/বৈধ আয়ের উৎসের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদের পরিমাণ পাওয়া যায় ১,০১,০১,৬৫৪/- টাকা। অর্থাৎ আসামি দেলোয়ারা সুলতানার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত/বৈধ আয়ের উৎসের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদের পরিমাণ পাওয়া যায় ১,০১,০১,৬৫৪/- টাকা। উক্ত আয়ের স্বপক্ষে তিনি কোনো ধরনের রেকর্ডপত্র দেখাতে পারেননি। উক্ত সম্পদ তার বৈধ আয় দ্বারা পরিবৃত্ত নয় এবং তা অবৈধভাবে অর্জিত মর্মে অনুসন্ধানকালে প্রতীয়মান হয়।

সাবেক এমপি আ স ম ফিরোজের ছেলে আসামি রায়হান শাকিবের বিরুদ্ধে এজাহারে উল্লেখ করা হয়, আসামি রায়হান শাকিব, পিতা: আ স ম ফিরোজ, মাতা: দেলোয়ারা সুলতানা, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর: ৬৮৯১৯৭০৯৬১, জন্ম তারিখ: ১৪/০৬/১৯৭৭ খ্রি., বর্তমান ঠিকানা: গ্রাম/রাস্তা: ওয়ার্ড নং-০৯, ডাকঘর: বাউফল, উপজেলা-বাউফল, জেলা-পটুয়াখালী; স্থায়ী ঠিকানা: গ্রাম/রাস্তা-পূর্ব কালাইয়া, পোস্ট-কালাইয়া, উপজেলা-বাউফল, জেলা-পটুয়াখালী; জ্ঞাত আয়ের উৎসের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ ৪,২১,৮৫,৪২৮/- টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনপূর্বক ভোগ দখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় তার বিরুদ্ধে উক্ত ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, অনুসন্ধানকালে প্রাপ্ত তথ্য প্রমাণে আসামি রায়হান শাকিবের মোট ৪,৪৫,৮১,০১২/- টাকা আয় এবং ১,৭৫,৭৫,৫৯৮/- টাকা পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয়ের তথ্য পাওয়া যায়। সুতরাং আসামি রায়হান শাকিবের নীট স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৬,৯১,৯০,৮৪২/- (ছয় কোটি একানব্বই লাখ নব্বই হাজার আটশ বিয়াল্লিশ) টাকা।

অনুসন্ধানকালে আসামি রায়হান শাকিবের ব্যয় ব্যতীত বৈধ সঞ্চয়ের পরিমাণ পাওয়া যায় ২,৭০,০৫,৪১৪/- টাকা। অর্থাৎ ৬,৯১,৯০,৮৪২/- টাকার সম্পদ অর্জনে তার বৈধ আয়ের পরিমাণ পাওয়া যায় ২,৭০,০৫,৪১৪/- টাকা। সুতরাং আসামি রায়হান শাকিবের নামে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত/বৈধ আয়ের উৎসের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদের পরিমাণ পাওয়া যায় ৪,২১,৮৫,৪২৮/- টাকা। অর্থাৎ আসামি রায়হান শাকিবের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত/বৈধ আয়ের উৎসের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদের পরিমাণ পাওয়া যায় ৪,২১,৮৫,৪২৮/- টাকা। উক্ত আয়ের স্বপক্ষে তিনি কোনো ধরনের রেকর্ডপত্র দেখাতে পারেননি। উক্ত সম্পদ তার বৈধ আয় দ্বারা পরিবৃত্ত নয় এবং তা অবৈধভাবে অর্জিত মর্মে অনুসন্ধানকালে প্রতীয়মান হয়।

সাবেক এমপি ও জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, তার স্ত্রী দেলোয়ারা সুলতানা ও ছেলে রায়হান শাকিবের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) পৃথক তিনটি মামলার ঘটনায় বাউফলে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।